চার দশক ধরে উন্নয়ন বঞ্চিত বরিশাল সদর উপজেলা
জুন ২৭ ২০২৫, ১৮:৩৫

আরিফ হোসেন ॥ সাবেক সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন থেকে শুরু করে ক্ষমতা ছাড়া পর্যন্ত দীর্ঘ ৪ দশকেও কাঙ্খিত উন্নয়ন থেকে বরিশাল সদর উপজেলাবাসী বঞ্চিত হয়েছে অভিযোগ কয়েক গ্রামের বাসিন্দাদের। তবে যাও উন্নয়ন হয়েছে তা নিম্ন মানের লোভ দেখানো ছিলো।
সব থেকে বেহাল দশা সড়কগুলোর, হাতে গোনা দু-চারটি সড়ক ছাড়া বাকি সবই সড়কই এখন মরণ ফাঁদে পরিনিত হয়েছে। তার উপর নাজুক ড্রেনেজ ব্যবস্থা, ভাঙ্গাচোরা ব্রিজ আর কালভার্টগুলো। চারদিকে নদী বেষ্টিত হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতায় নাভিশ্বাস ওঠে সদর উপজেলাবাসীর।
বৃষ্টির সময় কোন কোন এলাকায় নৌকাই থাকে কিছু গ্রামের বাসিন্দাদের ভরসা। বিষয়টি নিয়ে বরিশালে জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ দেলোয়ার হোসেনের সাথে প্রতিবেদকের কথা হলে তিনি আশার বানী শোনালেন। এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলোকে এসকল সড়ক মেড়ামতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানালেন।
সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১০ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত বরিশাল সদর উপজেলা। উপজেলায় মোট আয়তন প্রায় ২৫৬ কিলোমিটার। উপজেলা প্রশাসনের তথ্য মতে ১২৬৮ কিলোমিটার সড়কের কাগজে কলমে যে ৫০০ কিলোমিটার রাস্তা কার্পেটিং ও ইটের হেরিংবোনসহ পাকা রাস্তা দেখানো হয়েছে বর্তমানে তার অবস্থা ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছে। আর ৭৮১ কিলোমিটার সড়কতো এখনও কাঁচা মাটির রাস্তাই রয়েছে।
সড়ক গুলোর এমন চিত্রই বলেদেয় দীর্ঘ চার দশকে বরিশাল জেলার ১০ টি উপজেলার মধ্যে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ উপজেলায় কতটা উন্নয়ন করেছে সাবেক সরকার। তবে দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ার কারনে বেশিরভাগ পাকা রাস্তাগুলোও এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে দাড়িয়েছে।
যেমন সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের কিছু অংশ, সায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের কিছু অংশ, কাগাশুরা টু মীরগঞ্জ সড়ক, লাকুটিয়া সড়কের কিছু অংশ, চরকাউয়া ইউনিয়নের কিছু অংশ, চন্দমোহন ইউনিয়নের কিছু অংশ সহ সদর উপজেলার অনেক সড়ক রয়েছে যার উন্নয়নের মুখ দেখেনি সেখানকার বাসিন্দারা।
সরজমিনে গিয়ে আরো দেখা যায়, সদর উপজেলার কোন কোন ইউনিয়নে এমনও সড়ক রয়েছে যা দেখে বোঝার উপায় নেই যে এটি ওই এলাকার বাসিন্দাদের যাতায়াতের প্রধান সড়ক। খানাখন্দে ভরা এসব সরু রাস্তা এখন মানুষে মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা।
তার উপরে বর্ষ মৌসুমের কাদা ও জলাবদ্ধতাতো রয়েছেই। উন্নয়ন বঞ্চিত এলাকাগুলোর ভুক্তভোগী বাসিন্দাদের অভিযোগ উন্নয়নে কথা বলে বিগত সরকারের চেয়ারম্যান-মেম্বররা শুধু লুটপাট করেছে। বরিশাল সদর উপজেলায় দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন করেনি। যার সরজমিনে আসলেই দেখা যাবে।
তারা আরো বলেন, অনেকই চিনতেন না সদর উপলোর চেয়ারম্যান কে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) বরিশালের সমন্বয়কারী মোঃ রফিকুল আলম, তৃণমূল আঞ্চলে বিশেষ করে যে উন্নয়ন বঞ্চিত র্দুগম এলাকা গুলো রয়েছে। যেখানে র্দীঘ বছর ধরে উন্নয়ন না হওয়ার কারনে সড়ক গুলোর বেহাল অবস্থায় পরিনিত হয়েছে। সেগুলো দ্রুত সংস্কার করা খুবই প্রয়োজন।
তাই আমরাও মনে করতেছি এবারের বাজেটে উন্নয়ন বঞ্চিত এলাকার সড়ক গুলো মেরামতের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। যাতে বরাদ্দর মধ্যে দিয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যহত থাকে। তিনি আরো বলেন, আগের সরকার তারা তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী উন্নয়ন কাজ করেছে। এখন যারা রয়েছে তারা তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করছেন।
তবে আমাদের কথা হচ্ছে যে উন্ন্নয়নটা থাকবে অব্যহত পদ্ধতিতে। কারন হচ্ছে যে সকল কাজ হচ্ছে জনগনের জন্য। জনস্বার্থের বিষয়টা যেন কখনোই কোন সরকার বা রাজনৈতিক দলের প্রাধিকার না পায়।
বরিশাল সদর উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী সৈয়দ মাইনুল মাহমুদ বলেন, সড়ক মেরামতে বিগত বছরে সরকারের তেমন বরাদ্দ না থাকায় মেরামত কম হয়েছে। তবে বড় একটি প্রকল্পের মাধ্যমে বরিশাল সদর উপজেলায় ২ থেকে ৩ শ’ কিলোমিটার রাস্তা পাকা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই সদর উপজেলার চিত্র অনেকা পাল্টে যাবে।
সদর উপজেলার খানাখন্দে ভরা সড়ক গুলো সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ঠ দপ্তর গুলেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এবং খুব শিগ্রই সড়ক গুলোর সংস্কার কাজ ধরা হবে বলে জানালেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন।
দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কগুলোকে অন্তত ব্যবহারের উপযোগী করে দেওয়া হোক বলে বর্তমান সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী সদর উপজেলার বাসিন্দারা।