ডেস্ক প্রতিবেদক: আরেকটা স্বাধীনতার জন্য আমাদের আন্দোলন সংগ্রাম করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম।
তিনি বলেন, আমরা আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির শাসন দেখেছি। কিন্তু মানুষের শান্তি দেখিনি। আজকে দেশের স্বাধীনতার বয়স ৫১ বছর। এখনো আমাকে যদি স্বাধীনতার জন্য লড়তে হয়, মানবিক মর্যাদাকে বাস্তবায়নের জন্য লড়তে হয়, মানুষের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত করতে লড়তে হয়, তাহলে এর চেয়ে লজ্জার আর কোনো বিষয় থাকতে পারে না।
মুসলমানদের দেশে আজকে নাস্তিকরা ইসলামকে নিয়ে কটূক্তি করার সাহস পায়। না এখনো আমরা স্বাধীনতা অর্জন করতে পারিনি। আরেকটা স্বাধীনতার জন্য আমাদের আন্দোলন সংগ্রাম করতে হবে।
শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে খুলনা মহানগরীর নিউমার্কেট বায়তুন নুর চত্বরে ১৫ দফা দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম এসব কথা বলেন।
দলের খুলনা জেলা ও মহানগর কমিটি আয়োজিত এই সমাবেশ বিকেল ৩টায় শুরু হয়। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন দলের খুলনা মহানগর সভাপতি মুফতি আমানুল্লাহ।
সরকার প্রধানের সমালোচনা করে ফয়জুল করীম বলেন, দুর্ভিক্ষের ইঙ্গিত দিয়েছেন, কিন্তু কোটি কোটি টাকা খরচ করে বিদেশ সফর করেন কীভাবে। যে দেশ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে চলে গেছে, সেই দেশের ৮৫ হাজার কোটি টাকা সুইসব্যাংকে থাকে কী করে? ১৪ লাখ কোটি টাকা পাচার হয় কীভাবে? বালিশ, পর্দা তামা ও নাটবল্টুর দাম এতো টাকা হয় কী করে? দেশ দুর্নীতির দ্বারপ্রান্তে চলে গেছে। আমরা সংযমী হবো, কিন্তু এই চুরি ও ডাকাতি রোধ করবে কে?
তিনি সরকারের মন্ত্রীদের উক্তি টেনে বলেন, দেশ দুর্নীতিবাজদের কাছে চলে গেছে। প্রতি বছর যে পরিমাণ দুর্নীতি হয়, তা দিয়ে দুটি পদ্মা সেতু হয়। আজকে এতো লুটপাট কে করছে, ডাকাতি কারা করছে, যারা এই দেশের শাসক তারা এই চুরি ও ডাকাতির মধ্যে মত্ত হয়ে আছে। কৃষক, শ্রমিকদের কোনো দোষ নেই। আমরা শুনেছি তারেক জিয়ার খাম্বা কেস, হাওয়া ভবন, চুরি, ডাকাতি। শাসকদের চুরি, ডাকাতি গুন্ডামি আমরা দেখেছি, কিন্তু মানুষের শান্তি আমরা দেখিনি। আমরা শুধু নেতার পরিবর্তন চাই না, নীতির পরিবর্তন চাই।
ফয়জুল করীম বলেন, আজকে শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষাক্ষেত্রে ইসলাম শিক্ষাকে দূর করার চক্রান্ত করতেছে। পড়াবেন ইসলাম শিক্ষা-নৈতিক শিক্ষা, কিন্তু পরীক্ষা নেবেন না। এ রকম পড়া কোনো পাগলেও পড়ে না। শিক্ষামন্ত্রী গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আজকে অটো পাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের সমস্ত ছাত্রদেরকে মূর্খ বানানোর চক্রান্ত করছে। এই শিক্ষামন্ত্রীর পদত্যাগ চাই, ইসলামী শিক্ষার বাস্তবায়ন চাই।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, রাজনীতি বিষাক্ত হয়েছে। একমাত্র ইসলামী আন্দোলন ছাড়া আর কেউ পরমত সহিষ্ণু রাজনীতি করে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের মহাসচিব মাওলানা অধ্যক্ষ ইউনুস আহমাদ বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে কালো মেঘের ছায়া নেমেছে। দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারে এ দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মাদকের কারণে সামাজিক অবক্ষয় হচ্ছে। নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচনে যাব কি যাব না তখন ভেবে দেখব। নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিলে ৩০০ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ অংশ নেবে। ইসলামী আন্দোলন কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়।
সমাবেশ পরিচালনা করেন খুলনা মহানগর ইসলামী আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসির উদ্দীন ও জেলা সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ গালিব। সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলনের খুলনা জেলা সভাপতি আব্দুল্লাহ ইমরান, নগর যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা ইমরান হোসেন, কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. কেএম আল আমিন আহসান, সৌদি আরব শাখার যুগ্ম সম্পাদক আবু আব্দুল্লাহ মাহামুদী, গোপালগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তসলিম হোসেন শিকদার, পিরোজপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক মনিরুল হাসান, দলের নেতা মাওলানা সোয়াইব হোসেন, মুফতি রবিউল ইসলাম রাফি, শ্রমিক আন্দোলনের নেতা মাহাবুবুল আলম, গাজী মুরাদ হোসেন, জাহিদুল ইসলাম, মো. আবুল কাশেম, মো. মাইনুদ্দিন, ছাত্রনেতা এনামুল হাসান সাইদ, মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ফরহাদ।