ভোলায় আ‘লীগ নেতার নির্দেশেই হামলা চালানো হয় সাংবাদিকের ওপর
অক্টোবর ২৯ ২০২৫, ১৯:১০
ভোলা প্রতিনিধি : ভোলার বোরহানউদ্দিনে জায়গা-জমি নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ভিডিও ধারণ করায় কালের কণ্ঠের মাল্টিমিডিয়া প্রতিনিধি (ভোলা) পরাণ আহসানের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় গুরুতর আহত অবস্থায় সাংবাদিক আহসানকে উদ্ধার করে বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার সাচড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের দরুন বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রত্যক্ষে যোগসাজসে এ হামলা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সন্ধ্যার দিকে লালমোহন উপজেলার কালমা ইউনিয়ন থেকে সংবাদ সংগ্রহ শেষে মোটরসাইকেল যোগে ভোলা সদরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন পরাণ আহসান। পথিমধ্যে বোরহানউদ্দিনের সাচড়া ইউনিয়নের দরুন বাজার এলাকায় পৌঁছালে পূর্বপরিচিত কয়েকজন স্থানীয় ব্যাক্তি তাকে থামিয়ে নিকটস্থ এলাকায় জমিজমা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে বলে জানায়।
এর প্রেক্ষিতে তিনি মোবাইল ফোনে ঘটনাটির ভিডিও ধারনের চেষ্টা করেন। তখন সাচড়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজ হাওলাদারের প্রত্যক্ষ নির্দেশে সেখানকার যুবলীগ নেতা কামাল হাওলাদার, ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা মো. জামাল হাওলাদার, মোসা. শিখা, নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ ক্যাডার মো.রবিন, মো. দলু হাওলাদারসহ আরো ৭-৮ জন মিলে দা এবং লাঠিসোটা নিয়ে তার ওপর অতর্কিত হামলা করে।
এ সময় তিনি সাংবাদিক পরিচয় দিলে হামলাকারীরা তাকে এলোপাথারিভাবে পিটিয়ে আহত করে। এক পর্যায়ে তাকে মারধর করে পাশে থাকা পুকুরে ফেলে দেয়।
পরে স্থানীয় লোকজন এসে তাকে পুকুর থেকে টেনে তুলতে চাইলে পুনরায় হামলা চালিয়ে তার হাতে থাকা মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে সন্ত্রাসীরা। মোবাইল নিতে ব্যার্থ হলে তাকে গলা চেপে ধরে মাটিতে ফেলে দ্বিতীয় দফায় এলোপাথারি মারধর করে তারা।
পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা হত্যার হুমকি দিয়ে তাকে মাটিতে ফেলে রেখে চলে যায়। আহত অবস্থায় স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে ভর্তি করেন স্থানীয়রা।
আহত আহসান জানান, ‘আমি সাংবাদিক পরিচয় দিলেও তারা থামেনি। বরং আমাকে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। একপর্যায়ে তারা আমাকে পাশের পুকুরে ফেলে দেয়। স্থানীয়রা উদ্ধার করলে আবারও তারা হামলা চালিয়ে মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং হত্যার হুমকি দেয়।’
তিনি আরও জানান, ‘এ ঘটনায় আমি নিজে বাদী হয়ে বোরহানউদ্দিন থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৭–৮ জনকে আসামি করে মামলা করি। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।’
বোরহানউদ্দিন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘সাংবাদিক আহসান পরানের ওপর হামলার ঘটনায় তিনি নিজে বাদী হয়ে মামলা করেছেন। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
এদিকে সাংবাদিকের ওপর এমন ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম, জাতীয় সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন এবং ভোলা প্রেস ক্লাবের নেতৃবৃন্দ তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।









































