বরিশালে মালবাহী ট্রলারের ধাক্কায় ব্রিজ খালে, তিন গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
নভেম্বর ১০ ২০২৫, ২১:৪০
বরিশাল ব্যুরো ॥
মালবাহী একটি ট্রলারের ধাক্কায় লোহার একটি ব্রিজ খালে ভেঙে পড়েছে। এতে অন্তত তিনটি গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। আর ভোগান্তিতে রয়েছে শিক্ষার্থী সহ ওই তিন এলাকার বাসিন্দারা।
গত রবিবার (৯ নভেম্বর) বিকেল বরিশাল জেলার মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের খাশকান্দা এলাকায় বগিরচর খালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় ট্রলারটি খালে ডুবে যায়।
স্থানীয় কবির জানায়, খালে প্রবল স্রোতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রলারটি ব্রিজে স্তম্ভে ধাক্কা লাগে। মুহূর্তেই সেতুর বড় একটি অংশ খালে ভেঙে পড়ে। ট্রলারটি স্থানীয় মুদি দোকানিদের মালামাল বহন করছিল। সেসব মালামাল পানিতে তলিয়ে যায়।
ট্রলারটি খুজে পাওয়া গেলেও সেটি সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেল পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
ট্রলারের মাঝি নিজাম ফকির বলেন, ‘আমি সুকান ধরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। ট্রলারটা উজান থেকে দ্রুত ব্রিজ অতিক্রম করছিল। হঠাৎ ঘূর্ণির মধ্যে পড়ে নিয়ন্ত্রণ হারায়।
এরপর ধাক্কা খেয়ে চোখের সামনেই ব্রিজটা ভেঙে গেল। এর কিছুক্ষণ পর ট্রলারটাও তলিয়ে গেল। ট্রলারের মধ্যে মুদি দোকানিদের মালামাল ছিল। সবকিছু খালে তলিয়ে গেছে।’
সুত্র জানায়, ব্রিজটি খাশকান্দা ও চরআলগী গ্রামের মধ্যে একমাত্র সংযোগকারী ছিল। প্রতিদিন শতাধিক মানুষ এই পথ দিয়ে উপজেলা সদর, বাজার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করতো। এখন নৌকা ভাড়া করে পারাপার হতে হচ্ছে স্থানীয়দের।
চরআলগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলেন, শিশুরা স্কুলে আসতে পারছে না। নদী পারাপার করানো ঝুঁকিপূর্ণ। ব্রিজটি দ্রুত মেরামত করা না হলে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল কাদের ফরাজী বলেন, ব্রিজটি আমাদের ইউনিয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ভাঙনের ঘটনায় বগিরচর, জাঙ্গালিয়া ও দক্ষিণ জাঙ্গালিয়া গ্রামের মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। স্রোত বেশি থাকায় আপাতত সাঁকো তৈরি করা যাচ্ছে না। তবে নৌকা দিয়ে যাতায়াত চালু রাখা হয়েছে।
ইউপিসদস্য বশির গাজী বলেন, ব্রিজটির নিচের অংশ দীর্ঘদিন ধরে ক্ষয়ে কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়েছিল। স্রোতের চাপ সামলাতে না পেরে স্তম্ভ ভেঙে গেছে। স্তম্ভগুলো খালে দণ্ডায়মান থাকায় নতুন দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়ে গেছে।
মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রিয়াজুর রহমান বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সোমবার সকালে উপজেলা প্রকৌশলীকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তিনি ফিরে এসে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করবেন। পাশাপাশি সেতুটি মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্থানীয়দের চলাচলের সুবিধার্থে অস্থায়ীভাবে নৌকায় পারাপারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।









































