নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: ব্যাগে করে বাংলা দা মরিচের গুঁড়ো নিয়ে নারীদের ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার আহবান ও মুসলমানরা বুঝেশুনে ভোট দেবেন- এমন উস্কানিমূলক বক্তব্যে আচরণবিধি লঙ্ঘনে বরগুনা-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম সরোয়ার টুকু, চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির ও দুলাল ফরাজির বিরুদ্ধে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। বরগুনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বুধবার বিকালে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

জানা যায়, বরগুনা-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম সরোয়ার টুকুর আয়োজিত ২৩ ডিসেম্বর তালতলী উপজেলার সোনাকাটা ইউনিয়নের লাউপাড়া বাজারসংলগ্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে জনসভা করে নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গ করেছেন।ওই পথসভায় সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন প্রতিটি কেন্দ্রে ২০ থেকে ৩০ জন মহিলারা ব্যাগে দা ও মরিচের গুঁড়ো নিয়ে আসতে হবে। কেউ ভোট কাটতে আসলে দা দিয়ে কবজি কেটে ফেলা হবে।

এছাড়া তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজী বলেন, আমরা মুসলমান কি আর বলব, আপনারা বুঝেশুনে ভোট দেবেন। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম সরোয়ার টুকু সভামঞ্চে উপস্থিত থাকলেও এ বক্তব্যের পরে তাদের নিবৃত্ত করেননি। অভিযোগে বলা হয়েছে, স্বতন্ত্র প্রার্থী তাদের দিয়ে এরূপ বক্তব্য দিতে সহায়তা করেছেন। এমন বক্তব্যে ভোটার ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর নেতাকর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমাদের নৌকার প্রার্থী হিন্দু। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে বক্তব্য দিলে সংখ্যালঘুরা ভোটকেন্দ্রে যেতে ভয় পাবে। এ কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হতে পারে। স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার সমর্থকরা নির্বাচন আচরণবিধি চরমভাবে লঙ্ঘন করেছেন।

এসব বিষয় ২৫ ডিসেম্বর ঈগল প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তার কর্মীদের বিরুদ্ধে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির কাছে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী শম্ভুর পক্ষে দুটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। মঙ্গলবার বিকালে বরগুনা-১ আসনের নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান বরগুনার যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আহমদ সাঈদ তাদের কারণ দর্শানোর এ নোটিশ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আবদুল হাই আল হাদী বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ তিনজনকে কারণ দর্শানোর জন্য নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির একটি চিঠি আমরা পেয়েছি। এ বিষয়ে নির্বাচনি বিধি অনুযায়ী পরবর্তী প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হবে। স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম সরোয়ার টুকু বলেন, আমরা শোকজের জবাব দেব। তবে আমি কোনো আচরণবিধি লঙ্ঘন করিনি।