বরিশাল বিভাগে চার মাসে দুই শতাধিক আত্মহত্যা
মে ১৮ ২০২৫, ১৮:৩৪
আরিফ হোসেন ॥ বরিশাল বিভাগজুড়ে মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে রয়েছে মাত্র একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। মানসিক রোগীর সংখ্যা যেমন বেশি, তেমনি আত্মহত্যার ঘটনাও উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে।
চলতি বছরের প্রথম চার মাসে (জানুয়ারি থেকে এপ্রিল) বরিশাল বিভাগে পারিবারিক কলহ, মানসিক সমস্যা, হতাশা, অভিমান এবং বিভিন্ন দুর্ঘটনায় ৫৪৬ জনের অপমৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে আত্মহত্যাজনিত মৃত্যুর সংখ্যা দুই শতাধিক, এবং নারীদের আত্মহত্যার হার তুলনামূলকভাবে বেশি।
বরিশাল রেঞ্জ পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন ১৩৫ জন। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ৩৩ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৩, মার্চে ৩২ এবং এপ্রিলে ৩৭ জন। বিষপানে মৃত্যু হয়েছে ৫২ জনের— জানুয়ারিতে ১৪, ফেব্রুয়ারিতে ১৫, মার্চে ১১ এবং এপ্রিলে ১২ জন।
পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে ১০৫ জনের, যার মধ্যে জানুয়ারিতে ২৩, ফেব্রুয়ারিতে ২১, মার্চে ২১ এবং এপ্রিলে ৪০ জন। এছাড়া বৈদ্যুতিক শক বা শর্টসার্কিটে মারা গেছেন ৩১ জন— জানুয়ারিতে ৩, ফেব্রুয়ারিতে ৭, মার্চে ৯ ও এপ্রিলে ১২ জন। বজ্রপাতে মারা গেছেন ৩ জন, ছাদ থেকে পড়ে ৬ জন এবং অন্যান্য দুর্ঘটনায় ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
জেলাভিত্তিক হিসাব অনুযায়ী, সর্বাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালী (১২১ জন), ভোলা (১২৪ জন) ও বরগুনা (৮৫ জন) জেলায়। অন্যদিকে, পিরোজপুরে ৭৮ জন, ঝালকাঠিতে ৩৪ জন এবং বরিশাল জেলায় ৩৫ জনের অপমৃত্যু ঘটেছে।
এই চার মাসে আত্মহত্যাজনিত ও অন্যান্য অপমৃত্যুর ঘটনায় মোট ১০টি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো মৃতদেহগুলোর প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে, আত্মহত্যাকারীদের অর্ধেকেরও বেশি মানসিক রোগী ছিলেন অথবা মানসিক চাপে ভেঙে পড়ে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বরিশাল বিভাগের মতো একটি বিশাল অঞ্চলে মানসিক চিকিৎসা সেবা কার্যকরভাবে পরিচালনার জন্য আরও বিশেষজ্ঞ, সচেতনতামূলক কর্মসূচি এবং সামাজিক সহায়তা ব্যবস্থার প্রয়োজন রয়েছে। অন্যথায় আত্মহত্যা প্রতিরোধে প্রচেষ্টা জোরালো না হলে এ হার আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।








































