লোডশেডিংয়ে বেড়েছে বরফের দাম, মাছের বাজারে আগুন 

অক্টোবর ২৮ ২০২২, ২২:৪৩

লোডশেডিংয়ের প্রভাব পড়েছে রাজধানীর কাঁচা বাজারগুলোতে। বিশেষ করে মাছের দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। ক্রেতাদের অভিযোগ, গত সপ্তাহে যে মাছ তারা ৩০০ টাকা কেজি দরে কিনেছেন এই সপ্তাহে দাম বেড়ে হয়েছে ৩৫০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, লোডশেডিংয়ের কারণে মাছ সংরক্ষণ করা বরফের দাম বাড়ায় বেশি দামে বিক্রি করা ছাড়া উপায় নাই।

মাছের বাজারের মতো একই চিত্র দেখা গেছে মুরগির বাজারেও। বিক্রেতারা বলছেন, অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে কিছু মুরগি মারা যায়, আবার অনেক মুরগির ওজন কমে যায়। এ জন্য পুরো চালানের লাভ তুলতে গিয়ে দাম বাড়াতে হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা থাকলেও কার্যত বাজারের নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতে নেই। এ কারণে ব্যবসায়ীরা যখন যেভাবে ইচ্ছা দাম বাড়িয়ে ভোক্তাদের হয়রানি করছে। সরকার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হওয়াতেই বাজারের এ অবস্থা।

আজ শুক্রবার আজিমপুরের ছাপড়া মসজিদ সংলগ্ন কাঁচা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায়। এছাড়া পাকিস্তানি কর্ক ৩২০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৫৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

সেগুনবাগিচা কাঁচা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, আকারভেদে পাঙাশ ও তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকায়। গত সপ্তাহে যা সর্বোচ্চ ১৮০ টাকা ছিল। রুই ও কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৩৮০ টাকা কেজি দরে। শিং মাছের দাম ৬০০ থেকে হাজার টাকা। আকারভেদে চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ১৫০০ টাকা কেজি দরে। ছোট মাছের মধ্যে কাঁচকি ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা ও পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা দরে।

এদিকে বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্য সব পণ্যের মতো শীতকালীন সবজির দামও চড়া। সবজির বিভিন্ন বাজারে ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে চিচিঙ্গা, বেগুন, পটল, ঢ্যাঁড়স ও কাঁকরোলসহ সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে অন্তত ৫-১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এদিন বাজারে প্রতি কেজি পেঁপে ৩৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ টাকা। এছাড়া পটল, ঢ্যাঁড়স, শসা, করলা ও মুলা ৬০ টাকা, লম্বা বেগুন ৭০-৮০ টাকা, গোল বেগুন ৬০ টাকা, শিম ১২০ টাকা, টমেটো ও গাজর ১৪০ টাকা, বরবটি ৯০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি প্রতি জোড়া ১৩০ টাকা, লাউ ৫০-৭০ টাকা, মানভেদে কাঁচা মরিচ ৮০-১০০ টাকা ও চিচিঙ্গা ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়ে অনেক কৃষকের সবজির খেত নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহ কিছুটা কম থাকায় দামও চড়া। সবজির দোকানি শাহাদাত বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের কারণে অনেক ফসল নষ্ট হয়েছে। আমরাও তিন ট্রাকের বদলে এক ট্রাক সবজি পেতে কষ্ট হচ্ছে। এ কারণে দাম বাড়তি।’

বাজারে সব নিত্যপণ্যের দাম বাড়তির দিকে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা। আজিমপুরে সাখাওয়াত নামে এক ক্রেতা বলেন, প্রতিদিন বাজারে পণ্যের নতুন নতুন দাম হয়। দাম শুধু বাড়েই, কখনো কমতে দেখলাম না। বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘সরকারকে আমরা অভিযান চালাতে দেখি, কিন্তু বাজারে এর প্রভাব পড়ছে না।’

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, বর্তমান বাজার ব্যবস্থা ক্রেতাদের জন্য নয়, বিক্রেতাদের জন্য। যারা অসাধু ব্যবসায়ী, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার মতো সৎসাহস সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নেই। তিনি বলেন, ‘মূল বিষয় হলো এখানে কারও নিয়ন্ত্রণ নেই। বাজারে সরকারের নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত না হলে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আসবে না।’

সংবাদটি শেয়ার করুন....

আমাদের ফেসবুক পাতা

আজকের আবহাওয়া

পুরাতন সংবাদ খুঁজুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১  

এক্সক্লুসিভ আরও