জিয়ার আমলে সাদা মাইক্রোতে উঠে কেউ আর ফেরেনি: প্রধানমন্ত্রী

মার্চ ২৭ ২০২৩, ১৫:১৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:: বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আমলে সাদা মাইক্রোবাসে উঠে কেউ আর জীবিত ফিরেনি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পর নির্বিচারে মানুষ হত্যা করেছে।

বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদের হত্যার পর তাদের লাশ গুম করা হয়েছ। বিচারের নামে বাহিনীর সদস্যদের অন্যায়ভাবে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে। জিয়ার আমলে সাদা মাইক্রোবাস ছিল। সেই মাইক্রোতে যে উঠেছে, সে আর মায়ের কোলে ফিরে আসতে পারেনি।’

সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের মিলনায়তনে স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্যদিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস এবং জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে। জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়া যে গুম, খুন ও অপহরণের ঘটনা ঘটিয়েছে, তার সামান্যটুকুও তারা সহ্য করতে পারবে না।

বিএনপির নেতাকর্মীরা অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, এমন অভিযোগের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী দলের সদস্যদের মুখে গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না।

আমরা তো তাদের মিছিল করতে দিচ্ছি। তার তো আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়িতেই থাকতে দেয়নি। সড়কে নামলে বর্বর নির্যাতন চালিয়েছে, বাড়িঘর দখল করেছে। হত্যা-গুমের মাধ্যমে ভয়ের রাজত্ব কায়েম করেছিল।

প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, তারা যা করেছে, সে সবের এক ভাগ করলেও তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু আমরা প্রতিশোধ নেইনি, আমরা অন্যায় করিনি। আমরা কেবল তাদের অন্যায়ের বিচার করছি।

তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে একটা রেডিও ও একটা টেলিভিশন ছিলো। আজকে এতোগুলো বেসরকারি টেলিভিশন আমরা দিয়েছি।

আজ সেখানে গিয়ে টকশো করে। বিদ্যুৎ দিয়েছি। সব কথা বলেও যদি কেউ বলে কথা বলতে দেয়া না এর চেয়ে মিথ্যা আর কি আছে।

রমজান মাস। আমরা চেষ্টা করছি মানুষকে ভালো রাখতে। যাতে কষ্ট না হয়। আর সেখানে তারা আন্দোলন করছে। তারাই তো আন্দোলন করবে। তারা জাতির পিতার হত্যাকারী।

রশিদ আর হুদাকে ভোট চুরি করে পার্লামেন্টে বসিয়েছে। আমি বাবা-মায়ের বিচার চাইতে পারিনি। তারা এতো কথা বলে কেন? এখন তারা বিদেশে গিয়ে কান্নাকাটি করে।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি বাংলাদেশের মানুষকে গিনিপিগ বানিয়ে রাখতে চায়। তারা মানুষকে ভালো থাকতে দেবে না।

৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশকে একটা পর্যায়ে নিয়ে এসেছিলাম। দেশের মানুষ ও সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় যাব আমি এমন রাজনীতি করি না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে ৩০০ সিটের মধ্যে বিএনপি পেয়েছিল মাত্র ২৯ সিট। তারা নির্বাচনকে প্রশ্ন বিদ্ধ করতে চায়।

২০১৩ সালে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। ওই সময়ে পুড়ে যাওয়া মানুষগুলো কিভাবে বেঁচে আছে, তা একবার ভেবে দেখুন।

তবে আওয়ামী লীগ সরকার আছে বলেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ৬ লাখ কোটি টাকার বাজেট আমরা দিয়েছি। আজকে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছি। ১ কোটির কৃষককে ১০ টাকা অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশে খাদ্যের জন্য কোনো হাহাকার নেই। ১৫ টাকায় চাল দিয়ে যাচ্ছি। প্রত্যেকটা মানুষ যেন খাদ্যে কষ্টে না পায়, সেই কাজ করে যাচ্ছি। আমরা মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমরা প্রত্যেকটি ঘর আলোকিত করেছি।

তিনি বলেন, তাকের জিয়া দুর্নীতির জন্য সাজা পেয়েছে। তারেক জিয়া অস্ত্র চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত। সেটার জন্য সাজাপ্রাপ্ত।

গ্রেনেড হামলার নামে জজ মিয়া নাটক সাজানো হয়েছিলো। যদি কোনো দলের নেতা দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়। তাদের ওপর মানুষ আস্থা রাখবে কিভাবে।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেকটা উপজেলায় একটি করে সরকারি বিদ্যালয় করে দিয়েছে। ভূমিহীন মানুষকে ঘর দিচ্ছি। বাংলাদেশের একটি মানুষও ঠিকানাবিহীন থাকবে না। বিএনপির আমলে ৪০ ভাগ দারিদ্রের হার ছিলো। সেখানে ২০ ভাগে নামিয়ে এনেছি।

এসএমই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের ঋণ নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ছাত্রজীবন থেকেই যাতে কম্পিউটার শিক্ষা হয়, সে জন্য ল্যাব তৈরি করে দিয়েছি।

দেশে ৫ লাখের মতো উদ্যোক্তা আছে। অনলাইনে বেচাকেনার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। আয়ুষ্কাল ৭৩ বছর করতে সক্ষম হয়েছে। তবে মেয়েদের একটু বেশি। বিনা পয়সায় ইনসুলেন ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

সব ধরণের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। মেট্রোরেল চালু করে দিয়েছি। এগুলো বিএনপির চোখে পড়ে না। মেট্রোরেলে ৬০ হাজার মানুষ ঘণ্টায় চলাচল করতে পারবে। দুনীতি করতে আমরা আসিনি।

পদ্মা সেতু নিজস্ব টাকায় নির্মাণ করে প্রমাণ করেছি বাংলাদেশ পারে। আমাদের কর্ণফুলী টানেল প্রায় শেষ পর্যায়। দুইটা সিটি এক হয়ে যাবে। আনোয়ারাতে নতুন সিটি গড়ে উঠছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় ছিলো অনেক বছর। তিনবার ক্ষমতায় ছিলো। যদিও ভোটচুরির অভিযোগে একবার ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছে। ওই সাম্প্রদায়িক শক্তির হাতে ২৯ বছর বাংলাদেশ ছিলো। সেটি ছিলো বাংলাদেশের জন্য কালো অধ্যায়।

বাংলাদেশ এখন আলোর পথে। বাংলাদেশ আলোর পথেই এগিয়ে যাবে। আমি জানি অনেক আন্তর্জাতিক শক্তি আছে, তারা চায় না একটি গণতান্ত্রিক শক্তি সরকারের থাকুক।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশের তৃণমূল মানুষের কাছে যান, তাদের আস্থা ধরে রাখতে হবে।

আবার সাম্প্রদায়িক শক্তি যেন ক্ষমতায় না আসতে পারে, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল। বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাবে।

আ/ মাহাদী

সংবাদটি শেয়ার করুন....

আমাদের ফেসবুক পাতা

আজকের আবহাওয়া

পুরাতন সংবাদ খুঁজুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭৩০

এক্সক্লুসিভ আরও