স্বপ্নের শিরোপা কার

ডিসেম্বর ১৮ ২০২২, ১৩:০১

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: তিন সংখ্যাটি খুবই দ্বার্থবোধক। তিন কালের সমাহারে চলে জগৎ-সংসার। বিশ্ব প্রকৃতি কিংবা অদৃশ্য মহাশক্তির কাছে তিনটি বরের (আশীর্বাদ) প্রত্যাশা করে মানুষ।

প্রবল আরাধ্য সেই তিনকে ছোঁয়ার স্বপ্নরথে এখন দু-দুবারের বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স। প্রস্তুত লুসাইসের আইকনিক স্টেডিয়াম।

বিশ্বকাপে তৃতীয় শিরোপা নিজেদের করে নেওয়ার মিশনে মুখোমুখি লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা ও কিলিয়ান এমবাপের ফ্রান্স। রোববার তিনের উচ্চতায় কে আগে পৌঁছাবে সেটাই এখন টক অব দ্য ওয়ার্ল্ড। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায়।

ঐতিহাসিক এই ফাইনালকে ঘিরে উঠে আসছে অতীতের অনেক আনন্দ-বেদনরা স্মৃতি। তিন যুগের আক্ষেপ ঘুঁচবে আশায় বুক বেঁধে আছে আর্জেন্টাইন ভক্তরা।

মেসির মধ্যে ভক্তরা খোঁজেন ফুটবলের প্রবাদপুরুষ দিয়েগো ম্যারাডোনাকে। কিন্তু চার চারটি বিশ্বকাপ অভিযাত্রায় অংশ নিয়েও দেশকে শিরোপা এনে দিতে পারেননি মেসি।

ফাইনালে উঠেও ২০১৪ সালে ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে পারেননি ফুটবলের যুবরাজ। মেসি ১৯৮৬ সালের ম্যারাডোনা হয়ে উঠবেন- এটা এখন জন দাবি।

এই জন র সঙ্গে একাত্ম হয়ে উঠেছেন মেসিও। ফাইনালকে সামনে রেখে এই ফুটবল সেনসেশন তার ফেজ বুক পোস্টে লিখেছেন, ফাইনালের জন্য আমি প্রস্তুত। এগিয়ে চল আর্জেন্টিনা।

বিশ্বকাপ শুরুর আগেই সময়টা তারুণ্যের বলে ঘোষণা দেন ফরাসি গতিরাজ এমবাপে। তার ভাষায়, ‘আমি সব সময় নতুন স্বপ্ন দেখি।

আর আমার স্বপ্নের কোনো সীমা নেই। সময় নতুনকেই খুঁজে নেবে।’ গত চার বছর ধরে নতুনের মিছিলে সবচেয়ে বড় নামটিই যে এমবাপে। ২০১৮ সালে মাত্র ১৯ বছরেই জিতেছেন বিশ্বকাপ।

দলের সঙ্গে সঙ্গে ইতিহাস গড়ার হাতছানি এই ফ্রেঞ্চ স্পিড স্টারেরও। বিশ্বকাপ ইতিহাসে টানা দুবার বিশ্বকাপ জয়ের কৃতীত্ব আছে মাত্র দুটি দলের। সর্বপ্রথম এই কীর্তি গড়ে ইতালি ( ১৯৫৪ ও ১৯৩৮)।

আর সর্বশেষ এই গৌরবের অধিকারী পেলের ব্রাজিল। ১৯৫৮ ও ১৯৬২ আসরে টানা বিশ্বকাপ জয়ের সর্বশেস কীর্তিগাথা পেলের ব্রাজিলের। ৬০ বছর পর সেই বিরল রেকর্ডটি নিজেদের করে নেওয়ার সামনে এমবাপের ফ্রান্স।

ফ্রান্সের বিপক্ষে শ্রেয়তর রেকর্ড আর্জেন্টিনার। দুই দলের ১২ দেখায় ফ্রান্সের ৩ জয়ের বিপরীতে আর্জেন্টিনার জয় ৬ ম্যাচে।

বাকি তিন ম্যাচ নিষ্ফলা। বিশ্বকাপেও তিন দ্বৈরথে আর্জেন্টিনা এগিয়ে ২-১ ব্যবধানে। তবে ২০১৮ সালে দুদলের সর্বশেষ লড়াইয়ে মেসিদের ৪-৩ গোলে হারায় এমবাপেররা।

ফাইনালে অবশ্য আর্জেন্টিনার চেয়ে ফ্রান্সের রেকর্ড তুলনামূলকভাবে ভালো। এর আগের পাঁচ ফাইনালে তিনবার হেরেছে ম্যারাডোনার দেশ। আর তিনবার ফাইনাল খেলে দুবার শিরোপা জিতেছে ফরাসিরা।

আরেকটা তথ্য আশাবাদী করে তুলতে পারে এমবাপে ভক্তদের। লাতিন অঞ্চলের দলগুলোর বিপক্ষে বিশ্বকাপে নিজেদের শেষ ১০ ম্যাচে হারেনি ফ্রান্স (৬ জয়, ৪ ড্র)। শেষবার তারা হেরেছিল ১৯৭৮ সালে। বলা বাহুল্য শিরোপাজয়ী দলটির নাম আর্জেন্টিনা।

আজকের ফাইনাল ম্যাচকে সামনে রেখে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে বারবার উটে এসছে মেসির প্রসঙ্গ।

এবারের আসরে গ্রাভস হাতে আর্জেন্টিনার আস্থার প্রতীক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ বলেছেন, ‘ফ্রান্স ফেভারিট। তবে আমাদের আছে মেসি।’ বিপক্ষ শিবিরের সেরা অস্ত্রকে নিয়ে কথা বলেছেন, ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশমও।

তার কথায়, ‘ফ্রান্সেরও কেউ কেউ মেসির হাতে শিরোপা দেখতে চায়।’ ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপজয়ী ফরাসি স্ট্রাইকার থিয়েরি অঁরিও বলেছেন, ‘মেসির হাতে শিরোপা দেখতে চান তিনি।

তবে শিরোপার লড়াইকে শুধু মেসিকেন্দ্রিক ভাবতে চান না দেশম। তার ভাষায়, ফাইনালের মতো ম্যাচে একজনকে আলাদা করে দেখার সুযোগ নাই।’

ফরাসি কোচের ধারণাকে ভুল প্রমাণ করে মেসি আলাদা হয়ে উঠতে পারেন কি না তার-ই অপেক্ষায় আজ গোটা দুনিয়া।

আ/ মাহাদী

সংবাদটি শেয়ার করুন....

আমাদের ফেসবুক পাতা

আজকের আবহাওয়া

পুরাতন সংবাদ খুঁজুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০

এক্সক্লুসিভ আরও