সুলভ মূল্যে চাল বিতরণের কার্ড আটকে রাখার অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে
অক্টোবর ০১ ২০২৪, ১৩:২০
বাউফল প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর বাউফলে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির আওতায় সুলভ মুল্যে চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সুবিধাভোগী প্রায় ১২ জন ব্যক্তির কার্ড আটকিয়ে রেখে তাদের চাল দেয়া হয়নি।
সোমবার (৩০সেপ্টেম্বর) উপজেলার কালিশুরি ইউনিয়নের তুলাতলি বাজারে ডিলার পয়েন্টে চাল বিতরণ করার সময় এই ঘটনা ঘটেছে।
নতুন ডিলার দাবি করা কালিশুড়ী ইউনিয়নের দুই নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সেরন মল্লিক ও তার আত্মীয় যুবদল কর্মী মোহাম্মদ মাহমুদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে।
আগে তুলাতলি বাজারে ডিলারের দায়িত্বে ছিলেন স্থানীয় রাসেল নামের একজন ব্যক্তি। তিনি আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। সরকার পতনের পরে আজই প্রথম চাল বিতরণ করা হয়েছে এবং রাসেলের পরিবর্তে সেরন চাল বিতরণ করেছেন।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সোমবার সকাল সাড়ে নয়টায় তারা তুলাতলি বাজারে ডিলার পয়েন্টে গিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে কার্ড জমা দেন। ডিলারের আত্মীয় মোহাম্মদ যুবদল নেতা মাহমুদ কার্ড জমা নিয়ে তাদের পরে চাল দেয়া হবে জানিয়ে অপেক্ষা করতে বলেন। এসময় ডিলার সেরন মল্লিক ভিতরের রুমে চাল বিতরণ করছিলেন।
দীর্ঘসময় অপেক্ষার পরে দুপুর আনুমানিক আড়াইটার সময় তাদের চাল দেয়া হবে না বলে জানায় মাহমুদ। তাদের কার্ড ফেরত পাবে না বলেও জানানো হয়।
ভয়ে তারা প্রতিবাদও করতে পারেননি। এ বিষয়ে অভিযুক্ত যুবদল কর্মী মোহাম্মদ মাহমুদ মুঠোফোনে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তাদের (ভুক্তভোগী) মধ্যে কয়েকজন আমার বাবাকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছিলো।
তারা অনিয়ম করে একই বাড়ির ৪জন সুলভ মূল্যের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন। বিষয়টি প্রশাসনকে না জানিয়ে কার্ড আটকাতে পারেন কিনা- এ প্রশ্নের জবাবে মাহমুদ বলেন, তাদেরকে কাল আসতে বলা হয়েছে, সবাইকে চাল দেয়া হবে।
প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা সেরন মল্লিক জানান, রাসেল স্বেচ্ছায় দায়িত্ব ত্যাগ করেছেন। পরে খাদ্য নিয়ন্ত্রক তাকে ডিলারের দায়িত্ব দিয়েছেন। খাদ্য নিয়ন্ত্রকের নির্দেশে তিনি সুবিধাভোগীর অনুমতিক্রমে ছেড়া ফাটা কিছু কার্ড জমা রেখেছেন।
তবে তাদের চাল দেয়া হয়েছে। কার্ড গুলো পরিবর্তন করে তাদের বুঝিয়ে দেয়া হবে। এছাড়া রাজনৈতিক বিরোধের কারণে ডিলার পয়েন্টের বাইরে কিছু লোকের কার্ড দুর্বৃত্ত্রা নিয়েছে শুনেছি। তবে সে ঘটনায় তার আত্মীয় মাহমুদ জড়িত নয় দাবি করেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে জানতে একাধিকবার চেষ্টা করেও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কমল গোপালের মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। এদিকে ইউএনও মো. বশির গাজী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ভুক্তভোগীদের লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি।
তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো। কালিশুরিতে একজন ডিলার পরিবর্তন হয়েছে জানি। কিন্তু রাসেলের পরিবর্তে সেরন মল্লিক দায়িত্ব পাওয়ার বিষয় এখন নিশ্চিত ভাবে বলতে পারবেন না বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, সারা দেশে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুলভ মূল্য কার্ড্ সুবিধাভোগী ৫০ লাখ দরিদ্র মানুষ ১৫ টাকা হিসেবে ৩০ কেজি করে চাল ক্রয় করতে পারেন। এদিকে, ভুক্তভোগীদের ৬ জনের সুলভ মূল্য কার্ডের কপি বরিশাল টাইমস এর প্রতিনিধির হাতে এসেছে। তাদের মধ্যে একজন বিধবা নারী এবং অন্যরা দিজমজুর ও কৃষক।









































