শতাধিক বছরের পুরনো ‘সদর হাসপাতালটিতে’

শুধু ‘নেই আর নেই’

সেপ্টেম্বর ১১ ২০২৫, ২০:১১

আরিফ হোসেন ॥ শতাধিক বছরের পুরনো দক্ষিণাঞ্চলের সর্ব প্রথম বেসরকারী ও সরকারী ‘সদর হাসপাতাল’ খ্যাত বরিশাল জেনারেল হাসপাতাল। এখানে নেই সীমানা দেয়াল, মূল গেট নেই প্রায় ৩/৪ বছর, গার্ড নাই, নেই নৈশ-প্রহরী। এ যেন এক নাইয়ে’র মেলা। বলছি বরিশাল সদর হাসপাতালের কথা।

হাসপাতালের বহিঃবিভাগ চলছে ঝুকিপূর্ণ ভবনে, তার মধ্যে রয়েছে চিকিৎসক সংকট। সব মিলিয়ে হাসপাতালটি নিজেই ধুকে ধুকে চলছে প্রায় না চলার মত করে। তার ভিতরে ‘নিজেরাই নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছেন’ বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতাল কর্মী ও একাধিক চিকিৎসক।

* সিকিউরিটি, নিরাপত্তার জন্য বাউন্ডারি কোনটাই নেই

* বাড়ছে চোরের উৎপাত

* কবে শেষ হবে চলমান ভবন নির্মাণের কাজ,জানেনা কেউ!

শতাধিক বছরের পুরনো হাসপাতালটির পুরানো মূল ভবনটি এখন কালের সাক্ষি হয়ে দাড়িয়ে থাকলেও তা যথেষ্ঠ ঝুঁকিপূর্ণ। তবে বহু বছরের অতিঝূঁকিপূর্ন দুটি ভবনের একটিতে বহির্বিভাগ,অপর ভবনটিতে চলছে জরুরী বিভাগের কার্যক্রম।

এছাড়া বর্তমানে ১শ’ বেডের ইনডোরের ভবনটির নির্মান কাজ এখন চলমান রয়েছে। তবে নির্মান কাজ শেষ হবে কবে তা নিয়েও রয়েছে অনিশ্চিয়তা। হাসপাতাল কতৃপক্ষ সহ জেলা সিভিল সার্জন আশা করছেন, নতুন ভবনের নির্মান কাজ শেষ হলে পরিস্থিতির কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তন হবে আশাবাদী হাসপাতাল কতৃপক্ষ।

তবে বিগত শত বছরে নানা চড়াই উৎড়াই পেড়িয়ে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ব প্রথম স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানটি চললেও এখন পর্যন্ত ব্যস্তবায়ন হয়নি তেমন কোন উন্নয়ন। অথচ বরিশাল মহানগরী সহ সন্নিহিত বিশাল জনগোষ্ঠীর অধিকাংই সরকারী এ চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানটির ওপর নির্ভরশীল।

এসব বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের বরিশাল বিভাগীয় পরিচালক ডা.শ্যামল কৃষ্ণ চিকিৎসক সহ স্বাস্থ্য সেবা কর্মীর সংকট সর্বত্রই রয়েছে বলে জানিয়ে বলেন, ঝুঁকিপূর্ন ভবনটি ভেঙ্গে নতুন ভাবে ভবন নির্মান করা হচ্ছে। তবে নতুন ভবন ঠিকাদার হস্তান্তর করার পরে হাসপাতালে রোগীর ভোগান্তি অনেকটা কমে যাবে।

এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, উপজেলা পর্যায়ের অনেক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বরিশাল সদর হাসপাতালে চেয়ে নিরাপত্তার দিক থেকে কিছু দিক দিয়ে অনেক ভালো আছে। বরিশাল জেনারেল হাসপাতালের (সদর হাসপাতাল) আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা: মলয় কৃষ্ণ বড়াল জানিয়েছেন-এই হাসপাতালে নৈশপ্রহরি নেই, এমনকি পদও নেই। সিকিউরিটির জন্য আমরা বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছি।

তিনি আরো জানিয়েছেন, ৮ তারিখ দিবাগত রাতে হাসপাতালে একটি ভবন থেকে চোর চক্র তার কেটে নিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের লোকজন দেখে ফেললে চোর চক্র দ্রুত সটকে পড়েন।

এই হাসপাতাল থেকে বিভিন্ন সময়ে ডাক্তার, স্টাফ এবং রোগী এবং রোগীর স্বজনদের মোবাইল ও টাকা-পয়সা চুরি হওয়ার সংবাদ আমার কাছে এসেছে। কিন্তু এগুলো শোনার পর আমার কিছু করার থাকে না। কারণ, ওই একটাই- পর্যাপ্ত সিকিউরিটি নেই, রাতে ডিউটির জন্য নৈশ-প্রহরী নেই। হাসপাতালে চারপাশে দেয়ালগুলো ছোট ছোট। এগুলোকে বড় করা দরকার। হাসপাতালে প্রবেশ মুখে গেট দরকার।

হাসপাতালের স্টাফ মো: নওয়াব হোসেন বলেন, হাসপাতালে ১ নং ভবনটি যদিও গত বছর ঠিক করা হয়েছিলো। কিন্তু এরপরেও কিছু কিছু জায়গা থেকে ওই ভবনে পানি পড়ছে। এটা আমাদের কাজের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা হয়।

হাসপাতালের স্টাফ কামাল হোসেন জানিয়েছেন চতুর্থ শ্রেণীর স্টাফ কোয়ার্টারে বেশকিছু সমস্যা রয়েছে। এখানে পাঁচটি পরিবারের প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন মানুষ বসবাস করেন। বরিশাল সদর হাসপাতালে সাবেক ষ্টাফ জহিরুল ইসলাম জানান, হাসপাতালের পুরাতন ভবন গুলো যদিও মেরামত করা হয়েছে। তারপরও কিছু ভবনে এখনো সমস্যা রয়ে গেছে।

বরিশাল সিভিল সার্জন ডা: এস. এম. মনজুর-এ-এলাহী বলেন- বরিশাল জেনারেল (সদর) হাসপাতালের ভবন ও সিকিউরিটি নিয়ে কিছু সমস্যা আমিও শুনেছি। এটা সমাধান করার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি হাসপাতালের দিকে দ্রুত নজর দেয় তাহলে হয়তো এই সমস্যা গুলো সমাধান হতে বেশি সময় লাগবেনা।
সংবাদটি শেয়ার করুন....

আমাদের ফেসবুক পাতা

আজকের আবহাওয়া

পুরাতন সংবাদ খুঁজুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০

এক্সক্লুসিভ আরও