চক্ষু চিকিৎসায় মানবতার দৃস্টান্ত স্থাপন করলো শেবাচিমের চক্ষু বিভাগ
অক্টোবর ২৭ ২০২২, ১৭:৫৯
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ চক্ষু চিকিৎসায় মানবতার দৃস্টান্ত স্থাপন করলো শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগ। মাত্র ৪ বছরে ৬ হাজার রোগীর চোখের অপারেশন সম্পূন্ন হয়েছে এ বিভাগে। এর মধ্যে এক হাজার রোগীর ফেমটোসেকেন্ড লেজার ইনফ্রারেড লাইট ব্যবহার করে ছানি ফ্যাকো মেশিনের সাহায্যে অপারেশন করা হয়।
পাশাপাশি গেলো ৪ মাসে ন্যাশনাল আই কেয়ার’এর টেলি কমিউনিকেশন’র মাধ্যমে উপজেলার পর্যায়ে বরিশালের ২০টি সেন্টারের বেইজ সেন্টার নামে পারিচিত শেবাচিম হাসপাতালের চক্ষু বিভাগ ১৩ হাজার রোগীর চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছে। চক্ষু বিভাগের এমন সাফল্য ধরে রাখতে আজ বৃহস্পতিবার কেক কেটে দিনটি স্মরণীয় করে রাখেন সেখানকার চিকিৎসকরা। এসময় সেখানে এক সাইন্টিফিক সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
সেমিনারের সভাপতিত্ব করেন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ ডি বি পাল। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ মনিরুজ্জামান শাহিন ও বিশেষ অতিথি ছিলেন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এইচ এম সাইফুল ইসলাম এবং সহকারী পরিচালক ডাঃ এস এম মনিরুজ্জামান শাহিন।
সেমিনারে চক্ষু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, গত ৪ বছর আগ থেকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগে ফেমটোসেকেন্ড লেজার ইনফ্রারেড লাইট ব্যবহার করে ফ্যাকো মেশিনের সাহায্যে চোখের ছানি অপারেশন শুরু হয়। এই চার বছরে এখানে এক হাজার রোগী ফ্যাকো মেশিন দ্বারা ছানি অপারেশন করা হয়েছে। এছাড়া ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে আরো ৫ হাজার রোগীর চোখের অপারেশন করা হয়েছে।
ফ্যাকো মেশিনের আলট্রাসাউন্ড এনার্জি খরচ অনেক কম হয় ও অস্ত্রোপচারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও অনেক কমে যায় এবং অপারেশনের পারের দিনই রোগীরা বাড়ীতে যেতে পারেন।
তিনি আরো বলেন, ৬ হাজার রোগীর চোখের অপারেশন ছাড়াও চক্ষু বিভাগ গেলো চার মাসে ৪ মাসে ন্যাশনাল আই কেয়ার’এর টেলি কমিউনিকেশন’র মাধ্যমে উপজেলার পর্যায়ে বরিশালের ২০টি সেন্টারের বেইজ সেন্টার নামে পারিচিত শেবাচিম হাসপাতালের চক্ষু বিভাগ ১৩ হাজার রোগীর চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হয়েছে। তাই আজকের এই দিনটি চক্ষু বিভাগের জন্য অত্যান্ত আনন্দের দিন।
সেমিনারে চক্ষু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাঃ মোঃ জুয়েল ইলিয়াস রব বলেন, ফ্যাকো কিংবা ম্যানুয়ালের মাধ্যমে এখানে চোখের অপারেশনের খরচ খুবই কম। তবে ন্যাশনাল আই কেয়ার’র মধ্যমে যে সকল রোগীর অপারেশন হয়েছে তাদের কোন প্রকার খরচ দিতে হয় নি। অনান্য রোগীকে শুধু মাত্র লেন্স সরবরাহ করতে হয়েছে।
চক্ষু বিভাগের অপর সহকারী অধ্যাপক ডাঃ বর্ন্যা বলেন, করোনাকালিন সময় আমাদের এখানে চক্ষু রোগীর সেবায় বিঘ¥ ঘটে নি। সরাসরি কিংবা টেলি কমিউনিকেশন’র মাধ্যমে রোগীরা সেবা পেয়েছেন।
সব মিলিয়ে গেলো ৪ মাসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিশ্রুতি ও ভিশন বাস্তবায়নে ন্যাশনাল আই কেয়ারের মাধ্যমে ১৩ হাজার রোগীকে সেবা দিতে পেরে আমরা গর্বিত। চক্ষু বিভাগের আবাসিক সার্জন ডাঃ মোকলেছুর রহমান ও রেজিষ্ট্রার ডাঃ রেজাউল আবেদিন বলেন, আজকের এই দিনটি আমাদের কাছে অত্যান্ত আনন্দের দিন।
কেননা এই দিনটিতে আমরা ফ্যাকো মেশিনের সাহায্যে ১০০০ হাজার রোগীর ছানি অপারেশন করতে সক্ষম হয়েছি। সব মিলিয়ে ৬ হাজার রোগীর অপারেশন আর ‘সারা বাংলাদেশে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে কমিউনিটি ভিশন সেন্টারের মাধ্যমে সমন্বিত উন্নত চক্ষু চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেওয়ার কার্যক্রম “ন্যাশনাল আই কেয়ার”র মাধ্যমে ১৩ হাজার রোগীর সেবা দিতে পারাটা শেবাচিম হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের অভুতপুর্ব সাফল্য। তাই কেক কাটার মাধ্যমে দিন পালন করা হয়েছে। সেমিনারে সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করেন ডাঃ সুসমিতা ইসলাম।