মোস্তফা শিক্ষক থেকে একজন সফল কৃষক!
নভেম্বর ০৩ ২০২৫, ১৪:০৬
আমার বরিশাল ডেস্ক ॥ নিজের পেশার প্রতি আন্তরিক ভালোবাসা আর পরিশ্রমের মধ্য দিয়েই জীবনে সাফল্য অর্জন সম্ভব, এর এক অনন্য উদাহরণ দিয়েছেন বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের গাজিপুর গ্রামের বাসিন্দা মোঃ মোস্তফা কামাল। পেশায় তিনি একজন কলেজের শিক্ষক, (বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক)। তবে শিক্ষাকতার পাশাপাশি কৃষিকাজেও দেখিয়েছেন দারুণ সাফল্য।
শিক্ষার পাশাপাশি অবসর সময়কে কাজে লাগিয়ে মস্তফা প্রায় চার বছর আগে শুরু করেন পেঁপে চাষ। শুরুতে অল্প জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু জাতের পেঁপে লাগান তিনি। পরিশ্রম ও সঠিক পরিচর্যায় মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই গাছগুলো ফল দিতে শুরু করে। প্রথম মৌসুমেই ভালো ফলন ও বাজারমূল্য পেয়ে উৎসাহিত হন তিনি।
বর্তমানে মোস্তফার এক একর জমিতে পেঁপে চাষ চলছে। পাশাপাশি একটি ঘেরে মাছ চাষ করেও সফলতার দেখা পেয়েছেন। তার দেখাদেখি অনেকেই পেঁপে চাষে উদ্বুদ্ধ হয়ে এলাকায় করছেন বাগান।
মোস্তফার পেঁপে বাগান ঘুরে দেখা গেছে, এখন তার বাগানে আছে প্রায় ৫ শতাধিক পেঁপে গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছের নিচ থেকে উপর পর্যন্ত ঝুলছে ছোট বড় অসংখ্য পেঁপে। পেঁপে চাষের পাশাপাশি বাগানের মাঝেই করেছেন একটি মাছের ঘের। সেখানে পাঙ্গাশ, রুই, কাতলা ছেড়েছেন বিভিন্ন প্রজাতির মাছ।
মোস্তফা বলেন, ‘শিক্ষকতা আমার পেশা, কিন্তু কৃষিকাজ আমার ভালোবাসা। অবসর সময়টাকে কাজে লাগিয়ে এখন বাড়তি আয় হচ্ছে, পরিবারেও আর্থিক স্বচ্ছলতা এসেছে। বর্তমানে সকল খরচ বাদ দিয়ে বছরে ১০ লাখ টাকা ইনকাম হচ্ছে। স্থানীয় বাজার ছাড়াও বরিশাল শহর এবং ঢাকায় সরবরাহ করছেন এই এলাকার পেঁপে। নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি বেকারত্ব দূর করেছেন বলে জানান এই উদ্যোক্তা।
তিনি বলেন, বাগানেই এখন প্রায় ১০ জন লোক নিয়োজিত রয়েছে। তারা সিফট অনুযায়ী দিনে রাতে কাজ করছেন। তাদের প্রত্যেককে ৮-১২ হাজার টাকা পারিশ্রমিক দেয়া হয়।
মোস্তফার লক্ষ্য ভবিষ্যতে পেঁপের পাশাপাশি মাল্টা ও ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করা। তিনি বিশ্বাস করেন, ‘যদি কেউ নিষ্ঠা আর পরিশ্রম নিয়ে কাজ করে, তবে কৃষিই হতে পারে উন্নতির বড় মাধ্যম।’
বরিশাল কৃষি অধিদপ্তরের টেশনিকাল পার্টিসিপেন্ট এস.এম.নাহিদ বিন রফিক জাগো নিউজকে বলেন, ‘মোস্তফার মতো শিক্ষিত মানুষ কৃষিতে যুক্ত হওয়ায় তরুণ প্রজন্ম অনুপ্রাণিত হচ্ছে। তাঁর পেঁপে ক্ষেত এখন অনেকের জন্য শেখার জায়গা হয়ে উঠেছে। তাছাড়া আমরা নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি। পেঁপে চাষ করে তিনি অনেক ভালো ফলন পাচ্ছেন। অন্য কৃষকরাও উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
জেলায় এ বছরে পেঁপে আবাদ হয়েছে ১ শত ৪ হেক্টর জমিতে, প্রতি হেক্টর জমিতে ফলন হয়েছে ২০টন পেঁপে।









































