পটুয়াখালীতে ফসল রক্ষায় বিষ প্রয়োগ: কবুতরসহ বন্যপাখির মৃত্যু
মার্চ ২৪ ২০২৪, ১৯:৩২
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ফসল রক্ষায় ডাল খেতে বিষ প্রয়োগের ফলে কবুতরসহ বেশকিছু বন্যপাখির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওই এলাকার প্রায় অর্ধশতাধিক কবুতর খামারি। গতকাল শনিবার ও আজ রোববার উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম হাজিপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ওই এলাকার কৃষক মেহেদী শেখ তার খেতে বিষ প্রয়োগের ফলে এসব পাখির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। গত বছরও ওই এলাকার কৃষি খেতে বিষ প্রয়োগের ফলে বেশকিছু কবুতর মারা পড়ে বলে স্থানীয়রা জানায়। এ ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন অ্যানিমেল লাভার্স অফ পটুয়াখালীর কলাপাড়া শাখার সদস্য ও বন বিভাগের সদস্যরা।
ভুক্তভোগী খামারি মেসকাত মিয়া বলেন, ‘আমি সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস ডিগ্রি কলেজে অনার্সে পড়ি। পাশাপাশি বেশ কিছু কবুতর পালন করি। শনিবার সকালে প্রায় ৪২টা কবুতর আমার খামার থেকে ছেড়ে দেই। দুপুর ১২টার দিকে বাড়ি এসে দেখি ২২টা কবুতর মারা গেছে।
আমার বাড়ির পেছনে ডাল চাষ করেছেন মেহেদী শেখ। তিনি খেতে ধানের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে ছিটিয়ে দিয়েছেন। যাতে কোনো পাখি বা কবুতর খেতে না বসে। তার খেত থেকে কবুতর বাড়িতে আসার পরই মৃত্যু হয়। শুধু আমার কবুতরই নয় এই এলাকার অনেক কবুতরসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখির মৃত্যু হয়েছে।’
একই এলাকার অপর কবুতর খামারি ইব্রাহিম শিকার বলেন, ‘গতকাল আমার খামারের ১০টি কবুতর মারা গেছে। মারা যাওয়া অনেক কবুতরের ছোট ছোট বাচ্চা রয়েছে। এখন এই বাচ্চা কবুতরের অবস্থাও কাহিল। আমি অনেক লোকসানে পড়ে গেলাম। মেহেদীর খেতের ডাল খেয়েই এসব কবুতরের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ঘুঘু ও শালিকসহ বিভিন্ন বন্যপাখিরও মৃত্যু হয়েছে।’
তবে কবুতর খামারিদের দাবি, ফসল রক্ষায় খেতে বিষ প্রয়োগের আগে তাদের জানালে তারা কবুতর আটকে রাখতেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে খেতের মালিক মেহেদী শেখ বলেন, ‘আমার ডাল খেতে বিষ দেইনি। কারণ আমি নিজেও কবুতর পালন করি। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।’
অ্যানিমেল লাভার্স অফ পটুয়াখালীর কলাপাড়া শাখার টিম লিডার রাকায়েত আহসান বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বন্যপাখি ও কবুতর মৃত্যুর সত্যতা পেয়েছি। বন বিভাগকে খবর দিয়ে স্থানীয় কৃষকদের সচেতন করেছি। আশা করছি তারা খেতে বিষ প্রয়োগের ব্যাপারে সচেতন হবে।’
কলাপাড়া বন বিভাগের সদস্য নীলগঞ্জ ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা কামরুল আলম বলেন, ‘আমরা এখানে এসে জানতে পেরেছি বেশ কয়েকজন খামারির কবুতর মারা গেছে। এছাড়া কিছু বন্যপাখিরও মৃত্যু হয়েছে। ডাল খেতে বিষ প্রয়োগের ফলে এসব পাখির মৃত্যু হয়েছে এবং একজন কৃষককে অভিযুক্ত করেছেন এই এলাকার খামারিরা। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করব।’









































