অবৈধ ব্যাটারিচালিত রিকশার দখলে নগরী ॥ সংখ্যা ২০ হাজার !

অক্টোবর ১৪ ২০২৫, ১৮:৪০

আরিফ হোসেন ॥ অনুমোদনহীন ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক বেড়ে যাওয়ায় শহরে যানজট এখন নিত্যদিনের সঙ্গী। প্রথমদিকে এই যানগুলো মানুষের যাতায়াত সহজ করেছে এবং অনেকের কর্মসংস্থান তৈরি করেছে। কিন্তু এখন এগুলো শহরের শৃঙ্খলার জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে যানজট ও বিদ্যুতের উপর চাপ বেড়েছে।

নগরের ব্যস্ত সড়কে দাবড়ে বেড়াচ্ছে কাগজে কলমে নিষিদ্ধ এই তিন চাকার বাহন ব্যাটারিচালিত রিকশা। শুধু অলিগলি নয়, তারা মহাসড়ক থেকে শুরু করে প্রধান সড়কেও তাদের দখলে; বাদ থাকছে না ভিআইপি সড়কও।

দ্রুতগ্রামী এ বাহনটি হুটহাট ডানে-বাঁয়ে মোড় নেওয়ার ফলে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকা পুলিশ সদস্যরা কখনো সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করলেই তাঁদের ওপর চড়াও হচ্ছেন চালকরা।

বরিশাল নগরীতে বৈধ প্যাডেল রিকশার সংখ্যা ১২ হাজার থেকে দেড় শ তে নেমে এসেছে। পাশাপাশি অবৈধ ইঞ্জিন রিকশার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ হাজারে। এ বাবদ সিটি কর্পোরেশন বা সরকার এক পয়সাও রাজস্ব পায় না। কিন্তু ইঞ্জিন রিকশা রক্ষার জন্য ২০০ চাঁদাবাজ প্রতিদিন এক লক্ষ ১০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করে থাকে।

বরিশাল নগরীর ৭ হাজার ৬১০টি হলুদ অটো বাবদ কোন রাজস্ব আদায় হচ্ছে না, অথচ গ্যারেজ প্রতি মাস্তানি চাঁদা দিয়ে এগুলো প্রকাশ্যে চলছে।

মঙ্গলবার প্যাডেল রিকশাচালকরা ইঞ্জিন রিকশা বন্ধের দাবিতে কর্মসূচী পালনকালে এমন অনেক তথ্য বেরিয়ে এসেছে। প্যাডেল রিকশা রাজস্বমুক্ত একটি বৈধ যান, কিন্তু এগুলো নগরীতে চলতে পারছে না।

অথচ হাইকোর্ট থেকে অবৈধ ঘোষনাকৃত ইঞ্জিন রিকশা চলছে দাপটের সাথে। কারণ এদের চাঁদা প্রায় সব পকেটে পৌঁছে যাচ্ছে। ইঞ্জিন রিকশার চালকরা চরম অদক্ষ। এদের অদক্ষ চালনায় প্রতিদিন মেডিকেলের ইমার্জেন্সি, সার্জারি ও অর্থপেডিক ওয়ার্ড ঘুরতে হচ্ছে যাত্রিদের।

অনেক পরিবারের কর্তা পঙ্গু হয়ে ঘরে বসে আছে। সেইসব পরিবারের অসহায় শিশু-কিশোররা জীবিকার তাগিদে রাস্তায় নামতে বাধ্য হচ্ছে। বিআরটিএ থেকে জানানো হয়েছে-এগুলো অবৈধ যান হওয়ায় এর বিরুদ্ধে অভিযানও চালানো যাচ্ছে না।

এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণীর প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় এরা ফুলে ফেঁপে উঠেছে। তবে সংস্থাটি সদররোড এবং আমতলা থেকে জিলাস্কুল পর্যন্ত ইঞ্জিন রিকশার চলাচল সীমিত করতে পেরেছে বলে দাবি করেছে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ থেকে জানানো হয়েছে ট্রাফিক পুলিশ প্রতিদিন প্রায় একলাখ টাকা জরিমানা আদায় করছে ইঞ্জিন রিকশা নিয়ন্ত্রনে কিন্তু কাজ হচ্ছে না। তবে মেট্রো এলাকায় হলুদ অটো ও ইঞ্জিন রিকশা তৈরি বন্ধ করা থামছেনা।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে বরিশাল সদর উপজেলার পশ্চিম কর্নকাঠি ও কর্নকাঠি এলাকার নিজুম স্থানে অথবা বন্ধ ইট বাটার ভিতরে তৈরি হচ্ছে এই অবৈধ হলুদ আটোরিক্সা। আর সরকার নিষিদ্ধ অবৈধ হলুদ রিক্সার তৈরি নেতৃত্বে রয়েছে আটো ইমরান নামে এক যুবক। তার কাছে জানতে চাইলে ইমরান বলে আমি কোন অবৈধ আটোরিক্স তৈরি করছি না। কোনটা অবৈধ বলেন আপনি! যেটা রাস্তায় চলে সেটাকে। অবৈধ হলে কি ভাবে রাস্তায় চলে বলেন। তিনি আরো বলেন আমি পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই গাড়ী তৈরি করতে আছি।

এ অবস্থায় নগরীকে ঘাতক অবৈধ ইঞ্জিন রিকশামুক্ত করতে বিসিসি, পুলিশ, প্রশাসন ও বিআরটিএ এর সমন্বিত যৌথ অভিযানের কোন বিকল্প মিলছে না। ধারনা করা হচ্ছে এমনটা করা হলে নব্য চাঁদাবাজদের যেমন দমন করা যেতো ঠিক তেমনি সাশ্রয় করা যেতো বিদ্যুৎ।

নগরীতে প্রতি রিকশা বাবদ ৫০ টাকা করে দৈনিক চাঁদা আদায় করে চলছে অন্তত ২০০ চাঁদাবাজ। এরা নাকি পুলিশকেও ম্যানেজ করে থাকে। এতে করে মাসে প্রায় ৩০ লাখ টাকা চাঁদা আদায় হয়ে থাকে। বছরে যা তিন কোটি টাকারও বেশি।

বরিশাল
১৪-১০-২৫

 

সংবাদটি শেয়ার করুন....

আমাদের ফেসবুক পাতা

আজকের আবহাওয়া

পুরাতন সংবাদ খুঁজুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০

এক্সক্লুসিভ আরও