মানবতাবিরোধী অপরাধ: বরগুনার ৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিলের নির্দেশ
আগস্ট ০২ ২০২৩, ১৩:২৬
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বরগুনার আব্দুল মান্নান হাওলাদারসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফর্মাল চার্জ) দাখিলের জন্যে রয়েছে।
আর এ বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ১২ সেপ্টেম্বর পরবর্তী দিন ঠিক করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আদেশের বিষয়টি প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন নিশ্চিত করেন। বুধবার (১৩ জুন) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম। আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন সৈয়দ হায়দার আলী ও প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন।
রেজিয়া সুলতানা চমন আরো জানান, মামলায় ছয় আসামির মধ্যে তিনজন গ্রেফতার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। তারা হলেন- ফজলুল হক খান (৭০), মো. ইউসুফ আলী (৭৫) ও আব্দুর রাজ্জাক (৬৯)।
বাকি তিনজন পলাতক। তারা হলেন-আবদুল মান্নান হাওলাদার, সুলতান আহমদ ও হযরত আলী। মামলায় ছয় আসামির মধ্যে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়ে হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ ও লুণ্ঠনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে এ ছয়জনের বিরুদ্ধে।
এর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষের অভিযোগ আমলে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এরপর আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের জন্য ফর্মাল চার্জ দাখিলের বিষয়ে তাগিদ দিয়ে এর ওপর শুনানির জন্য পরবর্তী দিন ঠিক করেন আদালত।
মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে বরগুনার আমতলী এলাকায় হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, আটক ও ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর আসামিদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনাল ওই ছয়জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। এরপর চলতি বছরের গত ৮ মে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তিন আসামিকে বরগুনার পাথরঘাটা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
উপজেলার চরদুয়ানী এলাকার নিজ নিজ বাড়ি থেকে তাদের আটক করা হয়। স্থানীয় তিন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার ঘটনা হওয়া মামলায় তারা গ্রেফতার হলেন।
গ্রেফতাররা হলেন- চরদুয়ানী ইউনিয়নের ছহেরাবাদ এলাকার ফজলুল হক খান (৭০), মো. ইউসুফ আলী (৭৫) ও পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের ছোট টেংড়া এলাকার আব্দুর রাজ্জাক (৬৯)।
পাথরঘাটার তিন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করা মামলাটির বাদী মিজানুর রহমান। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে তার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান ও প্রতিবেশী বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্ণধর মিস্ত্রি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মনহর মিস্ত্রি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিনি এ মামলা করেন।
ওই মামলায় আবদুল মান্নান হাওলাদারকে প্রধান আসামি করা হয়। এ মামলার অপর আসামিরা হলেন- সুলতান আহমদ, ফজলুল হক খান, ইউসুফ আলী, আবদুর রাজ্জাক ও হযরত আলী। তারা সবাই মুক্তিযুদ্ধের সময় ওই তিন মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ১৯৭১ সালের ২৯ জুন মুক্তিযোদ্ধা চিত্তরঞ্জন অধিকারীকে রাজাকার জালালের বাড়ির সামনে ওয়াপদার ওপরে বসে হত্যার উদ্দেশ্যে গলায় ছুরি চালায়।
পরদিন ৩০ জুন চিত্তরঞ্জন অধিকারীকে হত্যা করতে না পেরে তার আপন চাচা সুরেন্দ্র নাথ অধিকারীকে হত্যা করে মরদেহ গোপন করে ফেলে।
১৮ আগস্ট বাদীর বাবা মতিয়ার রহমান ও ১নং সাক্ষী মনমথ রঞ্জন মিস্ত্রীর বাবা মনোহর মিস্ত্রী চাচা কর্ণধর মিস্ত্রীকে দিনের বেলা গুলি করে হত্যা করে। পরে মনোহরের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে ব্যপক ক্ষতি করা হয়।









































