দুই দফা মেয়াদ বাড়িয়েও কাজে ধীরগতি, দুর্ভোগ
সেপ্টেম্বর ২৭ ২০২৫, ২০:৩৮
উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলডিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ছোটবগী ইউনিয়নের বাঁধঘাট থেকে ছোটবগী বাজার পর্যন্ত ৯ হাজার ৭০০ মিটার সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ১৪ কোটি ৫৩ লাখ ৯৪ হাজার ১০৫ টাকা। প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে গত বছর জুন মাসে বরেন্দ্র কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। গত বছর ২৫ মার্চ থেকে চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদকাল ধরা হয়। কিন্তু নভেম্বর মাস থেকে কাজ শুরু করেন ঠিকাদার। কাজ শুরুর পর কিছু অংশে খুঁড়ে খোয়া ফেলে রাখা হয়েছে। কাজের মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও শেষ করতে পারেননি। পরে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়। এরপরও কাজ শেষ না হওয়ায় চলতি বছরের জুন পর্যন্ত দ্বিতীয় দফা সময় বাড়ানো হয়। তবে এখন পর্যন্ত সড়কের কাজের অগ্রগতি মাত্র ৩৫ শতাংশ। উপজেলা প্রকৌশলী অফিস এ কাজের এক কিস্তির বিল ছাড় করেছে।
স্থানীয়রা জানান, ছোটবগী ইউনিয়নের বাঁধঘাট থেকে ছোটবগী বাজার পর্যন্ত সড়কটি জেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র পথ। সড়কটির দুই পাশ খোঁড়াখুঁড়ি করে কেবল কিছু অংশে খোয়া ফেলে রাখা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় খোয়া সরে বড় বড় খানাখন্দ ও গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ চলাচলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। আর এ সড়ক দিয়ে চলাচল করা মোটরসাইকেল, অটোরিকশাসহ নানা ধরনের যানবাহন উল্টে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে অর্ধশত মানুষ আহত হয়েছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কে নিম্নমানের খোয়া দিয়ে কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বিষয়টি উপজেলা প্রকৌশলকে জানালেও কোনো প্রতিকার মেলেনি। এ ছাড়া গা ছাড়াভাবে কাজ করায় ধীরগতি তো আছেই। এবারও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে না।
স্থানীয় লিমন গাজী বলেন, ‘প্রায় দুই বছর ধরে সড়কটি বেহাল পড়ে আছে। ভাঙা সড়কের খানাখন্দে বৃষ্টি হলে পানি জমে থাকে, প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। এই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে খুবই অসুবিধা হয়। আমাদের দাবি, সড়কটির কাজ দ্রুত শেষ করা হোক।
অটোচালক মহাসীন মিয়া বলেন, ‘সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে দুই মিনিটের গন্তব্যে পৌঁছাতে ১০ মিনিটেরও বেশি সময় লাগে। ভাঙাচোরার জন্য গাড়ির প্রচুর ক্ষতি হয়। গত দুই বছর ধরে কষ্ট করে চলছি। আমরা অসহায় হয়ে গেছি। কার কাছে বলব কষ্টের কথা। বলার কোনো জায়গা নেই।
তালতলী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী নাইম ইসলাম বলেন, ‘সড়কের বেহালদশার কারণে আমাদের যাতায়াতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। আমরা নির্ধারিত সময়ে কলেজে উপস্থিত হতে পারি না। ক্লাস পরীক্ষায় দেরি হয়ে যায়। দ্রুত সড়কটির কাজ শেষ করা হোক।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি বশির উদ্দিন বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের কারণে আমাদের কাজে কিছুটা ধীরগতি ছিল। এখন দ্রুত শেষ করতে প্রয়োজনীয় জনবল ও সরঞ্জাম দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে কাজ দ্রুত শেষ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বৃষ্টি কমলে কাজের গতি বাড়বে। জনগণের দুর্ভোগ কমাতে দ্রুত সড়কটি চলাচলের উপযোগী করতে পারব। আশা করছি এবার প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কাজ শেষ হবে।’









































