সাংবাদিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মিন্টু বসুর স্বরণসভা অনুষ্ঠিত

নভেম্বর ০৮ ২০২৫, ২০:৪৬

বরিশাল : বরিশালে অনুষ্ঠিত হলো প্রবীণ সাংবাদিক, সংগঠক, মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মিন্টু বসুর আজ ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্বরণ সভা। খেয়ালী গ্রুপ থিয়েটারের আয়োজনে শুক্রবার সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত স্বরনানুষ্ঠানে সঙ্গীত, আবৃত্তি ও স্মৃতিচরণ করা হয়। খেয়ালী গ্রুপ থিয়েটারের সভাপতি সিরাজুম মুনির টিটু’র সভাপতিত্বে স্মৃতিচরণ করেন ।

সংস্কৃতজন মুকুল দাস, বরিশাল সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সভাপতি শুভংকর চক্রবর্তী, খেয়ালী গ্রুপ থিয়েটারের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম চুন্নু, বিএম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর সম ইমানুল হাকিম, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি স্বপণ খন্দোকার, অধ্যক্ষ প্রফেসর বিমল চক্রবর্তী, অধ্যক্ষ তপংকর চক্রবর্তী, অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম খোকন, অধ্যাপিকা টুন্নু রানী কর্মকার, অধ্যাপিকা দিপ্তী রানী ঘোষ, বরিশাল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের মেকানিক্যাল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অমল কৃষ্ণ রায়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিষ্টার বাহউদ্দিন গোলাপ, চাঁদের হাটের কেন্দ্রীয় সদস্য আবুল কালাম আজাদ, সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিন্টু কুমার কর, সহ সভাপতি বাসুদেব ঘোষ, নন্দ দুলাল, সাংবাদিক গিয়াস উদ্দিন সুমন, খেয়ালী গ্রুপ থিয়েটারের সুপন কান্তি ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক ভারপ্রাপ্ত সঞ্জিত সমাদ্দার প্রমূখ। খেয়ালী গ্রুপ থিয়েটারের সদস্য সজল রায়ের সঞ্চলনায় আরো উপস্থিত ছিলেন মিন্টু বসু স্বরণ সভার আয়োজক কমিটির আহ্বয়ক সাঈদ পান্থসহ সাংস্কৃতিক ও সাংবাদিক অঙ্গনের সদস্যরা।

গুনী মিন্টু বসু ২০১৭ সালের ০৩ অক্টোবর পরলোকগমন করেন। বাংলাদেশের নাট্য আন্দোলনে একজন প্রতিবাদী ব্যক্তিত্ব হিসেবেই পরিচিত ছিলেন মিন্টু বসু। প্রকাশক, সাংবাদিক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, উপন্যাসিক, নাট্যকার, নির্দেশক, অভিনেতা, সংগঠক-বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী এই মানুষটি বরিশালের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক অঞ্চলের পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন। আজন্ম প্রতিবাদী এই মানুষটির জন্ম ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার বৈচন্ডি গ্রামে ১৯৪৮ সালের ১২ মার্চ। পিতা নরেন্দ্রনাথ বসু ও মাতা শৈলবালা বসু। পিতা-মাতার ৬ সন্তানের মধ্যে তিনি চতুর্থ। প্রতিভাবান এই মানুষটি সমাজের একজন আলোকিত মানুষ ছিলেন। সুদীর্ঘ ৪৪ বছর ধরে সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম সংবাদপত্র ‘বাংলাদেশ’ পত্রিকা থেকেই মিন্টু বসুর সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি হয়েছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধ এই গুণি ব্যক্তির এক হাতে তুলে দিয়েছিল ‘অসি’, অন্য হাতে তিনি তুলে নিয়েছিলেন ‘মসি’। বিপ্লবী বাংলাদেশ ছিল রণাঙ্গণের মুক্তিযোদ্ধাদের মুখপাত্র। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ভারতের কোলকাতায় অবস্থানকালে মিন্টু বসু জানতে পারেন ৯নং সেক্টরের মুখপাত্র ‘বিপ্লবী বাংলাদেশ’ পত্রিকায় প্রকাশ শুরু হয়েছে। এ খবর শুনে পত্রিকার সম্পাদক নুরুল আলম ফরিদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। বিপ্লবী বাংলাদেশের বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মিন্টু বসু। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সাপ্তাহিক থেকে দৈনিক হিসেবে প্রকাশিত বিপ্লবী বাংলাদেশের দীর্ঘদিন বার্তা সম্পাদক ছিলেন মিন্টু বসু।

 

রণাঙ্গণ নিয়ে মিন্টু বসুর অনেক লেখাই ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও দলিল পত্র’ গ্রন্থে সন্নিবেশিত হয়েছে। তিনি দৈনিক দক্ষিণাঞ্চল ও আজকের বার্তায় বার্তা সম্পাদক, দৈনিক গ্রাম সমাচার পত্রিকায় নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক আজাদ, দৈনিক দেশবাংলা এবং দৈনিক বাংলার বাণীতে বরিশাল প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন। দীর্ঘদিন তিনি একুশে টেলিভিশনেরও বরিশাল প্রতিনিধি ছিলেন। বরিশাল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ছাড়াও বরিশাল প্রেসক্লাবের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন মিন্টু বসু। লেখক হিসেবে নাটক, উপন্যাস, জীবনীগ্রন্থ ও মুক্তিযুদ্ধের উপর তার ৭৮টি বই প্রকাশিত হয়েছে। তার প্রথম লেখা উপন্যাস প্রকাশিত হয় ১৯৬৫ সালে। ৮০’র দশকে তিনি শিশু সংগঠন চাঁদের হাটের মাধ্যমে বরিশালে শিশু নাট্য আন্দোলন গড়ে তোলেন। চাঁদের হাটে তিনি দীর্ঘদিন সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। দেশের অন্যতম প্রাচীন গ্রুপ থিয়েটার খেয়ালী গ্রুপ থিয়েটারের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন দীর্ঘ ২০ বছর। তার লেখা নাটকের সংখ্যা ৩৪।

বরিশাল

সংবাদটি শেয়ার করুন....

আমাদের ফেসবুক পাতা

আজকের আবহাওয়া

পুরাতন সংবাদ খুঁজুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০

এক্সক্লুসিভ আরও