কাগজের বাজার অস্থির ॥ ত্রিমুখী সংকট

নভেম্বর ১৫ ২০২২, ২৩:৫০

ডেস্ক প্রতিবেদক ॥ চাহিদা মতো সরবরাহ না থাকায় সব ধরনের কাগজের বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। বৈশ্বিক সংকটের মুখে কাগজভেদে গত এক বছরে দাম বেড়েছে দেড় থেকে দুইগুণ। ডলার সংকটের কারণে কাঁচামাল আমদানি ব্যাহত হচ্ছে, আবার গ্যাসের চাপ না থাকায় মিলে উৎপাদন করা যাচ্ছে না। এ ছাড়া চলমান বাজার পরিস্থিতি সামনে রেখে অতিরিক্ত মুনাফা করার প্রবণতা রয়েছে ব্যবসায়ীদের। ফলে ত্রিমুখী সংকটের কারণে বেসামাল হয়ে পড়েছে দেশের কাগজের বাজার।

বিশেষ করে দেশীয় নিউজপ্রিন্টের দাম বাড়ার কারণে সংবাদপত্র শিল্পের প্রকাশনা অব্যাহত রাখায় দেখা দিয়েছে নতুন চ্যালেঞ্জ। আবার প্রিন্টিং পেপারের মূল্যবৃদ্ধি ও সরবরাহ না থাকায় নববর্ষের প্রথমদিন কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া যাবে কি না সেটা নিয়েও এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ফেব্রুয়ারির একুশে বইমেলা সামনে রেখে উদ্বেগ বাড়ছে প্রকাশকদের। এ অবস্থায় কাগজের আমদানি, দেশীয় উৎপাদন, সঠিক সরবরাহ ব্যবস্থাপনা এবং এ খাত নিয়ে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য বন্ধের ওপর নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

জানা গেছে, দেশীয় শিল্প বিকাশে দেশের বাইরে থেকে সরাসরি প্রিন্টিং হোয়াইট পেপার ও নিউজপ্রিন্ট আমদানির তেমন সুযোগ নেই। তবে কাগজ তৈরির প্রধান উপকরণ পাল্প আমদানি করতে হয়। নিউজপ্রিন্ট উৎপাদনে ব্যবহৃত পাল্প দেশীয় পুরনো কাগজ রিসাইক্লিন করে পাওয়া যায়। তবে সাদা কাগজ উৎপাদনে পাল্প আমদানি করে থাকেন উদ্যোক্তারা। ডলার সংকটের কারণে কাগজ তৈরির প্রধান কাঁচামাল ম- বা পাল্প আমদানি করতে পারছেন না মিলমালিকরা।

এমনি ব্যাংকগুলো ঋণপত্র বা এলসি খুলছে না। এ অবস্থায় দেশীয় কাগজ উৎপাদন এখন বছরের অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে কমে গেছে। এতে করে বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বাড়ছে হু হু করে। ছাত্রছাত্রীরা খাতা হিসেবে যেসব সাদা কাগজ ব্যবহার করে সেগুলো খুচরা পর্যায়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে না। দ্রুত সরবরাহ না বাড়লে শিক্ষার্থীরা প্রয়োজনীয় খাতাপত্র পাবে কি না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এছাড়া মিলে কাগজ উৎপাদনে আবার বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের প্রয়োজন রয়েছে।

সেই গ্যাস এখন পাওয়া যাচ্ছে না। যেসব মিলের প্রতিদিন ৫০০ টন কাগজ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে তারা এখন ৭০ থেকে ৮০ টনের বেশি উৎপাদন করতে পারছে না। এ অবস্থায় সংকট বাড়ছেই। আবার শিল্পে ব্যবহার হয় এমন সব কাগজ আমদানিতে ৫০-৬০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক গুনতে হচ্ছে। কাগজের এই সংকটকে পুঁজি করে অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা বেড়েছে। কাগজের অবৈধ মজুদের আশঙ্কা রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে মিলারদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে খাত সংশ্লিষ্টরা। এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের ওপর।

এছাড়া নিউজপ্রিন্টের পাল্প দেশীয়ভাবে উৎপাদন হলেও গত ছয়মাসে কাগজের দাম প্রায় দেড় থেকে দ্বিগুণ হয়েছে। একারণে প্রিন্টমিডিয়ার ওপর বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় কাগজ নিয়ে পরিস্থিতি আরও বেগতিক হওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এ প্রসঙ্গে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেন, অন্যান্য জিনিসের মতো কাগজের দামও যে বেড়ে যাচ্ছে সেটা অধিদপ্তরের নজরে এসেছে।

কাগজ ছাড়া সভ্যতা ও জীবন চিন্তা করা যায় না। তাই এ পণ্যটি নিয়ে কারসাজি করার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, কাগজ শিল্প সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে দ্রুত এ বিষয়ে একটি বৈঠক করবে ভোক্তা অধিদপ্তর। এদিকে, দেশের বৃহত্তম কাগজের মার্কেট রাজধানীর নয়াবাজার, জিন্দাবাহার লেন, নওয়াব ইউসুফ রোড এবং ফকিরাপুল প্রেসপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, গত ছয় মাসের ব্যবধানে পাইকারিতে নিউজপ্রিন্ট এবং হোয়াইট প্রিন্টের দাম প্রায় দেড় থেকে দ্বিগুণ বেড়েছে। পাঁচ থেকে ছয় মাসের ব্যবধানে পাইকারিতে হোয়াইটপ্রিন্ট প্রতি টন কাগজের দাম বেড়েছে ৩৫ থেকে ৩৭ হাজার টাকা। বাজারে এ মানের প্রতি টন কাগজ বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ২৮ হাজার থেকে ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকায়। ছয় মাস আগেও এই কাগজ মিলত ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার মধ্যে। এছাড়া ভালো মানের নিউজপ্রিন্ট প্রতি টন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকায়।

ছয় মাস আগেও এ মানের কাগজের টন বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকায়। সেই হিসাবে এ ধরনের কাগজের টনে বেড়েছে ১৫ হাজার টাকা। পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, বছরের এ সময়ে নতুন বই ছাপানোর জন্য সাড়ে ৮ লাখ টন কাগজের প্রয়োজন হয়। মৌসুম সামনে রেখে বাংলাবাজারের প্রকাশকরা বিভিন্ন ধরনের বই ছাপানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ কারণে এখন কাগজের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। অথচ চাহিদা অনুযায়ী কাগজ পাওয়া যাচ্ছে না।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মুদ্রণ শিল্প সমিতির সভাপতি সাইদুর রহমান সান্নামত (শহীদ সেরনিয়াবত) বলেন, কাগজ সংকটের কারণে বছরের শুরুতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া যাবে কিনা সেটা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। যদি কাগজের সরবরাহ না বাড়ে তাহলে সরকারের চাহিদা অনুযায়ী সঠিক সময়ে বই সরবরাহ করতে পারবে না প্রকাশকরা। তিনি বলেন, এখন যে কাগজ আছে তা দিয়ে ৩ কোটি বই তৈরি করা সম্ভব কিন্তু প্রাথমিকেই বই লাগবে ১০ কোটি।

আবার সামনে মহান ২১ ফেব্রুয়ারির উৎসব রয়েছে। সেই সময় বই প্রকাশের একটি তাড়া থাকে ব্যবসায়ীদের। কিন্তু সেটা হয়তো এবার ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি বলেন, দেশীয় মিলারদের কাছে প্রকাশকরা জিম্মি। এ কারণে প্রকাশকদের সরাসরি শূন্য শতাংশ শুল্কে কাগজ আমদানির সুযোগ দেয়া হোক। সূত্রমতে, করোনা পরিস্থিতি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশে কাগজ উৎপাদন কম হওয়া, ভার্জিন পাল্পের সংকট ও কাগজের আকাশ ছোঁয়া দরের কারণে আসছে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের প্রায় ৩৫ কোটি পাঠ্যবই ছাপার কাজও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) থেকে জানা গেছে, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের জন্য এবার ৩৪ কোটি ৬১ লাখ ৬৩ হাজার কপি পাঠ্যবই ছাপার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক থেকে প্রাথমিক স্তরের ৯ কোটি ৯৮ লাখ ৫৩ হাজার কপি এবং মাধ্যমিক স্তরের জন্য ২৪ কোটি ৬৩ লাখ ১০ হাজার কপি পাঠ্যবই ছাপানো হবে। মুদ্রাকরদের সঙ্গে আলাপে জানা গেছে, প্রাথমিক স্তর এবং মাধ্যমিক স্তরের চাররঙা বই ছাপা হয় ৮০ জিএসএম কাগজে। আর মাধ্যমিকের একরঙা বই ছাপানো হয় ৬০ জিএসএম কাগজে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবইয়ের টেন্ডার প্রক্রিয়া যখন চলছিল তখন বাজারে এ মানের কাগজের দর ছিল প্রতিটনে ৫০ হাজার টাকা। এখন দাম বেড়েছে প্রায় দেড় থেকে দ্বিগুণ।

এছাড়া ভাষার মাস মহান ২১ ফেব্রুয়ারির বইমেলায় সৃজনশীল ও নতুন লেখকরা বই ছাপাতে প্রকাশকদের দ্বারস্থ হন। কিন্তু কাগজ সংকটের মুখে এবার তরুণ লেখক- লেখিকা, কবি ও সাহিত্যিকদের বাড়তি পয়সা গুনতে হবে। এমনকি বেশি টাকা দিয়েও নিজের স্বপ্নের বই ছাপাতে পারবে কিনা সেটা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পেপার ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সফিকুল ইসলাম ভরসা জনকণ্ঠকে বলেন, দেশীয় শিল্প বিকাশের স্বার্থে সাধারণত হোয়াইট পেপার ও নিউজপ্রিন্ট আমদানি নিরৎসাহিত করা হয়েছে। আমদানি হয় না বললেই চলে।

তবে মোটা কাগজ (আর্ট পেপার যেটা শুল্কমুক্ত) আমদানি হয় সেটা তৈরি পোশাক শিল্পে ব্যবহার করা হয় রফতানির জন্য। আর ‘ডিউটি’সহ বাইরে যেটা আমদানি হয় সেটা খুবই সীমিত। তিনি বলেন, এখন যে সংকট সেটা ব্যাংক থেকে এলসি না পাওয়ার কারণে। নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, মার্কেন্টাইল ব্যাংক তার এলসি নেয়নি। তিনি বলেন, চলমান সংকটকে পুঁজি করে উৎপাদনকারীরা মিলাররা ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে যাচ্ছেন। দেখার কেউ নেই। ফলে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, সেই অস্থিরতা সামনে আরও বাড়বে। তিনি আরও বলেন, সংকট এখন তা অনাকাক্সিক্ষত পর্যায়ে চলে গেছে। চাহিদার সঙ্গে জোগানের সমন্বয়হীনতা আমদানি না করতে পারার কারণে তৈরি হয়েছে। এখন এলসি খোলার ব্যবস্থা করতে হবে।

নিউজ প্রিন্টের দাম প্রায় দ্বিগুণ ॥ বৈশ্বিক সংকট সামনে রেখে দেশেও দফায় দফায় নিউজপ্রিন্টের দাম বাড়ানো হচ্ছে। দেশে বেসরকারিখাতে নিউজপ্রিন্ট উৎপাদন ও বিপণনের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান বগুড়ার আজাদ পাল্প এ্যান্ড পেপার মিলস। চলতি বছরের গত ১৮ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানটি এ-৪৭জিএসএম ২৮ ইঞ্চি রুল প্রতিটন নিউজপ্রিন্ট কাগজ সরবরাহ করেছে সাড়ে ৫৩ হাজার টাকায়। আর এখন দাম বেড়ে প্রতিটন নিউজপ্রিন্ট বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ হাজার টাকায়। এছাড়া ভূঁইয়া পেপার মিলস, মোস্তফা পেপার মিলস ও বিসিএল পেপার মিলস প্রতিটি মিলে নিউজপ্রিন্টের দাম বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া আলনুর পেপার মিলস, পূর্বাচল পেপার মিলস, রাজা পেপার মিলসসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও ইচ্ছেমতো বাড়িয়ে যাচ্ছে নিউজপ্রিন্টের দাম।

দেশের অধিকাংশ সংবাদপত্র এসব মিল থেকে কিংবা এদের এজেন্ট ও ডিলারদের কাছ থেকে কাগজ সংগ্রহ করছে। মূলত সংবাদপত্র শিল্পের কাগজের জোগান দিচ্ছে দেশীয় পেপার মিলগুলো। কিন্তু নানা সংকটের কারণ দেখিয়ে এখন দফায় দফায় নিউজপ্রিন্টের দাম বাড়ানো হচ্ছে। তথ্যমতে, বাংলাদেশে মোট ২০৬টি পেপার মিল রয়েছে। এরমধ্যে চলমান ৭০ থেকে ৭৫টি। বাকি মিলগুলো নানা সংকটের কারণে এখন আর উৎপাদনে নেই।

সংবাদপত্র সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশীয় নিউজপ্রিন্টই ভরসা। অথচ গত কয়েক মাস ধরে যেভাবে প্রতিনিয়ত দাম বাড়ছে তাতে সংবাদপত্র শিল্পের প্রকাশনা ভয়াবহ সংকটের মুখে পড়তে যাচ্ছে। অচিরেই নিউজপ্রিন্টের দাম কমাতে সরকারী পদক্ষেপ প্রয়োজন। নিউজপ্রিন্টের দাম বাড়ার বিষয়টি স্বীকার করছের মিলমালিকরাও। তারা বলছেন, কাঁচামাল সংকটের কারণে দাম বাড়ছে। পুরাতর ওয়েস্টেজ পাওয়া যাচ্ছে না আগের মতো। এতে করে সংবাদপত্র শিল্প গভীর সংকটের মধ্যে পড়েছে। দুই দশক আগে সরকারি প্রতিষ্ঠান খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর বেসরকারিখাতের মিলমালিকরা একচেটিয়া বাণিজ্য করার সুযোগ নিচ্ছে। নানা অজুহাত দাঁড় করিয়ে সপ্তায় সপ্তায় বাড়ানো হচ্ছে কাগজের দাম।

এদিকে দৃষ্টি দেয়ার কেউ নেই। ফলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে সংবাদপত্র ও প্রকাশনা শিল্পের ভবিষ্যৎ। নিউজপ্রিন্ট কাগজের অত্যাধিক দাম বাড়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পেপার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ও মোস্তফা পেপার হাউজের স্বত্বাধিকার আলহাজ মো. নুরুল আমিন বলেন, ভালোমানের নিউজপ্রিন্ট প্রতিটনের দাম রাখা হচ্ছে ৮০-৮৫ হাজার টাকা। মিলগুলোতে উৎপাদন কমে যাওয়ায় তারা এজেন্ট ও ডিলারদের কাগজ দিতে পারছে না।

তিনি বলেন, নিউজপ্রিন্ট আমদানি করতে হয় না, দেশে উৎপাদন হয়। এ কারণে গ্যাস ও বিদ্যুতের নিশ্চয়তা পেলে নিউজপ্রিন্ট উৎপাদন বাড়বে। কাগজের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ডিলার, পাইকার ও প্রকাশকরা জানিয়েছেন, কয়েক মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে নিউজপ্রিন্টসহ সব ধরনের কাগজের দাম। মানভেদে কাগজের দাম বেড়েছে ২৫ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত। দাম বাড়ার মূল কারণ হিসেবে তারা বলছেন, বৈশ্বিক সংকটের পাশাপাশি মিলমালিক সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কারসাজি রয়েছে। এদিকে সংবাদপত্র প্রকাশনা শিল্পের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সব ধরনের কাগজের দাম কমানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছে সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে সংস্থাটির কার্যালয়ে গত জুনে চলতি অর্থবছরের ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রাকবাজেট আলোচনায় জানানো হয়, সরকারের সহযোগিতা ছাড়া এ শিল্পের টিকে থাকা কঠিন। নোয়াব সংবাদপত্র শিল্পের জন্য নিউজপ্রিন্ট আমদানির ওপর ভ্যাটমুক্ত সুবিধা দেয়া অথবা সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ ভ্যাট নির্ধারণের দাবি করেছে। চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সারাদেশে এখন সর্বমোট ৬২৪টি সংবাদপত্র রয়েছে। এর মধ্যে দৈনিক পত্রিকা ৪৭৯টি, যার ২০৩টি ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয়। বাকি ২৭৬টি প্রকাশিত হয় মফঃস্বল থেকে।

আর ৯৯টি সাপ্তাহিক পত্রিকার মধ্যে ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয় ৬৩টি। ২০টি পাক্ষিক পত্রিকার মধ্যে ১৬টি ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয়। ২৪টি মাসিক পত্রিকার ২১টি ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয়। সব মিলিয়ে ঢাকা থেকে ৩০৪টি ও মফঃস্বল থেকে ৩২০টি পত্রিকা প্রকাশ হওয়ার তথ্য মিলেছে। এমতাবস্থায় কাগজের দাম বেড়ে যাওয়ায় সংকটে পড়েছে সংবাদপত্রগুলো। সরকারের আইন অনুযায়ী, সংবাদপত্র একটি সেবামূলক শিল্প। অন্যান্য সেবা খাত সরকারের কাছ থেকে নানা রকম সুবিধা ও কর রেয়াত পেয়ে থাকে। কিন্তু সংবাদপত্রশিল্প সেসব থেকে বঞ্চিত।

সংবাদটি শেয়ার করুন....

আমাদের ফেসবুক পাতা

আজকের আবহাওয়া

পুরাতন সংবাদ খুঁজুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০

এক্সক্লুসিভ আরও