পীরের বাসায় নারী মুরিদ, গভীর রাতে জিনগত রোগের চিকিৎসা
মে ২২ ২০২৩, ১১:৪৮
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: ঝালকাঠির নলছিটিতে পীর সেজে ১৫ দিন যাবত এক নারী মুরিদ কে বাসায় রেখে গভীর রাতে জিনগত রোগের চিকিৎসা দেয়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান শুরু হয় সাংবাদিকদের। অনুসন্ধানে নলছিটি পৌরসভার মল্লিকপুর এলাকায় মো.হান্নান মল্লিক নামে এমনি এক পীরের দেখা মিলেছে। বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য।
নিজেকে পীর দাবি করা মো. হান্নান মল্লিক পৌরসভার মল্লিকপুর এলাকার মৃত্যু নূর মোহাম্মদ মল্লিক এর ছেলে। জানাগেছে, হান্নান মল্লিক দীর্ঘ বছর এলাকায় ছিলেন না। হঠাৎ করে তিনি এলাকায় ফিরে এসে নিজেকে পীর দাবি করে চিকিৎসা দেয়ার নামে তাবিজ-কবজ দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন টাকা পয়সা। নারীদের জিনগত সমস্যা সহ নানা ধরনের গোপনীয় রোগের চিকিৎসাও দিচ্ছেন তিনি।
রবিবার ( ২১ মে ) রাতে সরজমিনে পীরের বাসভবনে গিয়েই দেখা মেলে এক নারী মুরিদের। তবে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে বাসার ভিতরের একটি কক্ষে চলে যান তিনি।
এরপর আর সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে রাজি না হওয়ায় বাড়ির লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায় , ১৫ দিন যাবত পীরের বাসায় থেকেই জিনগত রোগের চিকিৎসা নিচ্ছেন ওই মুরিদ।
চিকিৎসা নিতে আসা নারী নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার নাওতলা গ্রামের মো. বাবুল হকের দ্বিতীয় স্ত্রী।
বাবুল হকের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, “হান্নান মল্লিক আমাদের নোয়াখালী জেলা শহরের লতিফচ্বর এলাকায় একটি আস্তানা তৈরি করে কয়েকবছর ছিলেন। তিনি নিজেকে পীর দাবি করে মানুষকে মুরিদ বানাতেন।
জিন ভূত তাড়ানো সহ তাবিজ কবজের ব্যবসা করতেন। এরপর হঠাৎ তিনি এই এলাকা থেকে উধাও হয়ে যান। আমার দ্বিতীয় স্ত্রীর বাবার বাড়ি লতিফচ্বর এলাকায়।
হয়তো ওই সুবাদে তাদের পরিচয় হয়েছে। আমার স্ত্রী আমাকে বলে যায়নি। পরবর্তীতে জানতে পারি সে নাকি বরিশালে আছে। এখন আপনার মাধ্যমে শুনলাম যে নলছিটিতে আছে। আমি আমার স্ত্রীকে ফোন করে চলে আসতে বলবো।”
কথা হয় পীর মো. হান্নান মল্লিকের সাথে তিনি বলেন, “এই নারী আমার মুরিদ আমার ভক্ত। তার শরীরে জ্বীনের আচর পড়েছে। তাই ১৫ দিন আগে তিনি আমার কাছে চিকিৎসা নিতে এসেছে।
বর্তমানে ও তার চিকিৎসা চলছে। আমার বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। কি ধরনের চিকিৎসা দেয়া হয় জানতে চাইলে বলেন, রাতে তাকে যার ফুক দেওয়া হয়।”
এদিকে পীরের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে হান্নান মল্লিকের এমন ইসলাম বিরোধী কার্যকলাপে এলাকা জুড়ে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ফুলে ফেঁপে উঠেছে ইসলাম সমাজ। এলাকাবাসী বলছেন, এ কারণে সমাজের যুবকরা কুসংস্কার ও ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এমন পীর মুরদী কার্যকলাপ বন্ধের লক্ষ্যে প্রশাসনের নজরদারি কামনা করছেন ইসলাম সমাজ।
এবিষয়ে নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি ) মুহম্মদ আতাউর রহমান বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নয়। কেউ অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।







































