ঝালকাঠির দুটি খেয়াঘাট ইজারা নিয়ে রহস্য, দিশেহারা মাঝি শ্রমিকরা
জুন ১১ ২০২৪, ১৯:০৪
ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ ঝালকাঠি শহরের সাথে নলছিটি উপজেলায় যোগাযোগের সহজমাধ্যম সুগন্ধা নদী পারাপারে ঐতিহ্যবাহী পুরাতন কলেজ খেয়াঘাট (রোনালছেরোড খেয়াঘাট) ও পৌরসভা খেয়াঘাট। এদুটি ঘাট দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে। প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হলেও ইজারা না দেয়ায় হতাশায় রয়েছেন মাঝিমাল্লা সদস্যরা। মাঝিমাল্লা সমিতি (পাটনি) সদস্যদের বাইরে কাউকে ইজারা না দিতে উচ্চ আদালতেরও নির্দেশনা রয়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তহীনতায় দিশেহারা অবস্থায় নৌকা মাঝি শ্রমিকরা। এবিষয়ে সংগঠনের কার্যালয়ে বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলন করের সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
ঝালকাঠি সদর উপজেলা নৌকা মাঝি শ্রমিক ইউনিয়ন সাধারন সম্পাদক মোঃ হেমায়েত হোসেন সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, আমরা দীর্ঘদিন যাবৎ সুগন্ধা নদীর উপর দিয়ে দুটি খেয়ায় লোক পারাপার করে জীবিকা নির্বাহ করি। ১৯৯৭ সালে ঝালকাঠি জেলা জজ আদালতের একটি আদেশের প্রেক্ষিতে পেশাদার পাটনী (মাঝিমাল্লা) সমবায় সমিতি প্রতিবছরের ইজারার দরপত্রের ১০% বৃদ্ধি করে পৌরসভার মেয়র মহোদয় এর কাছ থেকে যুগ যুগ মাঝিদের ইজারা দিয়ে আসছেন।
এরদ্বারা আমরা জীবিকা নির্বাহ করে আমাদের ছেলে সন্তান নিয়ে ডাল, ভাত খেয়ে বেঁচে আছি। এ বছর ভুমি প্রশাসন ভূমি প্রশাসন ম্যানুয়েল দ্বিতীয় খন্ডে ফেরিঘাট (খেয়াঘাট) মাঝিদের পক্ষে ইজারা নিতিমালা থাকার সত্বেও বাংলা ১৪৩১ সনের ইজারা ওপেন টেন্ডার দেয়ার আগে জেলা প্রশাসক’র সাথে আলোচনায় বসি। তাকে আইন অনুযায়ী আমাদের পক্ষে ইজারা দেয়ার জন্য জোর সুপারিশ করেও কোন লাভ হয়নি।
ঝালকাঠির এমপি আমির হোসেন আমু দেশের বাহিরে থাকার কারনে উপায় না পেয়ে ওপেন টেন্ডার বিষয়ে হাইকোর্ট ডিভিশনে একটি রীট পিটিশন (নং ৩৯৮৮/২০২৪) দায়ের করি। রীট পিটিশন আদেশে স্থগিতাদেশ দেয়ার পরেও ঝালকাঠি পৌরসভা চলতি বছরের ২৮এপ্রিল ওপেন টেন্ডার দেয়। তখন অনুপায় হয়ে সাংবাদিকদের মাধ্যমে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন নির্বাচিত হন।
কিন্তু হাইকোর্টের আদেশটি পাটনিদের পক্ষে হওয়ায় ঝালকাঠি পৌরসভা পাটনি সম্প্রদায়ের নাম দিয়ে জ্যেষ্ঠ নেতা আমির হোসেন আমু এমপি’র কাছে সুপারিশ চায়। উল্লেখ্য, ঝালকাঠি থানাধীন সাতটি খেয়াঘাটের সবাই মাঝি। ঝালকাঠি সদর উপজেলায় পেশাদার পাটনিদের দুটি শ্রমিক ইউনিয়ন আছে। এরবাইরে নৌকা মাঝি শ্রমিকদের আর কোন সংগঠন বা ইউনিট নাই।
ব্যক্তি নাম ব্যবহার করে তথাকথিত পাটনি সেজে ঐতিহ্যবাহী খেয়াঘাট দুটি প্রকৃত মাঝিদের হাতছাড়া করার পায়তারা চলছে। সরকারী আইনের সকল নিয়মনীতি মেনেই সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। পুনরায় টেন্ডার আহ্বান করলে আমরা পোস্টাল অর্ডার জমা দিতে গেলে সেখানে সম্ভব না হওয়ায় পোস্ট অফিসের মাধ্যমে দাখিল করি। প্রকৃত নৌকা মাঝি শ্রমিক ইউনিয়ন হিসেবে এঘাট দুটি ইজারা নেয়ার মাধ্যমে ঘাটের শান্তিপুর্ণ পরিবেশ ও ঐতিহ্যরক্ষার দাবী জানান তারা।









































