‘অসহায় মাসুদ খুঁজে পেলো আয়ের পথ’
আগস্ট ১৪ ২০২৫, ১৮:১৬
আরিফ হোসেন ॥ এক সময় ফুলের দোকানে কাজ ও ফুলের মালা গেঁথেই চলতো মাসুদের সংসার। হঠাৎ মাসুদের জীবনে নেমে আসে এক অন্ধকার গল্প। এর পর থেকেই মাসুদ কাজ হারিয়ে পথে পথে ভিক্ষুকের মত জীবন যাপন করতে শুধু করেন। মাসুদ জীবনের অর্ধেক সময় নগরীর সদর রোর্ড ফুলের দোকানেই পাড় করেছেন। গোলাপ হাতে নিয়ে মাসুদের চোখে যে আলো জ্বলে উঠেছিলো, তা ছিল স্বপ্নের আশা, বিস্ময় আর কৃতজ্ঞতার রঙে রাঙানো, যেন দীর্ঘ অন্ধকার শেষে ভোরের প্রথম সূর্যের কিরণ এসে ছুঁয়ে গেল তার জীবন।
অন্যদিকে বাড়িতে অপেক্ষা করছে বাকপ্রতিবন্ধী স্ত্রী ও দুই সন্তান। যাদের হাসি আর ক্ষুধা মেটাতে তিনি প্রতিদিন শুনতে হতো নানা ধরনের কথা। তবে গোলাপ ফুল বিক্রি ছিলো তার স্বপ্ন। কিন্তু অর্থের অভাবে সেই স্বপ্ন বহুদিন ধরেই ধুলোর নিচে চাপা পড়ে ছিলো। হঠাৎ দু’দিন আগে বরিশাল জিলা স্কুলের ফরিদ ভাইয়ের সাথে দেখা হয় বরিশাল জেলা সমাজসেবা কার্যলয়ের সহকারী পরিচালক সাজ্জাদ পারভেজ এর সাথে।
পরে তারা দু’জনের অসহায় মাসুদের কষ্টের কথা নিয়ে আলোচনা করে একটি আয়ের পথ বের করেন। শুধু তাই নয় নগরীর বেলস পার্কের ল্যাম্পপোস্টের আলোর নিচে ফরিদ ভাইয়ের সহায়তা’য় একটি টেবিল, বসার জন্য একটি টুল, ১০০টি লাল গোলাপ কিনে দেন বিক্রির জন্য। অসহায় মাসুদ ফুল বিক্রির পথ খুঁজে পেয়ে খুশিতে মাতোয়া হয়ে উঠেন। অসহায় মাসুদ বলেন, ফুলের দোকানে আগে কাজের চাপ থাকতেন অনেক।
তখন কাজ করতাম দোকানে। বর্তমান যুগে ফুলের দোকানে কাজে চাপ নেই বললেই চলে। তাই ৩/৪ বছর আগে ফুলের দোকানে মালিক কাজ থেকে বাদ দেওয়ায় আমি কোন কাজ না পেয়ে পাগলের মত জীবন যাপন করতাম। মানুষের কাছে শুনেছি সমাজসেবার সাজ্জাদ স্যার আমার মত অসহায়দের সহযোগীতা করে।
পরে আমি তার কাছে গিয়ে আমার অভাবের জীবনের কথা বলি। পরে তিনি তার পরিচিত লোকের মাধ্যমে আমাকে নতুন করে বাচার ব্যবস্থা করে দেন। এখন আর মানুষ আমাকে পাগল বলতে পারবেনা। কারন আমি এখন ফুল বিক্রি করি। তার দিয়ে ৩/৪ শ’ টাকা প্রতিদিন আয় হয়। আর সেই আয়ের টাকা দিয়ে প্রতিবন্ধী স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েদের মুখে ডাল-ভাত তুলে দিতে পারছি।
বরিশাল জেলা সমাজসেবার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সমাজসেবার সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, আমি অসহায় মানুষ দেখলে, আমার মনটা কেমন যেন করে। তাদের কষ্ঠ দেখে চোখের পানি রাখতে পারি না।
তার পরে আমার সাধ্যমত তাদের সহযোগীতার চেষ্টা করি। শুধু তাই নয় আমার বন্ধু মহলের কাছেও অসহায় মানুষের জন্য যাই। তাদের মাধ্যমে যেন একটি অসহায় ব্যাক্তি এবং তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একটু ভালো থাকতে পারেন।









































