ভাসমান বাজারে বিক্রি হয় শ্যাওলা
নভেম্বর ১৯ ২০২৫, ১৯:১১
সম্প্রতি সরেজমিন বেলুয়া নদীর ভাসমান বাজারে গেলে জানা যায়, এই বাজারের নিকটবর্তী এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয় শ্যাওলা, কচুরিপানা মূল, ট্যাপ পনা, দুলালী লতা। এগুলো বিক্রির জন্য নৌকায় করে আনা হয় ভাসমান হাটে। অবাক করার বিষয় হলো, এগুলো বিক্রি হয় বেশ ভালো দামে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নাজিরপুর উপজেলার একটি অংশ সারাবছর পানির নিচে ডুবে থাকে। তাই এখানে চাষাবাদের একমাত্র ভরসা হলো ভাসমান পদ্ধতি। এসব উপাদান ব্যবহার করে তৈরি হয় ভাসমান বেড, যেখানে সবজি চারা রোপণ করা হয়। এছাড়া বিক্রি হওয়া ট্যাপা, পেনা, শ্যাওলা পেচিয়ে তৈরি করা হয় ম্যাদা, যাতে বীজ রোপণের জন্য চারা জন্মানো যায়। এভাবেই স্থানীয়রা শ্যাওলা ও অন্যান্য উপাদান বিক্রি করে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করেন।
ট্যাপপনা বিক্রি করতে আসা জুলফিকর জানান, “শুক্রবার সকালে আমার নৌকাটি বোঝাই করেছি যুগিয়া এলাকা থেকে। রাতে বাড়ি থেকে হাটে রওনা দিয়ে ভোরে পৌঁছাই। আমার নৌকা ২৫০০/= টাকায় এসেছে, বিক্রি করেছি ১৮০০/= টাকায়। সারাবছর এই ব্যবসা করি, বছর শেষে কিছু টাকা জমাও রাখতে পারি। এক নৌকা থেকে অন্য নৌকায় শ্যাওলা নেয়ার জন্য ২০০/= টাকা খরচ করতে হয়।”
স্থানীয় কয়েকজন কৃষক জানান, চারা চাষে শ্যাওলা, কচুরিপানা মূল, ট্যাপ পনা, দুলালী লতা অপরিহার্য। এগুলো ছাড়া চারা বানানো সম্ভব নয়। তাই এই উপাদানগুলো বিক্রি করে স্থানীয়রা বছরে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করছেন।
নাজিরপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. মাহফুজুর রহমান মিল্টন জানান, “অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, শ্যাওলা, কচুরিপানা মূল, ট্যাপ পনা, দুলালী লতা দিয়ে স্থানীয় কৃষকরা বছরে কোটি কোটি টাকা আয় করছেন। এগুলোর গুণাগুণ অনেক; যা জৈব সার হিসাবেও ব্যবহার করা হয়। এর ফলে প্লাবিত এ অঞ্চলের চারা মানসম্মত হচ্ছে এবং এর চাহিদা দেশ জুড়ে।”
এভাবেই নাজিরপুরের ঐতিহ্যবাহী ভাসমান হাট শুধু কৃষি জীবিকা নয়, স্থানীয় অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসাবেও ভূমিকা রাখছে।







































