বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আ. লীগ সরকার জড়িত: মির্জা ফখরুল
ফেব্রুয়ারি ২৬ ২০২৩, ১৫:০৫
অনলাইন ডেস্ক :: পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারই জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম খান।
রোববার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
২০০৯ সালে পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহে শহীদদের স্মরণে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
তিনি বলেন, ২৫ ফেব্রুয়ারি আসলেই আওয়ামী লীগ সরকারের হৃদকম্পন শুরু হয়ে যায়। তাদের (সরকার) একজন মন্ত্রী গতকালকে বললেন যে, ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান সাহেব জড়িত। এতটুকু দ্বিধা করলেন না এ ধরনের একটা উক্তি করতে। আমরা খুব পরিষ্কার করে আজকে বলতে চাই যে, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে আওয়ামী লীগ ও তার সরকার জড়িত। তাদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এবং তাদের চক্রান্তের মধ্য দিয়ে, পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে এই বিডিআর হত্যাকাণ্ড ঘটনা হয়েছে বাংলাদেশকে একটা দুর্বল নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত করবার জন্যে। একই সঙ্গে এদেশের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর মনোবল সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দেয়ার জন্য এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে মানুষ জেগে উঠেছে, মানুষ জেগে উঠছে। আজকে দেয়ালের লেখা পড়েন, মানুষের চোখের ভাষা দেখেন। দেখবেন এই সরকারের প্রতি মানুষের শুধু ঘৃণা আর ঘৃণা। এই মুহূর্তে সবাই চায়, এই সরকারের পরিবর্তন।
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমস্ত রাজনৈতিক দল সমস্ত সংগঠন সমস্ত ব্যক্তি এক হয়ে, এটা শুধু বিএনপি’র জন্য নয়, অথবা এটা অন্য কোন দলের জন্য নয়, এটা এই দেশের মানুষের জন্য এই দেশকে রক্ষা করার জন্য আজকে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। কেউ এখানে নিরাপদ নয়। এখানে বিএনপি নিরাপদ নয়, এখানে জাসদ নিরাপদ নয়, এখানে অন্যান্য ধর্ম পালন করে তারাও নিরাপদ নয়, এখানে আলেমরাও নিরাপদ নয়। এজন্য আজকে সকলকে একতাবদ্ধ হতে হবে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আগস্ট মাস থেকে আমরা যখন চাল ডাল তেল লবণের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আন্দোলন করতে শুরু করেছি তখন থেকে তারা গুলি করে হত্যা করতে শুরু করেছে। আমাদের ১৭ জন নেতাকর্মীকে প্রকাশ্যে রাজপথে গুলি করে মেরেছে। ইতোমধ্যে আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দিয়েছে। অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। এখনো আমাদের কয়েক হাজার নেতাকর্মী জেলে রয়েছেন। এই ভয়াবহ একটি অবস্থা দুর্বিষহ একটি অবস্থা। এই অবস্থা থেকে আমাদেরকে বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমাদেরকে আহ্বান জানিয়েছেন আমাদের রাজপথেই ফয়সালা করতে হবে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া স্লোগান দিয়েছিলেন সেই স্লোগান অত্যান্ত প্রাসঙ্গিক। ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’। সেগুলোকে একসঙ্গে নিয়ে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন হবে না যতক্ষন পর্যন্ত না তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসছে, তার অধিনে নির্বাচন হচ্ছে। এর আগে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।
মেজর হাফিজের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, মেজর হাফিজ খুব সুন্দর কথা বলেছেন- প্রতিবছর শুধু শোক দিবস পালন করব, তাতে কোনো লাভ হবে না। আজকে বেরিয়ে আসতে হবে, কোথায় আমাদের সেই তরুণ, কোথায় আমাদের সেই যুবক, কোথায় আমাদের সেই ছাত্ররা যারা এই দেশে ইতিহাস তৈরি করেছে। যারা প্রতিটি সংকটময় মুহূর্তের সামনে এসেছে, আজকে তাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে; দেশকে বাঁচাতে হবে। ১৯৭১ সালে যেমন যুদ্ধ করেছি, নিজের দেশকে রক্ষা করার জন্য, স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার জন্য, আজকে ঠিক একইভাবে এদেশের স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য এবং মানুষকে বাঁচানোর জন্য, আমার অস্তিত্বকে রক্ষা করার জন্য, আমার স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য, আমার সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার জন্য আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন, আজকে গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে লিখতে পারে না, সত্য প্রচার করতে পারে না। মানুষ প্রতিবাদ করতে পারে না। এ থেকে জাতিকে রক্ষা করতে হবে। আর এই দায়িত্ব শুধু বিএনপির একার নয়, সকল দেশপ্রেমিক দল ও নাগরিকদের এগিয়ে আসতে হবে। ভয় পাওয়ার কিছু নেই। সবাই একজোট হলে কোনো স্বৈরাচারী সরকার টিকে থাকতে পারেনি, ইতিহাস তাই বলে।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। আরও বক্তব্য দেন ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, বিএনপি’র মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন ও ঢাকা দক্ষিণ বিএনপি’র সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ।
আমার বরিশাল/আরএইচ








































