বরিশালে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

অক্টোবর ২৯ ২০২২, ১৫:১৭

আরিফ হোসেন॥ ছয় ঋতুর দেশে হিসেব অনুযায়ী শীতকাল না এলেও প্রকৃতির যেন আর তর সইছে না। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের মধ্যে টানা বৃষ্টিপাত পরিবেশে অকেটাই ঠাণ্ডা ভাব নিয়ে এসেছে। আসছে শীত। শীত উপলক্ষে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে বরিশালের লেপ- তোষক কারিগর ও ব্যবসায়ীরা।

 

দিনে গরম, রাতে ঠান্ডা আর সাত সকালে ঘাস, লতাপাতার ওপর জমে থাকা শিশির বিন্দু জানান দেয় ‘শীত এসে গেছে। তৈরী হও শীতবস্ত্র নিয়ে শীত মোকাবেলায়’। বরিশালে গত তিন চার দিন ধরে আবহাওয়ার কিছুটা পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। রাত শেষে ভোরে আলো ফুটলেও কিছু স্থানে কুয়াশাচ্ছন্ন দেখা যায়। সঙ্গে শীত শীত অনুভব। এতে বোঝা যায়, দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। আর শীতের আগমনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে লেপ-তোশক তৈরিতে স্থানীয় কারিগররা।

 

কার্তিকে শীতের শুরু হলেও পৌষ ও মাঘ- এ দুই মাস শীত মৌসুম হিসেবে বিবেচিত। এ সময় বরিশাল নগরীর বাসিন্দারা শীত মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নিতে ভিড় করেন লেপ-তোশক বানানোর দোকানগুলোয়। এ কারণে লেপ-তোশক তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। অন্যদিকে অনেক পরিবারের সদস্যরা তাদের উঠিয়ে রাখা লেপ-তোশক বের করে ব্যবহারের উপযোগী করার চেষ্টা করছেন।

 

এ বিষয়ে আলাপকালে বরিশাল সদর উপজেলার সাহেস্তাবাদ বাজারের আশিক বেডিং ষ্টোর লেপ-তোশক তৈরি কারিগর হানিফ মোল্লা জানান, শীত শুরু হওয়ার শুরুতেই ক্রেতাদের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। ক্রেতাদের এ আনাগোনা চলবে পুরো শীতজুড়ে। শুক্রবার সরজমিন নগরীর পদ্মাবতী রোড, বাজার রোড, সাগরদী, চৌমাথা, নতুন বাজার ও কাশিপুর, কাগাশুরা বাজার, সাহেস্তাবাদ বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায় লেপ-তোশকের সব দোকানের ছিল কারিগরদের লেপ বানানোর ব্যস্ততা। দোকানিরাও অর্ডার নিচ্ছেন। ক্রেতাদের বিভিন্ন রং-মানের কাপড় ও তুলা দেখাতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

এ দৃশ্য চোখে পড়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলার হাটবাজারগুলোয়ও। এ বিষয়ে পদ্মাবতী রোডের লেপ-তোশক ব্যবসায়ী আরিফ জামান আমার সংবাদকে বলেন, তুলার মান ও পরিমাণের ওপর নির্ভর করে লেপ-তোশক তৈরির খরচ। এ বছর জিনিসপত্রের দাম অনেকটা বেশি থাকায় স্বাভাবিকভাবেই লেপ-তোশক তৈরিতে খরচ ৪০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ টাকা পর্যন্ত । আর একটি লেপ-তোশক বিক্রি করলে তাদের ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা লাভ হয়। এ ব্যাপারে নগরীর চকবাজার এলাকার ব্যবসায়ী কবির জানান, শীতের তীব্রতা বাড়লে লেপ-তোশকের চাহিদা আরও বাড়বে।

বর্তমানে বিকিকিনি ভালো। বাজারে লোক সমাগম রয়েছে। অনেকে আগেভাগে পুরোনো লেপ-তোশক, বালিশ ঠিকঠাক ও নতুনভাবে তৈরি করার অর্ডার দিচ্ছেন। অন্য এক ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে প্রকার ভেদে লেপ-তোষক তৈরির কাপড় প্রতি গজে ২০ থেকে ৩০ টাকা দাম বেড়েছে। এছাড়া শিমুল তুলা প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা, কার্পাস তুলা প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, প্রতি কেজি কালো হুল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, কালো রাবিশ তুলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, সাদা তুলা ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকা করে দাম চলছে।

তিনি আরো বলেন আকার অনুযায়ী লেপ-তোষক তৈরিতে ৪০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত মজুরি নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে একটি ভালো মানের লেপ তৈরি করতে খরচ হচ্ছে তিন থেকে ৪ হাজার টাকা। এছাড়া ভালো মানের তোষক তৈরি করতে খরচ পড়ছে চার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা। গত বছর ভালো মানের লেপ তৈরিতে খরচ হয়েছে দেড় থেকে দুই হাজার টাকা। আর তোষক তৈরিতে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা। তারা আরও জানান, গত এক সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ১৫ থেকে ২০টি লেপ-তোষকের অগ্রিম অর্ডার পেয়েছি। তাই সার্বক্ষণিক কাজেই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন....

আমাদের ফেসবুক পাতা

আজকের আবহাওয়া

পুরাতন সংবাদ খুঁজুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  

এক্সক্লুসিভ আরও