পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে কুয়াকাটায় শেষ হলো রাস উৎসব
নভেম্বর ০৮ ২০২২, ১০:০২
কুয়াকাটা প্রতিনিধি : গঙ্গাস্নান বা পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় শেষ হয়েছে রাস উৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) ভোর সাড়ে ৫টায় জাগতিক সব পাপ মোচনের আশায় সৈকতের নোনা জলে গা ভাসিয়ে এ গঙ্গাস্নান সম্পন্ন করেন হিন্দুধর্মাবলম্বীরা।
স্নানের আগে সৈকতে মোমবাতি, আগরবাতি, বেল পাতা, ফুল, ধান, দূর্বা, হরিতকী, ডাব, কলা, তেল ও সিঁদুর সমুদ্র জলে অর্পণ করেন সনাতন ধর্মের নারীরা। এসময় উলুধ্বনি ও মন্ত্রপাঠে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো সৈকত।
এছাড়া মাথা ন্যাড়াসহ প্রায়শ্চিত্ত ও পিণ্ডদান করেন অনেক মানতকারী। এর আগে রাতভর কুয়াকাটা রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পূজার্চনা, সঙ্গীতানুষ্ঠান ও মহানাম কীর্তনে মেতে ওঠেন সনাতনীরা।
ঢাকা থেকে আগত পূজা বলেন, আমাদের বিশ্বাস এইদিনে সব পাপ মোচন হয়। তাই আমরা গতকাল (সোমবার) কুয়াকাটায় এসেছি। রাতভর ভগবানের গুণকীর্তন শেষে সকালে সমুদ্র স্নানের মধ্যে দিয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে শান্তি চেয়েছি।
রোববার সন্ধ্যায় অধিবাসের মধ্য দিয়ে এ উৎসব শুরু হয়ে মঙ্গলবার সকালে সমুদ্র স্নানের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটে। রাশ পূজায় অংশ নিতে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার পূণ্যার্থী ভিড় করেন সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায়। আর এ উৎসবকে নির্বিঘ্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ছিল কঠোর নজরদারি।
কুয়াকাটা সৈকতে শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমের সাধারণ সম্পাদক নিহার রঞ্জন মণ্ডল বলেন, বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এই দেশে সবাই মিলে একটি সুন্দর লোকজ সাংস্কৃতিক পরিবেশ গড়ে তুলেছে, যা আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য। আমাদের এই মন্দিরের পাশেই একটি মসজিদও রয়েছে, আমাদের মধ্যে বেশ সু-সম্পর্ক।
মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বলেন, ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নিরাপত্তায় কঠোর ছিলাম আমরা। আমাদের প্রায় ৪৪৩ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত ছিল। আজকে সকালে রাসমেলার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেও আমরা সন্ধ্যা পর্যন্ত নিরাপত্তা বহাল রাখবো।