আদানির সঙ্গে চুক্তি বাতিলের ঘোষণা কেনিয়ার
নভেম্বর ২২ ২০২৪, ১৪:৫৫
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: ভারতের বিতর্কিত ধনকুবের গৌতম আদানির সাথে হওয়া দুটি বড় চুক্তি বাতিল করেছে কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো। যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিকিউটররা আদানির বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ আনার পর এই সিদ্ধান্ত এল। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) ভারতের দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, তিনি ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঘুষের পরিকল্পনা করেছিলেন এবং তা গোপন রেখে যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ সংগ্রহের চেষ্টা করেছিলেন।
আদানি গ্রুপ যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিকিউটরদের আনা অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে অস্বীকার করেছে। কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো সংসদে বলেন, ‘যদি দুর্নীতির বিষয়ে নিশ্চিত প্রমাণ বা বিশ্বাসযোগ্য তথ্য আসে, আমি কঠোর পদক্ষেপ নিতে পিছপা হব না।’ তার এই বক্তব্যে সংসদে উপস্থিত লোকজন চিৎকার করে সমর্থন জানায়।
আদানি গ্রুপ কেনিয়ার প্রধান বিমানবন্দরে এক দশমিক ৮৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছিল। চুক্তি ছিল যে তারা সেটি ৩০ বছরের জন্য পরিচালনা করবে।
এছাড়া, বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণের জন্য জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সাথে ৭৩৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও একটি চুক্তি ছিল।বিমানবন্দর প্রকল্পের অধীনে নতুন রানওয়ে এবং জোমো কেনিয়াট্টা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে উন্নত যাত্রী টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনাও ছিল।
তবে এই চুক্তিগুলো কেনিয়ার মানুষ খুব একটা পছন্দ করেনি। অনেকেই দুর্নীতির আশঙ্কা করছিলেন। বিমানবন্দর চুক্তি নিয়ে সেপ্টেম্বর মাসে বিমানবন্দর কর্মীরা ধর্মঘট শুরু করেছিলেন, কারণ তারা মনে করতেন যে এই চুক্তির ফলে অনেক কর্মী চাকরি হারাতে পারেন।
প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন। বিশেষ করে, তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে বারবার ওঠা অভিযোগগুলোর প্রেক্ষিতে। তিনি জানান, তার সরকার এখন বিমানবন্দর ও জ্বালানি প্রকল্পের জন্য নতুন অংশীদার খুঁজতে কাজ শুরু করবে।
এদিকে, গত বুধবার (২০ নভেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের কৌঁসুলিরা গৌতম আদানি ও তার কয়েকজন সহযোগীকে অভিযুক্ত করেন। একই দিন গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। তার ভাতিজা সাগর আদানির বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী গৌতম আদানি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ সহযোগী।গত বছর জানুয়ারিতে এক সপ্তাহেই প্রায় ২৫০০ কোটি ডলারের ব্যক্তিগত ধনসম্পদ উধাও হয়ে যায় আদানির।
সে সময় নিউইয়র্ক-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হিনডেনবার্গ রিসার্চের বিতর্কিত এক রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর গৌতম আদানির মালিকানাধীন বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের মূল্যে ধস নামে।
বিনিয়োগ সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিনডেনবার্গ রিসার্চ গতবছর তাদের রিপোর্টে আদানির বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ‘কর্পোরেট জগতের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ধোঁকাবাজির’ অভিযোগ করেছে।
সূত্র: বিবিসি বাংলা









































