কিন্তু যানজটের মূল ভোগান্তি বাড়িয়ে তুলেছে বাঁশেরহাট। সড়ক দখল করে বসানো এই হাটের কারণে প্রতিদিনই জনদুর্ভোগ তৈরি হচ্ছে। বাঁশ বোঝাই ট্রলি, ভ্যান ও ট্রাক সড়কে রাখা হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ফলে অ্যাম্বুলেন্স, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী, অফিসগামী মানুষ সবাই আটকে পড়েন। অনেক সময় রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য হয়। এতে একদিকে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে ঘটছে দুর্ঘটনা।
এলাকাবাসী ব্যবসায়ী রানা ও শিক্ষার্থী অন্তি জানান, “প্রতিদিন এই পথে চলাচল করা এখন আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। হঠাৎ সামনে বাঁশ বোঝাই ভ্যান বা ট্রলি এসে পড়লে দুর্ঘটনা এড়ানো যায় না। কয়েকদিন আগে এক ব্যক্তি রিকশা আরোহী বাঁশের গাড়িতে ধাক্কা লেগে গুরুতর আহত হন। শুধু তাই নয়, স্কুলগামী অনেক শিক্ষার্থীও পড়ে গিয়ে আহত হয়েছে।”
পথচারীরা জানান, যে স্থানে বাঁশের হাট সেখানে কোন কর্মযঙ্গ নেই। তাদের বাঁশ কাটা গাড়িতে উঠানো সহ সব কাজই সড়কে করেন। এমনকি সড়কেই স্তূপ করে রাখা হয় বাঁশ। ফলে যানজট লেগেই থাকে। আর অহরহ ঘটছে দূর্ঘটনা। তারা বাঁশের হাট স্থানান্তরের জোর দাবি জানান।
সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ১৪৩২ অর্থবছরে বিএনপি নেতা আব্দুল মান্নান ওরফে মনা ৪ লক্ষাধিক টাকায় বাঁশেরহাটের ইজারা নেন। কর্পোরেশনের হিসাবে হাটের জন্য আনুমানিক মাত্র পাঁচ শতাংশ জমি রয়েছে। সচেতন মহলের মতে, এত ছোট জায়গায় বাঁশেরহাট বসানো সম্ভব নয়। ফলে ইজারাদার সড়ক দখল করে হাট পরিচালনা করছেন, যা সরাসরি জননিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে।
সোমবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাশ্মশান সংলগ্ন বাঁশের হাটখোলাকে কেন্দ্র করে লাকুটিয়া সড়ক, কাউনিয়া প্রধান সড়ক, বিসিক রোড ও খালপাড় সড়কে যানজট এবং বিশৃঙ্খলা লেগেই থাকে। বাঁশের হাট সংলগ্ন সড়কেই রয়েছে অটো ও রিকশা স্ট্যান্ড। একই স্থানে যাত্রী উঠছে অটোতে আবার বাঁশ উঠছে ভ্যানে। ফলে দূর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যায়। সম্প্রতি একটি রিকশা মারাত্মক ভাবে দূর্ঘটনার শিকান হয়। এসময় রিকশার যাত্রীরাও মারাত্মক আহত হয়।
এ বিষয়ে ইজারাদার আব্দুল মান্নান ওরফে মনা বলেন, বাঁশের হাটের নির্দিষ্ট কোন এরিয়া নেই, পূর্বে যেভাবে চলে এসেছে সেভাবেই চলছে। রাস্তার উপর বাঁশের ব্যবসা ও সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়ে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের হাটবাজার শাখা সুপার নুরুল ইসলাম বলেন, অবশ্যই নির্দিষ্ট এরিয়ার মধ্যে বাঁশের হাট পরিচালনা করতে হবে। আর বাঁশের হাটের কারণে দূর্ঘটনা ঘটলে অভিযোগ দিলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ব্যবস্থা নেয়া হবে।









































