নভেম্বরের শুরুতেই শীতের বার্তা
নভেম্বর ০১ ২০২২, ১০:৪১
অনলাইন ডেস্ক: রাজধানীতে কদিন ধরেই বাসা-বাড়িতে খুব একটা ফ্যান চালাতে হচ্ছে না, চালালেও হয়ত কম গতিতে। আবার রাত বেড়ে গেলে গায়ে একটু কাঁথাও জড়াচ্ছেন অনেকে। শহুরে জীবনে যা শীতের আগমনী বার্তাই ধরা হয়। নভেম্বর আসতে না আসতেই এমন আবহাওয়া ইঙ্গিত দিচ্ছে, এবারে বুঝি একটু তড়িঘড়িই চলে এল শীত।
এতো গেল রাজধানীর কথা, এদিকে উত্তরাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে রীতিমত ঠাণ্ডা পড়েছে এরইমধ্যেই। ভোরের দিকে ভারি কিছু গায়ে জড়াতে শুরু করেছেন অনেকেই। বাংলাদেশে ইদানীং বৃষ্টির মৌসুম ধীরে ধীরে দীর্ঘায়িত হচ্ছে। শীত আসতেও একটু সময় নেয়।
আর রাজধানীতে তো ভরা শীত মৌসুমেও শীতের দেখা মেলে না, গায়ে হালকা কিছু জড়ালেই চলে।
তাহলে এখনি কেন শীতের অনুভূতি হচ্ছে? এবছর কেমন হতে পারে শীতকাল? তেতুলিয়াতে সোমবার ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাস হচ্ছে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রয়েছে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মত।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, এখনই শীতের অনুভূতি হওয়ার মূল কারণ কদিন আগে বাংলাদেশের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং।
সাধারণত বাংলাদেশে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে তাপমাত্রা কমতে থাকে। এখন যে তাপমাত্রা আমরা অনুভব করছি সেটা সাধারণত ওই সময় হওয়ার কথা। কয়দিন আগে যে ঘূর্ণিঝড় হল সেটার কারণে সারা দেশে যে অসময়ে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে এতে তাপমাত্রা কমে গেছে তাই শীতের অনুভূতি হচ্ছে। এই তাপমাত্রা এখন ওইভাবে আর বাড়বে না। এ কারণেই এই আবহাওয়াকে অগ্রিম শীতের বার্তা বলে মনে হচ্ছে। এমনটাই বলছে আবহাওয়া অফিস।
তিনি বলছেন, গত কয়েক বছরের সঙ্গে এবছরের পার্থক্য হচ্ছে অক্টোবরে হঠাৎ এতটা বৃষ্টিপাত। এবছর সারা বর্ষার মৌসুমে ঢাকায় বৃষ্টিপাত ছিল ৩৫০ মিলিমিটারের মতো। কিন্তু সেই তুলনায় শুধু অক্টোবর মাসে ২৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যার মূল কারণ ঘূর্ণিঝড়।
গত বছর ডিসেম্বরের ২০ এবং ২১ তারিখে বাংলাদেশে ৩০ বছরের স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে গড়ে অনেক কম তাপমাত্রা দেখা গেছে।
গত বছর কিছুটা আগেই দেশে শীতের মৌসুম শুরু হয়েছিল। পুরো এশিয়াজুড়ে এবছর শীতের প্রকোপ বেশি হতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক তৌহিদা রশীদ।
তিনি বলছেন, তার সম্ভাব্য কারণ হচ্ছে এই বছর বর্ষা মৌসুমে অন্যান্য বছরের তুলনায় কম বৃষ্টিপাত। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “সিত্রাং-এর কারণে যে বৃষ্টি হয়েছে সেটা মাত্র একদিনের বৃষ্টি। আমরা যেটা পর্যবেক্ষণ করেছি যে এবছর পুরো কয়েক মাসের বৃষ্টির মৌসুম অনেক শুকনো ছিল। এই বর্ষা মৌসুমে খুব কম বৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে যেটা হয়েছে মাটিতে আর্দ্রতা কম, মাটি শুকনো। মাটি ভেজা থাকলে সূর্যের আলোতে এক ধরনের তাপমাত্রা তৈরি হয় যা উপরিভাগকে গরম রাখে, তাপ ধরে রাখে। কিন্তু মাটিতে আর্দ্রতা কম থাকলে সেটা হবে না। মাটির শুকনোভাব শীতের তীব্রতা বাড়াতে সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে।”
সূত্র: বিবিসি বাংলা