নামে ‘মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র’, কাজে নেই!
জুলাই ১০ ২০২৫, ১৪:০৬
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: ঝালকাঠি জেলায় রয়েছে তিনটি ১০ শয্যার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ভবন। তবে ওষুধ ও জনবল সংকটে নেই চিকিৎসাসেবা। হাসপাতালগুলো নির্মাণ করা হয়েছে অন্তঃসত্ত্বাদের সিজারিয়ান (অপারেশন) ও শিশুদের চিকিৎসার জন্য। মেডিকেল সরঞ্জাম, ওষুধ ও জনবল সংকটের কারণে তা কার্যকর হচ্ছে না।
হাসপাতালগুলোর মধ্যে শয্যা ও ডরমেটরি রয়েছে, এমনকি বিদ্যুৎ চলে গেলেও বিকল্প হিসেবে জেনারেটরও স্থাপন করা হয়েছে। তবে, চিকিৎসক, নার্স এবং অন্যান্য স্টাফের অভাবে হাসপাতালগুলো সঠিকভাবে কাজ করতে পারছে না। ফলে এলাকাবাসী প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
২০১৮ সালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে এসব হাসপাতাল উদ্বোধন করা হলেও ৭ বছরে হাসপাতালগুলো সম্পূর্ণভাবে চালু হয়নি। বর্তমানে এই হাসপাতালগুলোতে কোনো চিকিৎসক নেই, যা রোগীদের চিকিৎসা সেবার প্রক্রিয়াকে আটকে রেখেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বারবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জনবল নিয়োগের জন্য দাবি করলেও সাড়া মেলেনি। বিনয়কাঠি হাসপাতালে আসা রোকেয়া বেগম বলেন, এখানে আগে কিছু ওষুধ পেতাম, ৬/৭ মাস ধরে কোনো ওষুধও পাই না; ডাক্তার নাই। নামে আছে হাসপাতাল, কামে নাই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝালকাঠি সদর উপজেলার বিনয়কাঠি, শেখেরহাট ও নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নে ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র রয়েছে। জেলার চার উপজেলায় তিনটি হাসপাতাল। এ হাসপাতালগুলোর জনবল সংকটের কারণে নষ্ট হতে চলেছে সরঞ্জামাদি। স্থানীয়রা হাসপাতালটি পেয়ে খুশি হলেও, সেবা না পেয়ে এখন হতাশ। তাদের অভিযোগ, হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসক, নার্স, ওষুধ ও অন্যান্য সেবা নেই।
আরও জানা গেছে, হাসপাতালের ভবনটিতে দুটি চিকিৎসকের চেম্বার, দুটি নার্স রুম, ফার্মেসি, ল্যাব, ওয়েটিং রুম, কাউন্সিলিং রুম, স্টোর রুম, খাবার সরবরাহ কক্ষ, অফিস কক্ষ ছাড়াও রোগীদের জন্য সাধারণ ওয়ার্ড, এসি সংবলিত অপারেশন থিয়েটার, পোস্ট অপারেটিভ রুমসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য কক্ষ রয়েছে। জনবল নিয়োগ না হওয়ায় হাসপাতালে রোগী ভর্তি করা হয় না। তাই ওয়ার্ডে নেই কোনো শয্যা, অপারেশন থিয়েটারে নেই অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।
দপদপিয়া ১০ শয্যার মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের স্বাস্থ্য সহকারী (এফপিআই) শামীম হোসেন বলেন, আমাদের এখানে ২ জন চিকিৎসক থাকার কথা একজনও নাই, ভিজিটর চারজনের মধ্যে একজন আছে, ফার্মাসিস্ট একজন ও একজন দাই নার্সকে দিয়েই চালিয়ে রাখা হচ্ছে হাসপাতাল।
হাসপাতালগুলোতে সেবা নিতে আসা রোগীরা জানান, হাসপাতালটি উদ্বোধন হলেও আমরা কোনো সেবা পাইনি। এখানে কোনো চিকিৎসক বা নার্স নেই, আর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় না। তারা আরও জানান, সেবা না পাওয়ায় অনেক সময় জেলার সদর হাসপাতালে বা বেসরকারি হাসপাতালে যেতে হয়, যা তাদের জন্য একটি চরম ভোগান্তি। ঝালকাঠি পরিবার-পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক তাপস কুমার শীল বলেন, হাসপাতালগুলোতে পদ সৃষ্ট হয়েছে। এখন সৃষ্ট পদে জনবল নিয়োগ হলেই আরও ভালোভাবে চিকিৎসা সেবাদান করতে পারব।









































