শীতে বাড়তি সতর্কতা
ডিসেম্বর ২৭ ২০২২, ১১:০১
শীত পড়েছে। ঢাকায় সেটা বেশি অনুভূত না হলেও মফস্বলে কিন্তু শীত প্রায় জাঁকিয়েই বসেছে। আর আবহাওয়া এবং জলবায়ু বদলেছে। যার সঙ্গে মানাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে শিশু ও বৃদ্ধদের। সঙ্গে রয়েছে নানা অসুখ-বিসুখ। সর্দি, হাঁচি, কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট।
শীতে বাতাস ভারী থাকে। তাই ভাইরাস নিচে নেমে আসে আর আক্রমণও করে বেশি। আবার শিশু ও বৃদ্ধদের শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম থাকায় সহজেই তাদের কাবু করা যায়। মস্তিষ্কে আর হৃৎপিণ্ডে রক্ত চলাচলকারী নালির সংকোচন বেশি থাকে এ সময়। তাই হার্ট ও ব্রেইনের অসুখও বেশি। বেড়ে যায় ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া থেকে শুরু করে ফুসফুসের নানা রোগ ও ভাইরাল ডায়রিয়া।
ভাইরাল ডায়রিয়ার কার্যকারণ
এর মূলে রয়েছে রোটা ভাইরাস। সংক্রমিত হওয়ার ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শুরু হয় দুর্ভোগ। প্রথমে বমি এরপর পাতলা পায়খানা, পেটব্যথা, জ্বর। ভয়ানক সংক্রামক এটি।
এর উৎস পানীয়জল আর আগের দিনের বাসি খাবার, বাইরের খাবার। এ সময় পানিশূন্যতা দূর করার জন্য মুখে খাবার স্যালাইন দিতে হবে। বেশি সমস্যা হলে হাসপাতাল ভরসা।
এই ডায়রিয়া প্রতিরোধের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই। সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে ভালোভাবে, পানি ফুটিয়ে পান করতে হবে, বাইরের খাবার, বাসি খাবার খাওয়া যাবে না। শিশুদের এই ভাইরাস থেকে রক্ষার উপায় হলো রোটা ভাইরাস টিকা দেয়া।
ভাইরাস জ্বর হলে কী করবেন
আবহাওয়া বদলালে হতে পারে ভাইরাস জ্বর। এ জ্বরে পর্যাপ্ত বিশ্রাম, প্রচুর পানি পান, তরলজাতীয় খাবার খেতে হবে। প্যারাসিটামল খাওয়া যায় বেশি জ্বরে। তবে ডাক্তার দেখানো উচিত।
শীতে অ্যালার্জি-অ্যাজমা কি বেশি হয়?
শীতে বাতাস থাকে শুষ্ক। সঙ্গে অনেক ধূলিকণা। এর মাধ্যমে বাতাসের ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস ঢুকে যায় ফুসফুসে। প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা দেয় অ্যালার্জি। অ্যালার্জির জন্য ওষুধ, ইনহেলার, নাকের স্প্রে রাখা উচিত।
ধুলো অ্যালার্জি বা দূষণের প্রকোপে ফুসফুসে অক্সিজেন বহনকারী নালি সংকুচিত হয়ে পড়ার কারণে শরীরে অক্সিজেন প্রবেশ করে কম। তখন অক্সিজেনের অভাব হয়। তাই যে ঘরে অ্যাজমা আক্রান্ত রোগীর বসবাস, সেখানে প্রচুর বাতাস থাকতে হবে। বাইরে বেরোলে মুখে মাস্ক পরা ভালো।
খাবেন আপেল, ম্যাগনেসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার মাছ। চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে নিয়মিত, সঙ্গে রাখবেন ইনহেলার।
জ্বর, কফ, কাশি, শরীর ব্যথা, বমি বমি ভাব হলো ফুসফুস সংক্রমণের লক্ষণ আর ভাইরাস নিউমনিয়া হলে সর্দি, হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়তে পারে।
শিশুদের সতর্কতা
সদ্যোজাত শিশু আর মাকে ঠাণ্ডা পানিতে স্নান করানো যাবে না, শিশুদের পায়ে মোজা, গায়ে সোয়েটার, মাথায় টুপি পরাতে হবে। বিশেষ দরকার ছাড়া বাইরে নেয়া যাবে না।
ছয় মাসের কম বয়সী শিশুদের বুকের দুধ বারবার খাওয়াতে হবে।
ছয় মাসের বেশি বয়সী শিশুদের বুকের দুধের সঙ্গে সঙ্গে পরিপূরক খাবার দিতে হবে।
প্রয়োজনে শিশুকে কুসুম গরম পানিতে স্পঞ্জ করা যায়।
প্রবীণদের সতর্কতা
প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়া, সব সময় গরম কাপড় পরে থাকা, নাক-মুখ ঢেকে রাখা, পরাগ রেণু থেকে রক্ষা, কম পরিশ্রম করা, মেঝেতে না ঘুমানো, খালি পায়ে চলাচল না করা। সেই সঙ্গে খেতে হবে স্বাস্থ্যকর খাবার। নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।









































