১৮ মাসের নির্মাণ কাজ সাড়ে তিন বছরেও শেষ হয়নি
অক্টোবর ১০ ২০২৩, ১৮:২৯
ঝালকাঠি প্রতিনিধি ॥ কথা ছিল ১৮ মাসে কাজ শেষ হবে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে সাড়ে তিন বছর কেটে গেলেও ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের ২৫০ শয্যার ৯ তলা ভবন নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। বর্তমানে একশ শয্যার হাসপাতালের সেবার মান নিয়েও রয়েছে রোগীদের অসন্তোষ।
ফলে জেলার প্রায় ৮ লাখ মানুষের ভরসাস্থল সরকারি এই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিনই বাড়ছে জন-ভোগান্তি। অলসতা কিংবা দায়িত্বহীনতার বিষয় বোঝাতে বলা হয়ে থাকে ১৮ মাসে বছর।
আর সেই চিত্রই যেন ফুটে উঠেছে ঝালকাঠির সদর হাসপাতালের ২৫০ শয্যার নতুন ভবন নির্মাণ কাজে। ১০০ শয্যার ঝালকাঠি সদর হাসপাতালটিকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করে ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে ৯ তলা ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কার্যাদেশ অনুযায়ী ২০২০ সালের মে মাসে ভবনের কাজ শেষ করে কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তরের কথা ছিল কোহিনুর এন্টারপ্রাইজ ও জিএম কনস্ট্রাকশন নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের।
কিন্তু ১৮ মাসের কাজ সাড়ে তিন বছর পেরিয়ে গেলেও হস্তান্তর করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এখনো অনেক কাজই বাকি রয়েছে। এদিকে ঝালকাঠি জেলার ৪টি উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থাকলে ৮ লাখ মানুষের প্রধান ভরসা জেলা সদরের এই হাসপাতাল। আর সদর উপজেলার প্রায় তিন লাখ মানুষকে স্বাস্থ্যগত ছোট বড় সব সমস্যায় প্রথমে এখানেই আসতে হয়।
কিন্তু ১০০ শয্যার জনবল দিয়ে এত মানুষের সেবা দেয়া সদর হাসপাতালের পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও চতুর্থ শ্রেণির স্টাফের সংকট রয়েছে। রোগ নির্ণয়ে সব পরীক্ষাও করা যাচ্ছে না ১০০ শয্যার এ হাসপাতালটিতে। ফলে প্রতিদিনই চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় সদর হাসপাতালের চিকিৎসা নিতে আসা বহির্বিভাগ ও আবাসিক রোগী এবং তাদের স্বজনকে। ২৫০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণে ধীর গতি আর এ নিয়ে চিকিৎসা ভোগান্তিতে রোগী ও স্বজনদের ক্ষোভের শেষ নেই।
ঝালকাঠি হাসপাতালে আসা কোহিনুর বেগম নামে এক রোগী বলেন, ‘জ্বর-কাশি ছাড়া কোনো চিকিৎসাই এখানে হয় না। ফলে চিকিৎসা নিতে আমদের বরিশালে যেতে হয়, যেখানে যাতায়াতে ভোগান্তি আর প্রচুর অর্থ খরচ হয়।’ বাবুল মিনা নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, ‘সাড়ে তিন বছর ধরে দেখছি নির্মাণ কাজ চলছে। এমন ধীরগতির কাজ জীবনেও দেখিনি। হাসপাতালটি ২৫০ শয্যায় উন্নীত হলে জেলাবাসীর চিকিৎসা সেবায় আর ভোগান্তি থাকবে না।
কিন্তু সেই স্বপ্ন কবে বাস্তবায়িত হবে এটাই এখন প্রশ্ন।’ সদর হাসপাতালের ২৫০ শয্যার নতুন ভবন নির্মাণে অনিয়মের ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত শ্রমিক-কর্মচারীরা ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি। তবে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার শামীম আহম্মেদ জানান, দুই এক মাসের মধ্যে কাজ শেষ হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
রোগীদের ভোগান্তির কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘২৫০ শয্যার হাসপাতাল ও জনবল নিয়োগ হলেই সব সমস্যার সমাধান ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে হবে।’ প্রতিদিন ৫ শতাধিক রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেয়। আর ভর্তি থাকছে একশ রোগী। রোগী ও স্বজনসহ প্রতিদিন জেলা সদরের এই হাসপাতালে সহস্রাধিক মানুষের সমাগম ঘটে।









































