চরফ্যাশনে মহাসড়ক সংস্কারকাজে ধীরগতি, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

নভেম্বর ০৭ ২০২২, ২১:৫১

চরফ্যাশন প্রতিনিধি ‍॥ চরফ্যাশন-চরমানিকা বাবুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে ৯৪ কিলোমিটারের সংস্কারকাজ চলছে ধীরগতিতে। চরফ্যাশন উপজেলা থেকে সোমবার সকাল ৬টায় বাস ছেড়ে যায় ভোলা সদর উপজেলার ইলিশার উদ্দেশে। বাসভর্তি যাত্রী। বাস যেন ফুটবলের মতো লাফিয়ে লাফিয়ে চলছিল। আবার কোথাও বড় গর্তের ঝাঁকুনিতে যাত্রীরা চিৎকার দিয়ে উঠছেন। সড়কে উড়ছে ধুলাবালু।

চরফ্যাশন-বাবুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কে সংস্কারের কাজ চলায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এতে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়েছে সাধারণ মানুষকে।

চরকলমি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হারুন বেপারি বলেন, চরফ্যাশন-চরমানিকা বাবুরহাট-ভোলা পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়কের মোট দৈর্ঘ্য ১১৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৯৪ কিলোমিটারের সংস্কারকাজ চলছে। এ অবস্থায় আঞ্চলিক মহাসড়ক পার হয়ে শিশুরা বিদ্যালয়ে আসতে ধুলাবালুতে সাদা হয়ে যাচ্ছে। শিশুদের চোখে-মুখেও ধুলা যাচ্ছে। এই ১১৫ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশ প্রশস্ত করা ছাড়াও ৪৩টি কালভার্ট ও চারটি সেতু পুনর্নির্মাণ করা হচ্ছে। আটটি প্যাকেজে ৮৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কারকাজ চলছে। এসব কাজের কার্যাদেশ হয়েছে ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে। কাজ শেষ হওয়ার মেয়াদ চলতি বছরের ডিসেম্বর। সরকারি হিসাবে কাজ শেষ হয়েছে ৫৫ শতাংশ। ধীরগতিতে এসব কাজ চলায় সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।

মোটরসাইকেলে নিয়মিত চলাচলকারী উন্নয়নকর্মী মাইনুদ্দিন জমাদার বলেন, ‘মোটরসাইকেলে চলতে চলতে হঠাৎ ধুলার মধ্যে হারিয়ে গেলাম। চারপাশ তো দূরে থাক, নিজেকে নিজে দেখা যায় না।

সরেজমিন দেখা যায়, সড়কের দুই পাশে গর্ত করে ইট-বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। এখনো কার্পেটিং হয়নি। পাথর-বালুর মিশ্রণ (ম্যাকাডম) সড়কে ফেলা হয়েছে। কোথাও কোথাও গর্ত আছে।

রবিবার চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থেকে লালমোহন পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার সড়কের পিচের কার্পেটিং তোলা হয়েছে। সেখানে পাথর বালুর মিশ্রণ (ম্যাকাডম) ফেলা হয়েছে। পাথর-বালুর সমানুপাত না হওয়ায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাত ও বৃষ্টির পানিতে সড়কের মধ্যে বড় বড় গর্ত হয়ে গেছে। কোথাও উঁচু, কোথাও নিচু কাঁদা-মাটির সড়কের মতো অবস্থা। কোথাও কোথাও সড়কের পাড় ভেঙে গেছে। প্রায় দেড় বছর ধরে সড়কের ওপরের ভালো কার্পেটিং তুলে পাথর ও বালু ফেলে রাখা হয়েছে। এতে সড়কের অবস্থা হয়েছে বেহাল। ঝড় ও বৃষ্টির পানিতে গাড়ির চাকা দেবে যায়।

সড়ক সংস্কারের বেশিরভাগ কাজ পেয়েছে হাসান টেকনো এমএ ইঞ্জিনিয়ারিং নামে একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান মো. আকতার হোসেন বলেন, যখন তারা ভোলা-চরফ্যাশন-বাবুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্ত করার কাজ পেয়েছেন, তখন রড, সিমেন্ট, পাথর, বালু, বিটুমিনের দর যা ছিল, কাজ শুরু করার পর তা কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। তাই ব্যয় আরও ৪০ শতাংশ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।

ভোলা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, করোনার প্রাদুর্ভাব, মামলা, সড়কের দুই পাশের গাছ বিক্রি, বৈরী আবহাওয়া ও বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর কারণে কাজের মেয়াদ ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। সড়ক নির্মাণের কাঁচামালের দাম কয়েক গুণ বাড়ার দোহাই দিয়ে ব্যয় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে ঠিকাদাররা। বিষয়টি অধিদপ্তরে জানানো হয়েছে। তবে শুষ্ক মৌসুমে কাজ শেষ হওয়ার আশা করছেন তিনি।

সংবাদটি শেয়ার করুন....

আমাদের ফেসবুক পাতা

আজকের আবহাওয়া

পুরাতন সংবাদ খুঁজুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  

এক্সক্লুসিভ আরও