বরগুনায় বরাদ্দ সংকটে ৪৭৭ কিলোমিটার সড়ক

সেপ্টেম্বর ০৫ ২০২৪, ১৭:১৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: বরগুনার ৬টি উপজেলায় প্রায় ৪৭৭ কিলোমিটার সড়কে যানচলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এসব সড়কগুলোর বেশিরভাগ স্থানের পিচ, ইটের খোয়া উঠে যাওয়ায় ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতে গর্তগুলোতে পানি জমে চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয় বাসিন্দাদের।

ভুক্তভোগী বাসিন্দারা দ্রুত মেরামতের দাবি জানালেও বরাদ্দ সংকটের কারণে সড়কগুলো মেরামত হচ্ছে না বলে কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান খান।

সড়কগুলো মেরামত না হওয়ায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হতে হয় রোগী এবং স্কুলগামী শিশুদের। এসব সড়কগুলোতে প্রতিনিয়তই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। পণ্য পরিবহন তো দূরের কথা মানুষ চলাচলেরই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে অধিকাংশ সড়ক।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের বরগুনা জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৬টি উপজেলায় এলজিইডির আওতায় ৬ হাজার ৩৪৩ কিলোমিটার কাঁচাপাকা সড়ক রয়েছে।

যার মধ্যে ১ হাজার ৪৩০ কিলোমিটার কার্পেটিং, ৫০৮ কিলোমিটার আধাপাকা এবং ৪ হাজার ৪০৫ কিলোমিটার কাঁচা সড়ক রয়েছে। এরমধ্যে ১ হাজার ৪৩০ কিলোমিটার কার্পেটিং সড়কের মধ্যে উপজেলা সড়ক ৪০১ কিলোমিটার, ইউনিয়ন সড়ক ৪২২ কিলোমিটার, গ্রাম সড়ক ৬০৭ কিলেমিটার।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সদর উপজেলার লাকুরতলা-ফুলঝুড়ি ভায়া বাওয়ালকর ১৬ কিলোমিটার সড়কটি অন্তত ৫ বছর আগে থেকে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে।

যার কিছু অংশ গত বছর মেরামত করা হলেও এখনো সংস্কার হয়নি বেশিরভাগ সড়ক। এ সড়কটি দিয়ে কয়েকটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ কশেক হাজার হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে।

ক্ষোভ প্রকাশ করে চালিতাতলী এলাকার মিরাজ মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘মোরা রাস্তায় না, চলাচল করি সাগরের ঢেউয়ের মধ্যে। রাস্তায় গাড়ি চালালে মনে হয় সমুদ্রের ঢেউয়ে পড়েছে। কত এমপি পরিবর্তন হয়, চেয়ারম্যান পরিবর্তন হয়, মোগো কপাল আর পরিবর্তন হয় না। মাঝে মাঝে রাস্তা মাইপ্পা গ্যালেও রাস্তায় কাম কাইজ অয় না।’

এলজিইডি বরগুনা জানায়, পাকা সড়কে প্রতি অর্থবছরে অন্তত তিনের একাংশ মেরামত করা প্রয়োজন হয়। সে অনুযায়ী এক হাজার ৪৩০ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে এ অর্থবছরে (২০২৪-২৫) ৪৭৭ কিলোমিটার সড়ক মেরামত করতে হবে।

তাদের হিসেবে প্রতি কিলোমিটার সড়ক মেরামত করতে ৬৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়। সে অনুযায়ী ৪৭৭ কিলোমিটার সড়ক মেরামত করতে ব্যয় হবে ৩১০ কোটি ৫ লাখ টাকা। কিন্তু ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বরগুনা জেলায় সড়ক মেরামতের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৩৫ কোটি টাকা।

সেখান থেকে এলসিএস নারী কর্মী, এমএমটি ও কেরিড ওভার বাবদ বাদ যাবে ১০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। সর্বসাকূল্যে সড়ক মেরামতে ব্যয় করা যাবে মাত্র ২৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

যা প্রয়োজনের তুলনায় ১২ দশমিক ৫৯ ভাগ। তাই এ অর্থবছরে জেলার ৪৭৭ কিলোমিটার খানাখন্দ সড়কের মাত্র ৩৮ কিলোমিটার মেরামত করা সম্ভব হবে। বাকি ৪৩৯ কিলোমিটার ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক অর্থের অভাবে মেরামত করা সম্ভব হবে না।

বরগুনা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান খান বলেন, আমরা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৮০ কোটি টাকার স্কিম তৈরি করে বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য প্রধান কার্যালয়ে পাঠিয়েছি।

যদি সে অনুযায়ী বরাদ্দ পাওয়া যায় তাহলে, অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যতগুলো সম্ভব সড়ক মেরামত করা হবে। অন্যথায় যা বরাদ্দ পাওয়া গেছে সেই টাকা দিয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সড়ক মেরামতের কাজ করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন....

আমাদের ফেসবুক পাতা

আজকের আবহাওয়া

পুরাতন সংবাদ খুঁজুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০

এক্সক্লুসিভ আরও