ভোলায় চিকিৎসা না পেয়ে হাসপাতাল থেকে ফিরে যাচ্ছে রোগীরা

নভেম্বর ০১ ২০২২, ০০:১০

ভোলা প্রতিনিধি ॥ ভোলা সদর হাসপাতালের রোগীরা সেবা না পেয়ে ফিরে যায়। সবকিছু নিয়ন্ত্রন করছে দালালরা বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। কর্তৃপক্ষ বলছে প্রশাসনের সহযোগিতা না পেলে কি করতে পারি। তাদের সহযোগিতা দরকার।

 

ডায়াগনস্টিক আর ক্লিনিক মালিকরা অনেক প্রভাবশালী, তারা টাকা কামাই করছে, সেবা দেয়ার ইচ্ছা কারোই নেই। সোমবার সকালে মহিয়া (৫) বছরের এক শিশু তার মা, নানা, নানীসহ আদালতে আসে মামলার কাজে। তবে অদক্ষ বোরাক চালকের কারনে দুর্ঘটনায় শিশুটি পা ভেঙ্গে যায়।

 

নানী জয়নব বিবিসহ (৬০) ভর্তি হয় ভোলা সদর হাসপাতালে। সকালে ভর্তি হলেও বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত কোন চিকিৎসকের দেখা না পাওয়ায় অবহেলায় শিশুটি পড়ে থাকে আর যন্ত্রনায় কাতরায়। ফলে রাগে ক্ষোভে তারা চিকিৎনা না করে চরফ্যাশন নিয়ে যায়। জরুরী বিভাগে এ্যাম্বুলেন্স চালক বা দালাল ( নিজেকে এ্যাম্বুলেন্স চালক পরিচয় দেয়) তাদেরকে সেখান থেকে নেয়ার জন্য দেন দরবার করছে।

 

এমন সময় হাজির হলে আহত শিশুর মা, মামা ও নানা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে সব খুলে বলেন। তখন ঐ দালাল বা এ্যাম্বুলেন্স চালাক রোগীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করছে দেখে প্রতিবাদ করলে হাসপাতালের অন্য স্টাফ মো: মিজানুর রহমান দালালের পক্ষ নেয়। শিশুটি যখন ব্যাথায় কাতরাচ্ছে তখন তার নানা মো: শাহে আলম বলেন, এখানে ভর্তি সকালে করিয়েছি। ক্যানোলা পড়িয়ে রেখেছে, কোন চিকিৎসা পাচ্ছি না। কোন ডাক্তারতো দুরের কথা কেউ আসেনি দেখতে।

 

এখানে আমাদের চিকিৎসা হবে না বলে তারা চলে যাওয়ার কথা বলেন। এ সব কস্টের কথা বলে শিশুটির মামা মো: নুরে আলম বলেন, গরীবের কোন চিকিৎসা নেই। আমরা গরীব বলে ডাক্তার দেখতে আসেনি। হাসপাতাল থেকে কোন ঔষধ দেয় না, সব বাহির থেকে কিনে আনতে বলে। দালাল আছে তারাই সব করে। কিছু বল্লে খারাপ ব্যবহার করে। এদিকে হাসপাতালে ঘুরে দেখা যায়, বারান্দা থেকে শুরু করে কোথাও খালী নেই।

 

রুগী আর তাদের আত্বীয়-স্বজনরা মিলে অন্য রকম দৃশ্য। তবে সব রোগী ও তাদের স্বজনদের চরম ক্ষোভ ডাক্তার আসে না, কেউ খোজ নিচ্ছে না। দালালরাই নিয়ন্ত্রন করছে সব। এ্যাম্বুলেন্স ও দালালরা টানাটানি করে প্রাইভেট চিকিৎসার জন্য ডায়াগনস্টিক ও ক্লিনিকে নেয়ার জন্য। কেউ বলে এ্যাম্বুলেন্স আছে এখানে চিকিৎসা পাবেন না বরিশাল চলেন, ভেদুরিয়া দিয়ে আসি। বেশ কয়েকজন রোগীদের স্বজনরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে তাদের রোগী বরিশালে নিয়ে যাচ্ছে।

 

এ বিষয় ভোলা সদর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা: মোহাম্মদ লোকমান হাকিম বলেন, কেন রোগী চিকিৎসা না নিয়ে চলে গেল। আসতে বলেন, আমি নিজে ডাক্তার দেখিয়ে দিব। সারা দিনে ডাক্তার দেখেনি, অবহেলায় পড়ে ছিলো আর যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছিলো শিশুটি এমন প্রশ্নে বলেন, ডাক্তার সাহেবরা কেন দেখবেন না। তাদেরতো দেখার কথা। আসলে আমাকে জানালেও নিজেই ডাক্তার দেখিয়ে দিতাম।

 

অফিস টাইমে কোন কোন ডাক্তার হাসপাতালে থাকেন না বলে অভিযোগ আছে বল্লে বলেন, আমি যখন ডাক্তারদের কাছে জানতে চাই তখন তারা অস্বীকার করেন। হাতেনাতে ধরতে পড়লে ব্যবস্থা নিব। ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দালালমুক্ত করার জন্যই ক্যামেরা লাগিয়েছি। এখন প্রশাসনের সহযোগীতা দরকার। তারা মোবাইল কোর্ট এর মাধ্যম্যে ব্যবস্থা নিবে তা করছে না। আবার ধরে নিলেও ২ ঘন্টা পর বের হয়ে চলে আসে। আসলে ডায়াগনস্টিক এবং ক্লিনিক মালিকরা প্রভাবশালী তারা টাকা কামাই করে সেবা দেয় না।

সংবাদটি শেয়ার করুন....

আমাদের ফেসবুক পাতা

আজকের আবহাওয়া

পুরাতন সংবাদ খুঁজুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০৩১  

এক্সক্লুসিভ আরও