স্বামীর সম্পত্তি চাওয়ায় দ্বিতীয় স্ত্রীকে পেটালেন প্রথম স্ত্রী-স্বজনরা

ফেব্রুয়ারি ০৫ ২০২৪, ১১:৫৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল: গত বছরের ২২ অক্টোবর মোশারফ হোসেন সরকার মারা যান। স্বামীর রেখে যাওয়া বাড়ি, ভাড়ার টাকা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, গাড়ি ও সম্পত্তি ভোগ করছেন প্রথম স্ত্রী। এসব থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার এক বছর বয়সি ছেলে।

বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ করে বাড়ি ফেরার পর পরই প্রথম স্ত্রী ও তার স্বজনদের হামলায় আহত হয়েছেন এক বছরের ছেলেসহ দ্বিতীয় স্ত্রী ও তার স্বজনরা। এ ঘটনায় গত ২ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় স্ত্রী পায়েল সরকার বাদী হয়ে হামলাকারীদের অভিযুক্ত করে শ্রীপুর থানায় মামলা করেছেন। গত মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) রাত ১১টায় গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা বাজার সড়কের নোভা হাসপাতালসংলগ্ন স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন— প্রয়াত মোশারফ সরকারের দ্বিতীয় স্ত্রী পায়েল সরকার (৩২), তার এক বছর বয়সি ছেলে নাফি সরকার, পায়েল সরকারের ভাই মনির হোসেন মামুন (২১) ও হামলা থেকে বাঁচাতে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ইনজুর হোসেন (৩০)। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জখম গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।

মামলার আসামিরা হলেন- প্রয়াত মোশারফ সরকারের প্রথম স্ত্রী সেলিনা আকতার (৪৪), তার ভাই লাভলু সিকদার (৪২), তার স্ত্রী নুরুন্নাহার (৩৮), তাদের ছেলে নুর মোহাম্মদ নিপু সিকদার (২০), ড্রাইভার আলমগীর হোসেন (২৮), গৌরাঙ্গ চন্দ্র দাস (৪৮), অমিও (২০), সুমাইয়া (১৯), আছমা (৪০) ও সাগর (২২)।

মামলার বাদী পায়েল সরকার জানান, গত বছরের ২২ অক্টোবর তার স্বামী মোশারফ সরকার মারা যান। এর পর থেকে আসামিরা স্বামীর সম্পত্তি ও ব্যবসা থেকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে এলাকা ছাড়া করার জন্য বিভিন্নভাবে নির্যাতন ও হুমকি দিয়ে আসছে। মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) তাদের অব্যাহত নির্যাতন ও হুমকির ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিয়ে বাসায় ফিরছিলেন। সিএনজি থেকে নামার পর পরই পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা আসামিরা তাদের ওপর হামলা করে। এ সময় তার কোলে থাকা এক বছর বয়সি ছেলে নাফি সরকারকে টেনে নিয়ে সড়কের ওপর ফেলে দেয়।

তার ছোট ভাই মনির হোসেন মামুন বোনকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে আসামিরা তাকে রাম দা দিয়ে মাথায় কুপিয়ে জখম করে। পরে তাদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জখম গুরুতর হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পাঠান।

তিনি বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর পর আসামিরা আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমি ভাড়া বাসায় থাকি। আমার স্বামীর বাড়ি ভাড়ার টাকা, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, গাড়ি ও সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার জন্য একের পর এক হয়রানি করে যাচ্ছে। আমাকে আমার স্বামীর প্রাপ্য সব কিছু থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। আমি পৌরসভায় একাধিকবার বিচার চেয়ে ও বিচার না পেয়ে আদালতে মামলা করেছি। এমনকি মামলা প্রত্যাহার না করলে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে আসামিরা।

অভিযুক্ত লাভলু সরকার জানান, ওই দিন সিএনজি থেকে নেমে আমাকে দেখেই পায়েল সরকার ও তার ভাই আমাকে টেনেহিঁচড়ে লাঞ্ছিত করেছে। আমি তাকে হামলা ও মারধর করিনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করার চেষ্টা করছে। শ্রীপুর থানার ওসি শাহ জামান জানান, শিশুসহ হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন....

আমাদের ফেসবুক পাতা

আজকের আবহাওয়া

পুরাতন সংবাদ খুঁজুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  

এক্সক্লুসিভ আরও