কোরবানি সামনে রেখে কামারশালা সরগরম

জুন ২১ ২০২৩, ১৮:০৭

বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে বরগুনার বেতাগী উপজেলার কামারপাড়ার লোকেরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। কোরবানির জন্য প্রয়োজনীয় দা, বটি ছোরা চাকুর চাহিদাকে সামনে রেখে নড়ে চড়ে বসেছেন কামাররা। সারা বছর অলস সময় পার করলেও কোরবানির মৌসুমে বেশ ব্যস্ততা বেড়ে যায় কামার পাড়ায়।

সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে টুং-টাং শব্দ। কোরবানির উপযোগী দা-ছুরিসহ গৃহস্থালি নানা সরঞ্জাম বানাতে এবং শান দিতে কামার পাড়াগুলোতে ভিড় বাড়ছে সাধারণ মানুষের। কিন্তু ব্যবসায়ীরা বলছেন গত বছরের তুলনায় এবার লোহা ও ইস্পাতের মূল্য বেশি হওয়ায় এবার লাভের সম্ভাবনা কম।

গতকাল বুধবার (২১ জুন) পৌরশহরের কয়েকটি কামারশালা ঘুরে দেখা যায়, কেউ আসছেন কোরবানী করার অন্যতম অনুসঙ্গ ধারালো ডাসা, ছুরি, বটিসহ বিভিন্ন অস্ত্র তৈরি করতে। আবার কেউবা আসছেন এ সব সরঞ্জাম শান দিতে। কামারশালার ভিতরে একজন ভারি হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন দগদগে লাল লোহার খন্ড। অন্যজন আবার কয়লার আগুনে বাতাস দিচ্ছেন। এক রকম পাল্লা দিয়ে কাজে নেমেছেন তারা। বছরের অন্য সময়ে দিনে ২-৩ শ টাকা আয় হলেও এ সময়ে প্রতিদিন আয় হচ্ছে কয়েক হাজার টাকা।

বেতাগী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সুত্রে জানা গেছে, এবার ঈদুল আজহা উপলক্ষে বেতাগী উপজেলায় ৭ হাজার ৮৫টি পশুর চাহিদার বিপরীতে কোরবানিরযোগ্য পশু রয়েছে ৭ হাজার ২৮৬ টি।

বেতাগী পৌর শহরের কালীবাড়ি এলাকার কামার বিপুল কর্মকার জানান, গত বছরের চেয়ে এবার নতুন সরঞ্জাম তৈরির সংখ্যা বেশি। ছোট ছুরি ২৫০ থেকে ৩শ, বড় ছুরি ৫শ থেকে ১ হাজার, মাংস কাটার ডাসা ২ হাজার টাকা দরে বানানো হচ্ছে।

চামড়া ছিলা ও মাংস কাটার জন্য ছোট চাকু ৩০ টাকা থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত, বটি ১৬০ টাকা থেকে ৫শ টাকা, বড় চাকু রয়েছে ৪ থেকে ৫শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছি। এছাড়াও পুরানো বটি, ছোট ছুরি ৬০ টাকা, ডাসা ও ছুরি ১৫০ টাকা করে ধার দেয়ার খরচ নেয়া হচ্ছে। নতুন অর্ডার নেওয়া বন্ধ করা হয়েছে। যে পরিমাণ অর্ডার নেওয়া হয়েছে তাতে ঈদের আগের দিন বিকেল পর্যন্ত কাজ করা লাগবে।

আরেক কামার ব্যবসায়ী আমল কর্মকার জানান, তাদের তৈরি যন্ত্রপাতি খুচরা ব্যবসায়ীরা এসে পাইকারি দরে কিনে নিয়ে যান। পরে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ও গ্রামে ফেরি করে বিক্রি করেন তারা। এছাড়া কিছু মৌসুমি ব্যবসায়ী রয়েছেন যারা শুধু ঈদের সময় এ ব্যবসা করে থাকেন। লোহা ও ইস্পাতের মূল্য বৃদ্ধিতে অস্ত্র বানাতে খরচ বেশি হচ্ছে। এছাড়াও কয়লার দামও বেশি।

কামারশালায় মাংস কাটার ডাসা ও ছুরি বানাতে আসা আরিফুর রহমান জানান, এ বছর গরু জবাইয়ের সরঞ্জামের মূল্য সহনীয় পর্যায় নেই। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে দা-ছুরি। গত বছর যে ডাসা বানানো খরচ হতো ১ হাজার টাঁকা সেটা বানাতে এখন খরচ হচ্ছে ২ হাজার টাকা।

বেতাগী পৌরশহরের ব্যবসায়ী ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জিয়াউর রহমান বলেন, কামাররা সারা বছর এই সময়টার জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। ঈদের আগে ১৫-২০ দিন ধরে দা-ছুরি যা বিক্রি হয়, সারা বছরেও তা হয় না। মূলত এই সময়টাই তাঁদের মৌসুম।

সংবাদটি শেয়ার করুন....

আমাদের ফেসবুক পাতা

আজকের আবহাওয়া

পুরাতন সংবাদ খুঁজুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০

এক্সক্লুসিভ আরও