দেশের ৫৪ শতাংশ মানুষ নেটওয়ার্কের বাইরে
জানুয়ারি ২১ ২০২৩, ১৯:০৪
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। কিন্তু এখনও দেশের ৫৪ শতাংশ মানুষ নেটওয়ার্কের বাইরে রয়েছে। দেশে ১৮ কোটির উপর সক্রিয় সিম থাকলেও স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে না।
তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে টেলিযোগাযোগ সেবায় ইকোসিস্টেম বাস্তবায়নসহ সবার জন্য টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করা না গেলে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন, অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকমিউনিকেশন অপারেটরস অব বাংলাদেশ (এমটব)।
শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে টেলিযোগাযোগ সেবার মানোন্নয়ন’ এ করণীয় আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশে মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে মোবাইল অপারেটররা তাদের সিমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরেন।
আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে এমটবের সেক্রেটারি জেনারেল ব্রিগেডের জেনারেল (অব.) এস এম ফরহাদ বলেন, বর্তমানে মোবাইল অপারেটরদের সম্মিলিত বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে টেলিকম অপারেটররা ব্যাপক ভূমিকা পালন করেছে। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্য ২০৪১ নির্ধারণ করেছেন।
কিন্তু এখনও দেশের ৫৪ শতাংশ মানুষ নেটওয়ার্কের বাইরে রয়েছে। যদিও ১৮ কোটির উপর সক্রিয় সিম রয়েছে যা মোট জনসংখ্যার চাইতেও বেশি।
টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞ টিআইএম নুরুল কবির বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্য ২০৪১ সালে হলেও সময় কিন্তু খুব বেশি নেই।
সরকার এবং নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দ্রুত সব পক্ষের সাথে বসে সমস্যা সমাধান করতে হবে। কেবলমাত্র রেগুলেশন আর লাইসেন্স প্রদান করলেই হবে না। চাই সমন্বিত উদ্যোগ।
রবি আজিয়াটা লিমিটেডের চিফ রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড করপোরেট অফিসার ব্যারিস্টার শাহেদ আলম বলেন, আমরা সরকার ও কমিশনের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করে যাচ্ছি।
একইসঙ্গে প্রতিনিয়তই বিনিয়োগ করছি। কিন্তু মাঝখানে বেশকিছু প্রতিবন্ধকতা থাকার কারণে ই-গ্রাহকরা মানসম্পন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
আমাদের কেবল রেগুলেশনের মধ্যে রাখবেন আর প্রতিবন্ধকতা নিরসণ না করে সেবা চাইবেন সেটা কিভাবে সম্ভব? উন্নত বিশ্বের মতো আমাদের টেলিকম নেটওয়ার্কের মান উন্নয়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
অপারেটরদের স্বদিচ্ছা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা গ্রাহকদের কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে চাই এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চাই বলেই আজকে নাগরিকদের সামনে উপস্থিত হয়েছি।
আমাদের শুধু রেগুলেশন দিয়ে হাত পা বেঁধে রেখে কাজকর্ম করতে দেবেন না, অন্যদিকে গ্রাহকরা আমাদের দোষারোপ করবে এটা সঠিক হবে না।
বাংলালিংক লিমিটেডের চিফ রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড করপোরেট অফিসার তাইমুর আলম বলেন, আমরা মানসম্পন্ন সেবা দেওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। উন্নত বিশ্বের সেবার সাথে আমাদের তুলনা দেওয়া হয়।
অথচ উন্নত দেশের রেগুলেশন অনুযায়ী আমাদের রেগুলেশন নিয়ে কাজ করতে দেওয়া হয় না। ভালো মানের সেবার জন্য ইকোসিস্টেম বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত জরুরি বলে জানান তিনি।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ক্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন বলেন, আজকে এই অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয় এবং নিয়ন্ত্রণ কমিশনের উপস্থিত থাকা অত্যন্ত জরুরি ছিল।
এই আলোচনায় যে সমস্যা এবং সমাধানের বিষয়গুলো উঠে এসেছে এটি সমাধানের জন্য তাদেরকেই কাজ করতে হবে। অথচ তারা অন্ধকারে রয়েছে।
তিনি বিটিআরসির গণশুনানি নিয়েও প্রশ্ন উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, শুধু কথা বললে হবে না আমরা কাজ দেখতে চাই। দ্রুত সেবার মান উন্নয়ন করুন।
সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা সরকারের যে লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের তাতে আমরা অংশীজন হিসেবে সরকারকে সহায়তা করতে চাই।
কিন্তু দুঃখের বিষয় কমিশনের চেয়ারম্যান সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানোর পরেও তারা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয় নাই।
অপারেটরদের ধন্যবাদ তারা গ্রাহকদের এত অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তারা গ্রাহকদের মাঝে উপস্থিত হয়েছেন।অপারেটর ছাড়াও আরো ১২০টি প্রতিষ্ঠান অন্ধকারে রয়েছে এই সেবা প্রদানকারীদের মধ্যে।
তাদেরকে যদি কোয়ালিটি সার্ভিস নিশ্চিত করতে বাধ্য না করা যায় তাহলে হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেও যোগাযোগ সেবার মান উন্নয়ন করা সম্ভব হবে না। আলোচনা সভায় বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নাগরিকরা উপস্থিত ছিলেন ।
আ/ মাহাদী









































