বরিশালে বিরল রোগে আক্রান্ত তিন বোন ॥ অসহায় মায়ের কান্না
আগস্ট ২৪ ২০২৩, ২২:২৯
আরিফ হোসেন ॥ বিরল এক চর্ম রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার অভাবে ধুকছে একটি গরীব ও অসহায় পরিবারের মারিয়া, মনিয়া, তোহা মনি নামে তিন বোন। তাদের এই রোগ দেখে কথা বলা থেকে শুরু করে তাদের কাছে আসছেনা কেই। শুধু তাই নয় তাদের কোন স্কুলেও ভর্তি নিচ্ছে না। বঞ্চিত হচ্ছে পড়া লেখা থেকেও।
চিকিৎসক বলছে, চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে তবে জন্মগত এই রোগ ভাল হওয়ার সম্ভবনা খুবই কম। সমাজ সেবা থেকে সাহায্য দেয়া হয়েছে। বরিশাল জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন যদি উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠাতে হয় তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেই ব্যাবস্থা করবেন বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক। বরিশাল বিভাগের পিরোজপুর জেলার স্বরুপকাঠী উপজেলার সারেং কাঠি গ্রামের হাজী বাড়িতে থাকেন রজিনা বেগম। বড় মেয়ের নাম মারিয়া (১২) মেজ মেয়ে মনিয়া (৮) ছোট মেয় তোহা মনি (৩)।
জন্ম থেকেই তিন মেয়েই বিরল এক চর্ম রোগে আক্রান্ত। কিছু দিন আগে স্বামী মহাসিন এর মৃত্যু হয়। তার পরে রজিনা বাড়ি থেকে প্রতিদিন তিন সন্তানকে নিয়ে বরিশাল শহরে এসে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করেন রজিনা। মেয়েরা জানায় রোগের কারনে তাদের পাশে কেউ বসতে চায় না এবং কি তাদের সাথে কেউ কথাও বলে না।
বড় বোন শিশু মারিয়া বলেন, জন্ম থেকেই আমাদের তিন বোনের এই রোগ। টাকার অভাবে মায় মোগো ভালো ডাক্তার দেখাতে পারছেনা। মারিয়া কেদে কেদে আরো বলেন শরীলে ব্যাথা আর চুলকানি নিয়ে বেচে থাকতে ইচ্ছে করে না। মা রজিনা বেগম বলেন, প্রতিদিন বরিশাল এসে ভিক্ষা করে বাচ্চাদের মুখে খাবার তুলে দেই।
টাকার অভাবে তাদের টিকিৎসা করাতে পারিছি। মা হয়ে ওদের কান্না আর সইতে পারছিনা। কোন বড় সাহায্য পেলে তাদের বড় ডাক্তার দেখাতাম। স্থানীয়রা বলেন, সরকারী ভাবে এই তিন বোনকে যদি উন্নত মানের চিকিৎসা দেওয়া হয় তাহলে ভালো হতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা। এবিষয়ে বরিশাল সমাজ সেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, বিরল এক চর্ম রোগে আক্রান্ত একই পরিবারের তিন শিশুকে দেখে প্রথমেই আমার খুব খারাপ লেগেছে। এবং আমার চোখে পানিও চলে এসেছে।
পরে তাদের ডাক্তার দেখিয়ে ঔষুধ কিনে দিয়েছি। পরে বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম স্যারের সাথে আলাপ করলে তিনি দেখেই পরিবারটিকে অর্থিক সাহয়তা প্রদান করেন।
এবং ভবিৎষতে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে বরিশাল জেলা প্রশাসক মোঃ শহিদুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বিরল এক চর্ম রোগে আক্রান্ত তিন শিশুকে নিয়ে রজিনা নামে এক মহিলা আসছিলো।

বিষয়টি দেখে খুবই খারাপ লেগেছে। আমি বিষয়টি নজরে এনে সমাজ সেবা থেকে মাসিক ভাতা দেয়ার পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনে উন্নত চিকিৎসার জন্য যদি বিদেশ পাঠাতে হয় তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেই ব্যাবস্থা গ্রহন করবো। তবে সরকারী ভাবে এই তিন শিশুকে অর্থিক সহযোগীতাসহ উন্নত চিকিৎসার করানো হোক এমনটাই দাবি পরিবারসহ সাধারন মানুষের।













































