বাউফলে সেতুর সংযোগ সড়ক নাই, ভোগান্তিতে জনসাধারণ
জুলাই ২৪ ২০২৫, ১৩:০১
সরজমিন দেখা গেছে, বাউফল-দশমিনা উপজেলার সীমান্তবর্তী বগী খালের উপর নির্মিত ওই সেতুর বর্তমান সড়ক থেকে কমপক্ষে ১০ ফুট উচ্চতা। জনসাধারণের চলাচলের জন্য স্থানীয়রা সেতুর দুই পাশে সিমেন্টের তৈরি পাটা বসিয়ে কষ্ট করে চলাচল করছে। সেতুর দুই পাশের গ্রামে রয়েছে সহশ্রাধিক পরিবারের বসবাস। বাউফল উপজেলার বগী-কর্পূরকাঠী গ্রামে রয়েছে দৈনন্দিন হাটবাজার, একাধিক প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ সকল হাটবাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল দশমিনার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দারা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর দশমিনা সূত্রে জানা যায়, আয়রন সেতু প্রকল্পের অধীনে ২৪ মিটার সেতুর প্রকল্প ব্যয় ধরা হয় ৩ কোটি ৩২ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। পটুয়াখালী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে দরপত্র আহ্বান করেন। দরপত্র অনুযায়ী কাজটির কার্যাদেশ দেওয়া হয় আবুল কালাম আজাদ নামে এক ঠিকাদারকে। কিন্তু কাজটি করেন সাব-ঠিকাদার হিসেবে খবির উদ্দীন সিকদার নামে একজন। মূল সেতু ২০২২ সালেই নির্মাণ হয়। কিন্তু দুই পাশের সংযোগ সেতু না করেই ঠিকাদার চলে যায়।
এ বিষয়ে খবির উদ্দিন সিকদার বলেন, যথা সময়ে কাজটি শেষ হতো কিন্তু সেতুর দুই পাশের বাসিন্দারা সহযোগিতা না করার কারণে কাজটি সম্পন্ন করা যায়নি।
একটি সূত্রে জানা গেছে, সেতুর উচ্চতা অনুযায়ী সংযোগ সড়ক করতে হলে সেতুর পশ্চিম পাশের পাকা সড়ক ও দোকান, বসত বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই কারণে ওই এলাকার কয়েকটি পরিবার আদালতে জমি অধিগ্রহণ মামলা করলে কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি মামলা নিস্পত্তি হলে সংযোগ সড়ক করতে নতুন বাজেটের প্রকল্প তৈরি করে প্রকল্প পরিচালকের কাছে পাঠিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। যা প্রকল্প পরিচালকের অনুমোদন প্রয়োজন। সেই ক্ষেত্রে বাড়বে ব্যয়।
বাঁশবাড়িয়ার কাজেম আলী সরদার (৬৫) বলেন, বাউফলের বগী গ্রামের ওপর আমরা নির্ভরশীল। দৈনন্দিন বাজারসহ ছেলে-মেয়েদের স্কুল-মাদ্রাসা সবই ওই গ্রামে। কিন্তু সেতুটির কোন সংযোগ সড়ক না থাকায় আমাদের অনেক কষ্ট হয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুর সংযোগ সড়ক সম্পন্ন করার দাবি জানাই।
কর্পূরকাঠী ইসলামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী অন্তর শীলসহ আরো একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, বাঁশবাড়িয়া গ্রাম থেকে ওই সেতু পার হয়ে আমাদের আসতে অনেক কষ্ট হয়। সম্প্রতি বৃষ্টিতে কয়েকজন সহপাঠী পিচ্ছিল স্থানে পড়ে গিয়ে আহত হয়।
কর্পূরকাঠী ইসলামিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি ঘোষ বলেন, শুধু তার বিদ্যালয়ে নয়, বাঁশবাড়িয়া গ্রামের অনেক শিক্ষার্থী ছেলে-মেয়ে বগী-কর্পূরকাঠী গ্রামের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করে। কিন্তু বগী খালের সেতুটির সংযোগ সড়ক না হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে ছেলে-মেয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করে। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের নজরে আনার দাবি করছি।
পটুয়াখালী জেলা স্থানীয় সরকার নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসেন আলী মীর বলেন, সেতুটি পরিদর্শন করে ডিজাইনসহ বাতিল করেছি। ঠিকাদার কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাকে জরিমানা করে, নতুন করে ডিজাইন পাশ করে বরাদ্দের জন্য প্রকল্প পরিচালকের কাছে পাঠিয়েছি। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যেই কাজটি সম্পন্ন করা যাবে।








































