বরিশালে ছাত্রী হোস্টেলে হামলার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠণ
সেপ্টেম্বর ১০ ২০২৫, ২২:০১
বরিশাল : গভীর রাতে বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ্ টেকনোলজি (আইএইচটি) হোস্টেলে ঢুকে ছাত্রীদের ওপর বহিরাগতদের হামলায় দুই ছাত্রী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা ধাওয়া করে বহিরাগত পাঁচ যুবককে আটক করে পুলিশের কাছে সোর্পদ করেছেন।
অপরদিকে গভীর রাতে ছাত্রী হোস্টেলে ঢুকে হামলার ঘটনায় বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে আইএইচটি কর্তৃপক্ষ। সহকারী অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমানকে প্রধান করে গঠিত কমিটিতে হোস্টেল সুপার ডা. দীপান্বিতা পপি, প্রভাষক ডা. ফিরোজ কিবরিয়া এবং ডা. রাকিবুর রহমানকে সদস্য করা হয়েছে। আগামী পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তাদেরকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ এলাকায় অবস্থিত আইএইচটি ক্যাম্পাসে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত ছাত্রীরা হলেন- রেডিওলজি অনুষদের সানমুন জাহান বুশরা ও রেডিওথেরাপি অনুষদের মুক্তা আক্তার। আহতদের মধ্যে মুক্তাকে শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রাতে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্য মো. ইব্রাহিম বলেন, ছাত্রীর মা এবং নানি পরিচয় দিয়ে কয়েকজন ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের বাঁধা দেয়া হয়। এ সময় তারা গেট ধাক্কা দিয়ে জোরপূর্বক ক্যাম্পাসে ঢুকে পরে।
একপর্যায়ে কয়েকজন বহিরাগত যুবক ৪/৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে ক্য্যাম্পাসে ছাত্রী হোস্টেলে ঢুকে পরে। তারা হোস্টেলের নিচতলায় প্রবেশ করে শিক্ষার্থী বুশরা ও মুক্তাকে বেধম মারধর করে। শিক্ষার্থী বুশরা বলেন, সোনিয়া নামের এক ছাত্রী রাত আটটার দিকে হোস্টেলে প্রবেশ করে। এ কারণে হোস্টেল সুপারের নির্দেশে তাকে নিচতলায় বসিয়ে রাখা হয়। রাত ১২টার দিকে তার মাসহ বহিরাগত ছেলেরা জোরপূর্বক গেট খুলে হোস্টেলে ঢুকে আমাদের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এতে আমি এবং সহপাঠী মুক্তা আহত হই। আইএইচটি অধ্যক্ষ ডা. মলয় কৃষ্ণ কুন্ডু বলেন, সন্ধ্যা ছয়টার পর হোস্টেল থেকে বাহির এবং প্রবেশের নিয়ম নেই। সেখানে সোনিয়া নামের ডেন্টাল অনুষদের এক ছাত্রী সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার পর হোস্টেলে প্রবেশের চেষ্টা করে। তখন হোস্টেলের সিনিয়র শিক্ষার্থী সানমুন জাহান বুশরা ও মুক্তাসহ কয়েকজন তাকে হোস্টেলে প্রবেশে বাঁধা দেয়।
বিষয়টি জানতে পেরে রাত ১২টার দিকে সোনিয়ার মা-নানিসহ কয়েকজন ক্যাম্পাসে ঢোকার চেষ্টা করে। তিনি আরও বলেন, খবর পেয়ে হল সুপার ঘটনাস্থলে হাজির হন। পাশে থাকা হোস্টেল থেকে ছাত্ররা নেমে এসে ছাত্রী সোনিয়া, তার মা এবং বহিরাগত পাঁচ যুবককে আটকে রাখে। এরপর রাত তিনটার দিকে ছাত্রী ও তার মায়ের মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং বহিরাগত পাঁচ যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।
অধ্যক্ষ বলেন, ঘটনার প্রেক্ষিতে বুধবার সকালে একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভা হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠণ করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী অভিযুক্ত ছাত্রীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তাছাড়া এ ঘটনায় কলেজ প্রশাসন বাদী হয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর বাহিরে আহত ছাত্রীরা চাইলে থানায় মামলা করতে পারবে। বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষকে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা অভিযোগ দিতে গরিমসি করছে। অভিযোগ না পাওয়া পর্যন্ত আটক ব্যক্তিদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।









































