হাফ ভাড়া নিয়ে শ্রমিক-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে ॥ রণক্ষেত্র বরিশাল
নভেম্বর ১৬ ২০২৫, ০২:৩৭
আরিফ হোসেন ॥
বরিশালের কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে অর্ধেক ভাড়া দেওয়া নিয়ে বাসের শ্রমিকদের সঙ্গে ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দুই পক্ষের প্রায় ৬০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এ সময় অর্ধশতাধিক বাস ভাঙচুর করা হয়। উভয় পক্ষের ইট-পাটকেল নিক্ষেপে কমপক্ষে অর্ধ শতাধিক আহত হয়।
রণক্ষেত্রে পরিনিত হয় পুরো এলাকা। এদিকে, রাত পৌনে ৯টায় সেনাবাহিনী উপস্থিত হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শনিবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাতটার দিকে শুরু হওয়া সংঘর্ষ রাত সোয়া আটটা পর্যন্ত চলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সন্ধ্যা সাতটার দিকে বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনালে আসেন। এ সময় সেখানে থামিয়ে রাখা বাসগুলোতে ভাঙচুর শুরু করেন তাঁরা। পরিবহন শ্রমিকেরা প্রতিরোধে এগিয়ে এলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা দুই পক্ষের মধ্যে এ পরিস্থিতি চলে।
এ সময় একটি বাসে আগুন দেওয়া হলে তাৎক্ষণিক নিভিয়ে ফেলা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।
রাত সাড়ে আটটার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হলেও পুরো বাস টার্মিনাল ও আশপাশ এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিএম কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, অর্ধেক ভাড়া দিয়েই তাঁরা সব সময় বাসে চলাচল করেন।
শনিবার বিকেলে মুলাদী থেকে বিএম কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী বরিশাল আসার পথে অর্ধেক ভাড়া দিতে চাইলে তাঁদের পরিবহনশ্রমিকেরা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। খবর পেয়ে অন্য শিক্ষার্থীরা বাস টার্মিনালে জড়ো হয়ে শ্রমিকদের বিচার দাবি করলে উল্টো শ্রমিকেরা তাঁদের ওপর হামলা চালান।
বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের দাবি, পরিবহনশ্রমিকদের হামলায় ২৫ জন আহত হয়েছেন। নথুল্লাবাদের পরিবহন শ্রমিকনেতা আরজু মৃধা বলেন, কলেজ বন্ধের দিনেও অর্ধেক ভাড়া নিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে এক পরিবহনশ্রমিকের বিরোধ হয়। এর জের ধরে সন্ধ্যায় বিএম কলেজের কয়েক শ’ শিক্ষার্থী নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ডে এসে বাসে ভাঙচুর চালান। একটি বাসে আগুন দেন। শিক্ষার্থীরা শ্রমিকদের ওপর হামলা চালান। এতে ৩০-৩৫ জন আহত হন। তিনি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বিএম কলেজের শিক্ষার্থী আকবর মুবিন বলেন, ‘আমাদের অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থীকে গুরুতর অবস্থায় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমরা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছি। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
এবিষয়ে বরিশাল বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুন উল ইসলাম বলেন, শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকায় টার্মিনাল এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।
ব্রজমোহন কলেজের উপ অধ্যক্ষ আবু তাহের মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, আগামীকাল প্রসানের সাথে বৈঠক করে ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থ নেয়া হবে।
বরিশাল
১৫-১১-২৫









































