বাবুগঞ্জের ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র
জনবল ও ঔষুধ সংকটে সেবা বঞ্চিত হচ্ছে রোগীরা
জুলাই ২০ ২০২৫, ১৯:৩০
আরিফ হোসেন ॥ গত ছয় মাস ধরে বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর, কেদারপুর, চাঁদপাশা ও জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নে চারটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে সব ধরনের ওষুধ সরবরাহ না থাকা এবং জনবল সংকট থাকায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে চিকিৎসা নিতে আসা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীরা। তবে এতে প্রতিমাসে প্রায় ১৫ হাজারেরও বেশি রোগী পরিবার পরিকল্পনার স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
এছাড়াও একই সমস্য রয়েছে বাবুগঞ্জ উপজেলায় অধিকাংশ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র গুলোতে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে গর্ভবতী মায়েদের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা, স্বাস্থ্য পরামর্শ এবং সাধারণ রোগ যেমন জ্বর, ঠাণ্ডা, সর্দি, ডায়রিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হলে রোগীরা প্রথমে এখানে আসে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য।
তবে উপজেলার রহমতপুর, কেদারপুর, চাঁদপাশা ও জাহাঙ্গীরনগর সহ ৪ ইউনিয়নে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র রয়েছে। যেখানে বিগত ছয় মাস যাবত কোন ঔষধ সরবরাহ না থাকায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত ইউনিয়নের বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গর্ভবতী মায়েদের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসা, স্বাস্থ্যপরামর্শ এবং ছোটখাটো রোগে আক্রান্ত হয়ে আসা রোগীদের এখানে চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়।
কিন্তু বর্তমানে পর্যাপ্ত চিকিৎসক সংকট থাকা এবং দীর্ঘদিন ধরে ওষুধের সরবরাহ বন্ধ থাকায় সেবা কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। তাই ইউনিয়নবাসীর দাবি চিকৎসক সংকট ও ঔষুধ সরবরাহ সহ অন্য সমস্যা গুলো দ্রুত সমাধান করে সঠিক চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হোক।
এ বিষয় নিয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, দীর্ঘ ৬ মাস যাবত জনবল স্বল্পতা ও ওষুধের ঘাটতির বিষয়টি আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তবে বাজেট ও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দ্রুত সমাধান করতে পারছেনা।
তিনি আরও বলেন, আমরা চেষ্টা করছি যেন গর্ভবতী মায়েদের জরুরি সেবা বন্ধ না হয়। এলাকাবাসীর সহযোগিতায় সীমিত পরিসরে কিছু সেবা চালু রয়েছে আমাদের।
অন্যদিকে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন ও কেদারপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে (ঝঋঈগ) উপ-সহকারী পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক (পুরুষ) পদ দুটি শূন্য রয়েছে। ফলে সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ইউনিয়নের অসুস্থ রোগীরা।
স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সেবা নিতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা রিনা বেগম ও কহিনুর বেগম বলেন, আগে এখান থেকে ওষুধ ও পরামর্শ পেতাম। এখন এখানে আসলে প্রথমেই শুনতে পাই ডাক্তার নেই, পরে ওষুধ চাইলে শুনি তাও নেই। তাই বাধ্য হয়ে বাহিরে গিয়ে ডাক্তার দেখাতে হচ্ছে, যেটা আমার মত অনেকের পক্ষে সম্ভব নয়। কারন হলো বাহিয়ে ডাক্তার দেখাতে গেলে কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়ে তার পরে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়।
ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সেবার সমস্যা গুলোর বিষয় নিয়ে বরিশাল জেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মেহেবুব মোর্শেদ লিটু সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, সারাদেশে উপ-সহকারী পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক পদে জনবল সংকট রয়েছে। পাশাপশি বর্তমানে ঔষধ সংকট সারাদেশেই মুহূর্তে রয়েছে। তবে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে রাজস্ব খাতের অর্থ দিয়ে ঔষধ ক্রয় করা হবে। এতে ঔষধ সংকট নিরসন করা হবে।








































