৫০ বছর ধরে আহ্বায়ক কমিটিতেই চলছে ঝালকাঠি জেলা যুবলীগ
নভেম্বর ১০ ২০২২, ১১:৫০
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর প্রতিষ্ঠা হয় বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে অনুকূল-প্রতিকূল পরিবেশ এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পেরিয়ে ৫০ বছর অতিবাহিত করছে এ যুব সংগঠনটি।
তবে ঝালকাঠিতে সেই প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই যুবলীগের কার্যক্রম চলেছে শুধু আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে। যুবলীগ প্রতিষ্ঠার সুবর্ণজয়ন্তীতেও পূর্ণাঙ্গ কমিটির মুখ দেখতে পায়নি জেলার নেতাকর্মীরা।
২০২০ সালের ৬ আগস্ট এক চিঠিতে রেজাউল করীম জাকিরকে আহ্বায়ক ও কামাল শরীফকে যুগ্ম-আহ্বায়ক করে ঝালকাঠি জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি করা হয়।
ওই বছর জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলে নতুন কমিটির আত্মপ্রকাশ ঘটে। এভাবেই একের পর এক আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে চলছে সংগঠন। পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার বিষয়ে কারও তেমন কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান জানান, ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর যুবলীগ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পরে ঝালকাঠি জেলায় আলমগীর হোসেনকে আহ্বায়ক ও শাহজাহান খলিফাকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়।
১৯৭৫ সালে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর জেলা যুবলীগের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। এরপর দীর্ঘদিন কমিটিহীন থাকার পর ১৯৯৪ সালে এম আলম খান কামালকে আহ্বায়ক এবং খসরু নোমান ও লিয়াকত আলী খানকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়।
পরে ১৯৯৭ সালে এম আলম খান কামাল মূল দলে (আওয়ামী লীগ) চলে গেলে খসরু নোমানকে আহ্বায়ক এবং জাকির হোসেন ও লিয়াকত আলী খানকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়।
এ আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে ১৪ বছরেও সম্মেলন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা সম্ভব হয়নি। আহ্বায়ক কমিটি দিয়েই চলে জেলা যুবলীগের কার্যক্রম।
লিয়াকত আলী খান বলেন, ২০১২ সালের ১৭ জুন আমাকে আহ্বায়ক, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করীম জাকির ও যুবনেতা হাবিবুর রহমান হাবিলকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৭১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় যুবলীগ।
২০২০ সালের ৬ আগস্ট রেজাউল করীম জাকিরকে আহ্বায়ক এবং কামাল শরীফকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে একটি চিঠি পাঠায় কেন্দ্রীয় কমিটি। বর্তমানে এ কমিটির নেতৃত্বেই চলছে জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম।
তবে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকলেও এখনকার যুবলীগ আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী ও সুসংগঠিত বলে মনে করেন তিনি।
ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলন বলেন, চার-পাঁচ বছর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি।
২০১৫ সালের ১৯ জুলাই নতুন কমিটি দেওয়ায় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা হয়েছি। কিন্তু যুবলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় এখন কোনো পদ-পদবিতে নেই। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও যুবলীগ নেতা বলে রাজনৈতিক পরিচয় দিতে হচ্ছে।
একই ক্ষোভ প্রকাশ করেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন মিঠুও। এদিকে, নাম প্রকাশ না করে জেলা ছাত্রলীগের এক সাবেক নেতা বলেন, একসময় ছাত্রলীগের তুখোড় নেতা ছিলাম। আর এখন আমাদের কোনো পদ-পদবি নেই। দন্তহীন বাঘের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছি।
এ বিষয়ে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক রেজাউল করীম জাকির বলেন, ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছি।
ঝালকাঠি সরকারি কলেজ ছাত্রসংসদের জিএস ছিলাম। জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আঁকড়ে ধরে আছি।
পরবর্তী সময়ে জেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পেয়ে সব ধরনের কর্মসূচি সঠিকভাবে পালন করেছি। ঝালকাঠি জেলা যুবলীগ নেতারা ঐক্যবদ্ধ আছেন।
আ/ মাহাদী









































