বরিশাল নৌ-বন্দরে টিকিট না দিয়ে টাকা নিচ্ছে শুল্ক প্রহরীরা
নভেম্বর ০২ ২০২২, ১৯:২৭
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল নৌ বন্দর টার্মিনালের টিকেট কাউন্টারগুলোতে দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)এর অভিযানের পর ফের অবৈধ টিকেটের বাণিজ্য চালাচ্ছে একটি সিন্ডিকেট। শুল্ক আদায়কারীদের যোগসাজসে চলছে এই বাণিজ্য। এ বিষয়ে অনুসন্ধানে গিয়ে শুল্ক আদায়কারীদের তোপের মুখে পড়েছেন এক সংবাদকর্মী।
মঙ্গলবার রাতে বরিশাল নৌ-টার্মিনালের টিকিট কাউন্টারের সামনে দাড়িয়ে অনুসন্ধান করতে গেলে শুল্ক আদায়কারীদের তোপের মুখে পড়ে সংবাদকর্মী। এরআগে অনুসন্ধানে অবৈধ টিকেট বাণিজ্যের বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। যার ভিডিও প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- শুল্ক প্রহরীরা বিক্রিত টিকেট না ছিড়ে পকেটে রেখে দেয়।
পরে সেগুলো কাউন্টারে শুল্ক আদায়কারীদের কাছে ফেরত দেয়। আবার সেই টিকিট বিক্রি করা হয়। এছাড়াও টিকিট না দিয়ে টাকা রেখে যাত্রীদের লঞ্চ টার্মিনালের মধ্যে প্রবেশ করতে দেয়া হয়। এমনকি ঝাড়ুদারও সে টাকা উঠায়। সোমবার রাতে লক্ষণ নামের এক ঝাড়ুদারকে টিকিট কালোবাজারির সময় হাতেনাতে ধরে সংবাদকর্মীরা।
এমন খবর পেয়ে নৌ সদর থানার ওসি আবদুল জলিল ফোর্স পাঠিয়ে লক্ষণকে থানা নিয়ে যায়। পরে শুল্ক প্রহরী তৌফিক থানায় গিয়ে নৌ-বন্দর কর্মকর্তা এর বিচার করবে সেই শর্তে মুচলেকা দিয়ে লক্ষণ ছাড়িয়ে আনেন। সেসময় লক্ষণ বলেন- শুল্ক আদায়কারীদের মদদেই আমি এই টাকা তুলি। এসময় তিনি সাইদুর রহমান, মোসলেম হাংলাদার, নূরুল ইসলাম, আবুল হাসান খায়েরসহ বেশকয়েকজনের নাম প্রকাশ করেন।
পরে মঙ্গলবার পুনরায় নৌ-টার্মিনালে বিষয়টি অনুসন্ধানে গেলে ভিডিও ডিলেট করার জন্য শুল্ক আদায়কারী সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে শুল্ক প্রহরী তোফিক, লক্ষন , ফারুক, ফয়সাল, ইসমাইলসহ ৮/১০ জনের একটি দল সংবাদকর্মী জিহাদকে ঘেরাও করে চাপ প্রয়োগ করে এবং তাকে বিভিন্ন হুমকি দেয়। পরে খবর পেয়ে আরো কয়েকজন সংবাদকর্মী ঘটনাস্থলে গেলে শুল্ক আদায়কারীরা ক্ষমা চেয়ে সটকে পড়ে।
এ বিষয়ে সংবাদকর্মী জিহাদ বলেন- নৌ বন্দর টার্মিনালের টিকিট কালোবাজারির তথ্য পেয়ে সংবাদ সংগ্রহের জন্য যাই। সেখানে গিয়ে দেখি শুল্ক প্রহরীরা টিকেট না ছিড়ে সেই টিকেট পকেটে রেখে পরে আবার সেগুলো কাউন্টারে ফেরত দেয়। অন্যদিকে নগদ টাকা রেখে যাত্রীদের ভিতরে প্রব্শে করতে দেয়া হয়। যা আমি ভিডিও ধারণ করি।
এরপর মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে শুল্ক আদায়কারী সাইদুর রহমানের নেতৃত্বে শুল্ক প্রহরী তোফিক, লক্ষন, ফারুক, ফয়সাল, ইসমাইলসহ ৮/১০ জনের একটি দল আমাকে ঘেরাও করে চাপ প্রয়োগ করে এবং বিভিন্ন হুমকি দিয়ে থাকে । পরে খবর পেয়ে আরো কয়েকজন সংবাদকর্মী ঘটনাস্থলে আসলে তারা সটকে পড়ে।
এ বিষয়ে শুল্ক আদায়কারী সাইদুর রহমান বলেন- টিকিট কালোবাজারির বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আমার নেতৃত্বে কেউ যায়নি। আমি চা খেতে ওখানে গিয়েছিলাম। আমি কোন ঝালেমা করতে চাইনি। যা করার তৌফিক করেছে।
এ বিষয়ে শুল্ক প্রহরী তৌফিক বলেন- আমি জিহাদ ভাইকে হুমকি দেই নাই। তার সাথে একটু কথাকাটি হয়েছিল। সেজন্য আমি তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেছি। এ ব্যাপারে নৌ-বন্দর কর্মকর্তা আঃ রাজ্জাককে বার বার কল করলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।