বরগুনায় লোহার ব্রিজ ভাঙার কারণ ১৬ বছরের খামখেয়ালি
জুন ২৪ ২০২৪, ১৭:৪৩
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: আমতলিতে ভেঙে পড়া লোহার ব্রিজটি যখন নির্মাণ করা হচ্ছিল তখন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন স্থানীয়রা। কিন্তু তাদের কোনো পাত্তাই দেওয়া হয়নি। ব্রিজ ভাঙার কারণ হিসেবে গত ১৬ বছর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিকে দুষছেন তারা।
আমতলি উপজেলার হলদিয়া ও চাওরা ইউনিয়নের মধ্যবর্তীস্থানে হালকা যান (ফুটওভার ব্রিজ) প্রকল্পের আওতায় ২০০৫-০৬ অর্থবছরে লোহার সেতুটির অনুমোদন হয়। ৮৫ মিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুটি নির্মাণের জন্য ২০০৮ সালের ৩১ অক্টোবর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হয়।
নির্মাণের পর গত ১৬ বছরে একবারের জন্যও সেতুটি সংস্কার করা হয়নি। ফলে সেটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। বিপদ এড়াতে সেতুর পাশে বিপদজনক সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়। গাড়ি চলাচল রোধে পুঁতে রাখা হয় গাছ। স্থানীয়দের অভিযোগ, মানুষের জীবন-মালের কথা চিন্তা করে গাছটি পুঁতে রাখা হয়েছিল। কিন্তু সেটি তুলে ফেলা হয়।
গত শনিবার ব্রিজটি ভেঙে পড়ে। এ ঘটনায় ৯ জন নিহত হন। সেতু ভাঙার প্রকৃত কারণ উদঘাটনে গঠিত হয় ৬ সদস্যের কমিটি। তারা কাজ শুরু করেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ২০০৮ সালে সেতু নির্মাণের সময় অনিয়ম করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ করেও এর প্রতিকার মেলেনি। ১৬ বছর ধরে ব্রিজটি সংস্কার করা হয়, এ নিয়েও নাকি তারা কথা বলেছেন। কিন্তু কাজ হয়নি। সেতু নির্মাণে অনিয়ম ও দায়িত্বে অবহেলায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছেন তারা।
তারা অবৈধ পরিবহন নিয়েও অভিযোগ করেছেন। জানিয়েছেন, লোহার ব্রিজটিতে যান চলাচল রোধে পুঁতে দেওয়া গাছের গুঁড়ি হামজা ও টাফি নামে পরিচিত অবৈধ যানবাহনের চালকরা তুলে ফেলেছিল। ব্রিজ দিয়ে ভারী পণ্য সরবরাহ করা হতো। যে কারণে সেটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, অবৈধ যান চলাচল রোধে তারা সচেষ্ট রয়েছেন। গত ১৬ বছর ধরে হলদিয়া ও চাওরা ইউনিয়নের মধ্যবর্তী লোহার ওই ব্রিজটি সংস্কারে খামখেয়ালি হয়েছে। স্থানীয়দের এ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আমতলী উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন তেমন কোনো উত্তর দেননি। সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, এমন দোহাই দিয়েই দায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি।
বরগুনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, আমাদের কাজ শুরু হয়েছে। তদন্ত শেষে সেতু ধসের প্রকৃত কারণ ও জড়িতদের চিহ্নিত করা যাবে।








































