বরিশালে অর্ধকোটি টাকার ব্লক প্রকৌশলীর বাড়িতে
আগস্ট ১৭ ২০২৩, ২০:০৩
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশালের উজিরপুরের সন্ধ্যা নদীর ভাঙন রোধের ব্লক পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলীর বাড়িতে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই ব্লক দিয়ে প্রকৌশলী মো. শাকিল ইসলামের গ্রামের বাড়ি ও পাশে নির্মাণাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যবহারের কথা জানিয়েছে এলাকাবাসী। সরকারি এসব ব্লক বাড়িতে নিয়ে রাখার কথা স্বীকার করেছেন শাকিল ইসলাম নিজেও। তবে তিনি দাবি করেছেন, ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে জানিয়েই তিনি ব্লকগুলো বাড়ি নিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, উজিরপুরে সন্ধ্যা নদীর বিভিন্ন স্থানের ভাঙন রোধের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ পাথরের ব্লক তৈরি করে। কয়েক দিন অগে কয়েকটি ট্রাকযোগে সরকারি ব্লকগুলো শাকিল ইসলামের গ্রামের বাড়ি হস্তিসুন্ড ঈদগাহ মার্কেট এলাকার বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
স্থানীয় মাহফুজুর রহমান নামে এক ব্যক্তি এই প্রতিবেদককে বলেন, শাকিল ইসলামের বাড়িতে আনা ব্লকগুলোর ওপর সিরিয়াল নম্বরসহ ইংরেজিতে ডব্লিউ ডি বি খোদাই করে লেখা আছে। বর্গাকৃত ব্লকগুলো কোনোটির দৈর্ঘ্য এক ফুট আবার কোনোটির দৈর্ঘ্য দেড় ফুট হবে। তবে প্রতিটির প্রস্থ এক ফুটের মতো। যে পরিমাণের ব্লক আনা হয়েছে তার মূল্য অর্ধকোটিরও বেশি হবে।
গতকাল শাকিল ইসলামের বাড়ি ও নির্মাণাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ওই বাড়ির বেশ কিছু অংশজুড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তৈরি কয়েকশ ব্লক সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শাকিল ইসলামের বাবার হস্তিসুন্ড গ্রামের বাড়ির অদূরে নির্মাণাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পেছনে সারিবদ্ধভাবে রেখে প্রধান ফটক তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য হবে অর্ধকোটি টাকা। এ ছাড়া বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চারপাশ ঘিরে রাখা ব্লকের ফাঁকা অংশ বালু দিয়ে ভরাটের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত উপসহকারী প্রকৌশলী শাকিল ইসলাম বলেন, ‘নদীভাঙন রোধের জন্য ভাঙন এলাকায় ব্লক স্থাপনের কাজ শেষে বেশ কিছু ব্লক উদ্বৃত্ত ছিল। সেগুলো এক বছরের অধিক সময় বিভিন্ন এলাকায় পড়ে ছিল। ঠিকাদাররাও ফেরত নিচ্ছিল না। তাই আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই ব্লকগুলো বাড়িতে নিয়েছি।’ তবে কাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন, এমন প্রশ্নের কোনো সঠিক উত্তর দিতে পারেননি এই উপসহকারী প্রকৌশলী।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুস সালাম বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্লক উপসহকারী প্রকৌশলী শাকিল ইসলামের বাড়িতে নিয়ে রাখা ঠিক হয়নি। লোক মুখে শুনে ব্লকগুলো যথাস্থানে ফেরত পাঠানোর জন্য মৌখিক নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি একজন কর্মকর্তার এ ধরনের কাজ পুরোপুরি অনৈতিক। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।









































