শুরু হয়েছে স্বপ্নযাত্রা
চলো মোরা স্কুলে যাই-পড়া শেষে একসাথে দুপুরের খাবার খাই
নভেম্বর ০১ ২০২২, ২০:১৩
খোকন আহম্মেদ হীরা ॥ “চলো মোরা স্কুলে যাই, পড়া শেষে একসাথে দুপুরের খাবার খাই’ শ্লোগানকে সামনে রেখে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে ১০ টাকার টিফিন কার্যক্রম মিড ডে মিল। এ যেন শুরু হয়েছে একটি স্বপ্নযাত্রার।
প্রাথমিকভাবে বরিশালের গৌরনদী উপজেলার পিছিয়ে পরা ১৬টি বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুলে শতভাগ উপস্থিতি বৃদ্ধি ও বিদ্যালয় মুখী করা, পুষ্টি চাহিদা পূরণ এবং ধনী-গরীব ভুলে মাসে অন্তত দুইদিন ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের অংশগ্রহণে একসাথে সবাই দুপুরের খাবার খাওয়ার আয়োজন করা হয়েছে।
এরমাধ্যমে মনের দূরত্ব যেমন ঘুচবে, তেমনি শিশুরা মাসে অন্তত দুইদিন সকল সহপাঠীদের সাথে একই ধরণের খাবার খেতে পারছে। এতে কে গরীব আর কে ধনী এর পার্থক্য থাকছে না। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সবাই একই খাবার খেয়ে থাকেন। গৌরনদী উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা শিক্ষা অফিসের যৌথ আয়োজনে ব্যতিক্রমধর্মী এ উদ্যোগ এখন স্বপ্ন নয়; বাস্তবে রূপ নিয়েছে।
আর এ উদ্যোগের প্রথম স্বপ্ন দেখেছেন গৌরনদী উপজেলার চৌকস নির্বাহী অফিসার বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস। তাই তিনি এ উদ্যোগের নামকরণ করেছেন “স্বপ্নযাত্রা”। উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, প্রতিটি বিদ্যালয় একটি জ্ঞানকোষ ও উন্নয়নের সিঁড়ি। আজকের শিশুরাই আগামীদিনের ভবিষ্যত।
তাই তাদের সাফল্য, ভবিষ্যত বাংলাদেশের সাফল্য। ফলে এসব শিশুদের নিয়ে প্রতিনিয়ত স্বপ্ন দেখি। ইউএনও আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়তে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন উন্নত বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আজকের শিশুদের ভূমিকাই হবে অগ্রগণ্য। তাই প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিয়ে আমার ভাবনাটা যেন অনেক বেশি। আমরা সবাই মিলে শিশুদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের যত্ন করে বড় করে তুলতে পারলে ভবিষ্যতে তারাও এ দেশকে যত্ন করে বড় করে তুলবে। দেশের মানুষকে বড় করে তুলবে।
বিশ্বের বুকে একদিন তারা বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করবে। তাই একটি শিশুও যেন প্রাথমিক থেকে ঝড়ে না পরে এজন্য নানা কৌশল অবলম্ব করেছি। এরমধ্যে একটি হচ্ছে মিড ডে মিল। গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে গৌরনদী উপজেলার পিছিয়ে পরা ১৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে বেঁছে নেয়া হয়েছে।
ওই ১৬টি প্রতিষ্ঠানে রান্নার জন্য দেয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি। সোমবার দুপুরে উপজেলার দক্ষিণ চাঁদশী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ইউএনও, উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শিশুদের সাথে একসাথে মিড ডে মিলে অংশগ্রহণ করেন। ওইসময় তারা খাবার গ্রহণ বাবদ পাঁচশ’ টাকা করে দিয়েছেন।
সাথে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা জনপ্রতি ১০ টাকা করে দিয়েছে। বিনিময়ে যৌথ প্রয়াসে মিড ডে মিলে সবজি ও ডাল মিশ্রিত খিচুরির সাথে পেয়েছেন একটি করে আস্ত ডিম। মিড ডে মিলে যেসব শিক্ষার্থীদের ১০ টাকা করে দেয়ার সামর্থ্য ছিলোনা তাদের কাছ থেকে কোন টাকা নেয়া হয়নি। সেক্ষেত্রে শিক্ষকরা সামর্থ্য বিবেচনায় ৫০ টাকা থেকে শুরু করে তার চেয়ে বেশি টাকা দিয়েছেন। আর মিড ডে মিলের খিচুরি রান্না করেছেন শিক্ষার্থীদের মায়েরা।